শিক্ষার সুফল পেতে সঠিক বিনিয়োগ দরকার: শিক্ষামন্ত্রী

স্কিলস অ্যান্ড ট্রেনিং এনহ্যান্সমেন্ট প্রজেক্টের (এসটিইপি) চূড়ান্ত প্রতিযোগিতার উদ্বোধনী অনুষ্ঠানে কথা বলেন শিক্ষামন্ত্রী দীপু মনি। বঙ্গবন্ধু আন্তর্জাতিক সম্মেলন কেন্দ্র, ঢাকা, ১৬ জুন। ছবি: মাকসুদা আজীজ
স্কিলস অ্যান্ড ট্রেনিং এনহ্যান্সমেন্ট প্রজেক্টের (এসটিইপি) চূড়ান্ত প্রতিযোগিতার উদ্বোধনী অনুষ্ঠানে কথা বলেন শিক্ষামন্ত্রী দীপু মনি। বঙ্গবন্ধু আন্তর্জাতিক সম্মেলন কেন্দ্র, ঢাকা, ১৬ জুন। ছবি: মাকসুদা আজীজ

শিক্ষার সুফল পেতে হলে সঠিক বিনিয়োগ দরকার বলে মন্তব্য করেছেন শিক্ষামন্ত্রী দীপু মনি। রোববার বঙ্গবন্ধু আন্তর্জাতিক সম্মেলন কেন্দ্রে স্কিলস অ্যান্ড ট্রেনিং এনহ্যান্সমেন্ট প্রজেক্টের (এসটিইপি) চূড়ান্ত প্রতিযোগিতার উদ্বোধনী অনুষ্ঠানে শিক্ষামন্ত্রী এ কথা বলেন।

শিক্ষামন্ত্রী দীপু মনি বলেছেন, আগামী দিনে মানবসম্পদ উন্নয়নে ‘“ডেমোগ্রাফিক ডিভিডেন্ড”-এর সর্বোচ্চ সুফল হিসেবে পাওয়ার উদ্দেশ্যে সরকার শিক্ষা ও দক্ষতা উন্নয়ন খাতে বাজেটে যথাসম্ভব অর্থ বরাদ্দের চেষ্টা করেছে। আমাদের মনে রাখতে হবে, ডিভিডেন্ড কোনো গিফট নয়, এটা লভ্যাংশ, যা পেতে হলে আমাদের সঠিক বিনিয়োগ করতে হবে। তবেই আমরা শিক্ষায় সুফল পাব।’

এসটিইপি প্রকল্পটির মূল উদ্দেশ্য কারিগরি শিক্ষা ও প্রশিক্ষণের গুণগত মান উন্নয়ন, সম্প্রসারণের মধ্য দিয়ে আর্থসামাজিক অনগ্রসর যুবগোষ্ঠীর কাছে কারিগরি শিক্ষাকে সহজলভ্য করা, কর্মসংস্থানের সুযোগ বৃদ্ধি করে দারিদ্র্য ও বেকারত্ব দূর করা। সরকারি-বেসরকারি পলিটেকনিক ইনস্টিটিউটের ডিপ্লোমা-ইন-ইঞ্জিনিয়ারিং শিক্ষার্থীদের মেধা ও উদ্ভাবনী শক্তি বিকাশের লক্ষ্যে শিক্ষা মন্ত্রণালয়ের অধীনে প্রতিযোগিতাটির আয়োজন করা হয়।

অনুষ্ঠানে শিক্ষামন্ত্রী শ্রমবাজারের চাহিদার ভিত্তিতে কারিগরি ও বৃত্তিমূলক শিক্ষা ও প্রশিক্ষণ ব্যবস্থার ওপর গুরুত্বারোপ করেন। তিনি বলেন, ‘দেশের বা বিদেশের শ্রমবাজারের তথ্য ব্যবস্থাপনার বিষয়টি আমরা এখনো করে উঠতে পারিনি, তবে আমরা প্রস্তুতি নিচ্ছি। এমন একটি তথ্যভান্ডার তৈরি হলে আমরা সে চাহিদা অনুযায়ী কর্মীদের প্রশিক্ষিত করে তুলতে পারব।’

প্রচলিত শিক্ষাব্যবস্থার ত্রুটির বিষয়ে দীপু মনি বলেন, ‘আমরা ঔপনিবেশিক শিক্ষাব্যবস্থার কুফল এখনো কাটিয়ে উঠতে পারিনি। এটি আমাদের নতুন ও নিজস্ব চিন্তাভাবনাকে নিরুৎসাহিত করে। আমাদের আরও একটু উদ্ভাবনী, উদ্যোগী ও সাহসী হতে হবে।’ এই ত্রুটি কাটাতে সরকারের বিভিন্ন প্রকল্প ও উদ্যোগের কথাও জানান শিক্ষামন্ত্রী।

বিশ্বব্যাংক ও কানাডা সরকারের অর্থায়নে ২০১৪ সাল থেকে এই প্রতিযোগিতা হয়ে আসছে। এ বছর দেশের ১৬৭টি পলিটেকনিক্যাল ইনস্টিটিউটের ৬ হাজার ২৬১ জন শিক্ষার্থী অংশ নেন, যার মধ্যে ৭৪১ জন নারী শিক্ষার্থী। প্রাথমিক পর্যায়ের ২ হাজার ৪২৮টি প্রকল্প থেকে সেরা ৫২টি প্রকল্প চূড়ান্তপর্বে আসে।

অনুষ্ঠানে উপস্থিতি ছিলেন কারিগরি শিক্ষা অধিদপ্তরের মহাপরিচালক রওনক মাহমুদ, বাংলাদেশ কারিগরি শিক্ষা বোর্ডের চেয়ারম্যান মো. মোরাদ হোসেন মোল্ল্যা, বিশ্বব্যাংকের এডুকেশন গ্লোবাল প্র্যাকটিসের সিনিয়র অপারেশন অফিসার মোখলেসুর রহমান, স্কিলস অ্যান্ড ট্রেনিং এনহ্যান্সমেন্ট প্রোজেক্টের প্রকল্প পরিচালক এ বি এম আজাদ প্রমুখ। অনুষ্ঠানে বিশেষ অতিথি ছিলেন নির্বাচন কমিশন সচিবালয়ের সচিব মো. আলমগীর।

কারিগরি শিক্ষা অধিদপ্তরের মহাপরিচালক রওনক মাহমুদ বলেন, ‘এসটিইপি প্রকল্পের মাধ্যমে কারিগরি শিক্ষাপ্রতিষ্ঠানগুলোর সঙ্গে এই ক্ষেত্রের শ্রমবাজারের সঙ্গে একটা সেতুবন্ধ তৈরি হয়েছে। উদ্যোক্তা ও শিল্পকারখানার সঙ্গে কারিগরি শিক্ষাপ্রতিষ্ঠানের সংযোগ তৈরি হচ্ছে। এভাবে শ্রমবাজার বুঝে আমরা কারিগরি শিক্ষার কারিকুলাম তৈরি করতে পারছি।’

নির্বাচন কমিশন সচিবালয়ের সচিব মো. আলমগীর বলেন, ‘আমাদের যদি দেশের উন্নয়ন করতে হয় এবং মধ্যম আয়ের দেশ হিসেবে নিজেদের ধরে রাখতে হয়, তবে প্রতিদিন আমাদের নতুন নতুন দক্ষতা অর্জন করতে হবে, অন্যথায় আমরা সামনে এগিয়ে যেতে পারব না।’