পুরোনো ভাঙন দিয়ে পানি ঢুকে প্লাবিত কমলগঞ্জের দুই গ্রাম

টানা বর্ষণে উজান থেকে নেমে আসা ঢলে মৌলভীবাজারের কমলগঞ্জের ঘোড়ামারা ও নাজাত কোণা গ্রাম প্লাবিত হয়েছে। ছবিটি শুক্রবার বিকেলে তোলা। ছবি: প্রথম আলো
টানা বর্ষণে উজান থেকে নেমে আসা ঢলে মৌলভীবাজারের কমলগঞ্জের ঘোড়ামারা ও নাজাত কোণা গ্রাম প্লাবিত হয়েছে। ছবিটি শুক্রবার বিকেলে তোলা। ছবি: প্রথম আলো

গত বৃহস্পতিবার সারা রাতের টানা বর্ষণে উজান থেকে নেমে আসা পাহাড়ি ঢলের পানিতে মৌলভীবাজারের কমলগঞ্জে ধলাই নদে বিপৎসীমার ওপর দিয়ে পানি প্রবাহিত হয়েছিল। আদমপুরের পশ্চিম ঘোড়ামারা গ্রামে ধলাই নদের প্রতিরক্ষা বাঁধের পুরোনো ভাঙন এলাকা দিয়ে ঢলের পানি দ্রুতগতিতে ঢুকে। এর ফলে আদমপুর ইউনিয়নের ঘোড়ামারা ও নাজাত কোণা গ্রামের বসতবাড়ি, রাস্তা ও ফসলি জমি পানিতে তলিয়ে যায়। তবে মধ্য রাত থেকে বসতবাড়ি ও ফসলি জমি থেকে পানি নেমে যায়।

স্থানীয় সূত্রে জানা গেছে, গতকাল শুক্রবার দুপুর সাড়ে ১২টার দিকে কমলগঞ্জে ধলাই নদে আকস্মিকভাবে পানি বৃদ্ধি পেয়ে বিপৎসীমার ১৩৮ সেন্টিমিটার ওপর দিয়ে প্রবাহিত হয়। একসময় আদমপুরের পশ্চিম ঘোড়ামারা গ্রামের ধলাই প্রতিরক্ষা বাঁধের পুরোনো ভাঙন এলাকা দিয়ে দ্রুত বেগে ঢলের পানি ঢোকে।

ঘোড়ামারা গ্রামের পানিবন্দী বাসিন্দা মণিপুরি থিয়েটারের নির্বাহী প্রধান শুভাশীষ সিনহা ও নাট্যশিল্পী জ্যোতি সিনহা বলেন, পাহাড়ি ঢলের পানিতে ঘোড়ামারা ও নাজাতকোণা গ্রাম প্লাবিত হয়। গতকাল মধ্যরাত থেকে আবারও পানি নেমে যায়।

কমলগঞ্জ উপজেলা নির্বাহী কর্মকর্তা (ইউএনও) আশেকুল হক বলেন, রাতের টানা বৃষ্টির কারণে ভারতীয় পাহাড়ি ঢলের পানিতে এ অবস্থার সৃষ্টি হয়েছিল। ঘোড়ামারা গ্রামের প্রতিরক্ষা বাঁধের ভাঙন রোধে প্রয়োজনীয় ব্যবস্থা নিতে পানি উন্নয়ন বোর্ডকে বলা হয়েছে।

কমলগঞ্জে পানি উন্নয়ন বোর্ডের নির্বাহী প্রকৌশলী রণেন্দ্র চক্রবর্তী বলেন, গত বৃহস্পতিবার রাতে যে পরিমাণ বৃষ্টি হয়েছে, তাতে আকস্মিকভাবে ধলাই নদে এত পানি আসার কথা নয়। তিনি মনে করেন, উজানে ভারতীয় অংশে বেশি বৃষ্টি হওয়ায় এ অবস্থার সৃষ্টি হয়েছিল। তিনি গতকাল বিকেল থেকে সন্ধ্যা পর্যন্ত ঘোড়ামারা গ্রামের ধলাই প্রতিরক্ষা বাঁধের ভাঙন এলাকায় ছিলেন। ২০১৭ সালে বাঁধ মেরামতের জন্য যে প্রকল্প নেওয়া হয়, স্থানীয় কয়েকজনের আপত্তির কারণে ঠিকাদার কাজ করতে পারেননি। এখন জনপ্রতিনিধি ও উপজেলা প্রশাসনের সহায়তায় যদি ঘোড়ামারা গ্রামের প্রতিরক্ষা বাঁধের ভাঙন মেরামত না করা যায়, তাহলে যতবার ধলাই নদে পানি বাড়বে, ততবার পানি ঢুকে বসতবাড়ি ও ফসলি জমি প্লাবিত হবে।

ঘোড়ামারা গ্রামের ধলাই প্রতিরক্ষা বাঁধের ভাঙন ও ঝুঁকি নিয়ে ‘প্রতিরক্ষা বাঁধের ভাঙনে নিঃস্ব ১৫টি পরিবার’ শিরোনামে ১২ জুন প্রথম আলোয় একটি সচিত্র প্রতিবেদন প্রকাশিত হয়েছিল।