ছাত্রলীগ নেতার বাড়ি থেকে অস্ত্র উদ্ধার, 'নাটক' বলল ছাত্রলীগ

যশোরের শার্শা উপজেলা ছাত্রলীগের সাধারণ সম্পাদক আকুল হুসাইনের বাড়িতে গত শুক্রবার ভোরে অভিযান চালিয়ে ১২টি ম্যাগাজিনসহ দেশীয় অস্ত্র উদ্ধার করেছে পুলিশ। এ ঘটনায় আজ শনিবার বেনাপোল বন্দর থানায় অস্ত্র আইনে একটি মামলা করা হয়েছে। এদিকে অস্ত্র উদ্ধারের ঘটনাটিকে ‘পুলিশের সাজানো নাটক’ আখ্যা দিয়ে আজ শনিবার দুপুরে যশোর প্রেসক্লাবে সংবাদ সম্মেলন করেছেন ছাত্রলীগের নেতারা।

সংবাদ সম্মেলনে লিখিত বক্তব্যে জেলা ছাত্রলীগের সাবেক সহসভাপতি নিয়ামত উল্লাহ দাবি করেন, ‘যে বাড়ি থেকে পুলিশ অস্ত্র উদ্ধার দেখিয়েছে, ওই বাড়িটি ছাত্রলীগের নেতা আকুল হুসাইনের মামার বাড়ি। আকুল অন্তত ছয় মাস ওই বাড়িতে থাকেন না। তা ছাড়া পুলিশ অন্য জায়গা থেকে অস্ত্র এনে ওই বাড়ি থেকে উদ্ধার করা হয়েছে বলে নাটক সাজিয়েছে।’

পুলিশ কেন ‘নাটক’ সাজাবে, সাংবাদিকের এমন প্রশ্নের জবাবে নিয়ামত উল্লাহ বলেন, ‘শার্শা ও বেনাপোলে আওয়ামী লীগের মধ্যে দুটি পক্ষ রয়েছে। এক পক্ষের নেতৃত্বে স্থানীয় সাংসদ শেখ আফিল উদ্দীন ও অপর পক্ষের নেতৃত্বে রয়েছেন বেনাপোল পৌরসভার মেয়র আশরাফুল আলম। আকুল হুসাইন মেয়র আশরাফুল আলমের অনুসারী। ওসি মাসুদ করিম সাংসদ আফিল উদ্দীনের স্বার্থ সংরক্ষণে কাজ করছেন। বেনাপোলে মেয়রের রাজনীতি বন্ধ করতেই ওসি মাসুদ করিম ছাত্র নেতা আকুলকে ফাঁসাতে মরিয়া হয়ে উঠেছেন।’

ছাত্রলীগ নেতা নিয়ামত উল্লাহর অভিযোগের বিষয়ে বেনাপোল থানার ভারপ্রাপ্ত কর্মকর্তা (ওসি) মাসুদ করিম বলেন, ‘আমি কারও স্বার্থ সংরক্ষণের জন্য বেনাপোল থানায় আসিনি। প্রকৃত অর্থে আকুল হুসাইন একজন অস্ত্র ব্যবসায়ী। তাঁর দখলে থাকা ওই বাড়ি থেকে পিস্তলের ১২টি ম্যাগাজিন, তিনটি গুলি, ছয়টি রামদা ও ফেনসিডিলের ৩১টি খালি বোতল উদ্ধার করা হয়েছে। এটি কোনো নাটক না। গ্রামবাসীর সামনেই এই অভিযান চালানো হয়।’

ওসি মাসুদ করিম আরও বলেন, এ ঘটনায় বেনাপোল থানায় অস্ত্র আইনে একটি মামলা করা হয়েছে। ওই মামলায় আকুলকে এজাহারভুক্ত আসামি না করলেও ঘটনার বিবরণে তাঁর নাম রয়েছে। অভিযানের সময় আকুল উপস্থিত ছিলেন না। এ জন্য মামলার এজাহার থেকে তাঁর নাম বাদ দেওয়া হয়েছে। তবে তাঁর অনুসারী দুই যুবককে আসামি করা হয়েছে। অভিযানের দিনে তাঁরা পালিয়ে যান। আকুল তখন ওই বাড়িতে অবস্থান না করলেও বাড়িটি তাঁর দখলেই রয়েছে। তাঁর ছেলেরা ওই বাড়িতে ওঠাবসা করেন। আকুল মাঝে মধ্যে সেখানে যাতায়াত করেন।

যশোর জেলা ছাত্রলীগের সাবেক সহসভাপতি বি এম জাকির হোসেন, জাবের হোসেন জাহিদ, মারুফ হুসাইন ইকবাল, এস এম হালিম বিশ্বাস, সাবেক যুগ্ম সাধারণ সম্পাদক শাহজাহান কবির, মাহবুবুল আলম, এ কে রহমান, যশোর শহর ছাত্রলীগের যুগ্ম আহ্বায়ক রেজওয়ান হোসেন, সরকারি এম এম কলেজ ছাত্রলীগের সহসভাপতি আসলাম হোসেন, সাংগঠনিক সম্পাদক ইয়াসিন আরাফাত প্রমুখ সংবাদ সম্মেলনে উপস্থিত ছিলেন।