দুই বছরের মেয়েকে গলা কেটে হত্যা, মা আটক

চুয়াডাঙ্গার আলমডাঙ্গা উপজেলায় দুই বছরের মেয়েকে গলা কেটে হত্যার অভিযোগে এক মাকে আটক করেছে পুলিশ। আজ সোমবার ভোর সাড়ে ছয়টার দিকে উপজেলার জেহালা ইউনিয়নের সোনাতনপুর গ্রামে এ ঘটনা ঘটে।

নিহত শিশুটির নাম স্নেহা খাতুন। এ ঘটনায় মা শামীমা আক্তার সায়েমাকে আটক করা হয়েছে। প্রাথমিক জিজ্ঞাসাবাদে হত্যার কথা স্বীকার করেছেন শামীমা।

নিহত স্নেহার বাবা পল্লি চিকিৎসক মামুন অর রশিদ বলেন, ২০০৩ সালে সদর উপজেলার আকুন্দবাড়িয়া গ্রামে বিয়ে করেন। তাঁদের তিন মেয়ে। বড় মেয়ে (১২) সপ্তম শ্রেণিতে এবং মেজ মেয়ে (১০) পঞ্চম শ্রেণির ছাত্রী। ছোট মেয়ে স্নেহার বয়স দুই বছর।

মামুনের ভাষ্য, অন্যান্য দিনের মতোই গতকাল রাতে মামুন ও তাঁর স্ত্রী শামীমা ছোট মেয়ে স্নেহাকে নিয়ে দোতলা বাড়ির নিচতলায় ঘুমিয়ে ছিলেন। দোতলায় দুই মেয়ে, মা আলেয়া বেগম, ছোট ভাই ও ভাইয়ের স্ত্রী ঘুমিয়ে ছিলেন। দোতলা বাড়িটির ছাদে রান্নাঘর আছে। ভোর সাড়ে ছয়টার দিকে শামীমা ছোট মেয়ে স্নেহাকে রান্নাঘরে নিয়ে যান। সেখানে বটি দিয়ে গলা কেটে শিশুটিকে হত্যা করেন। পরে খুনের ঘটনাটি তিনি স্বীকারও করেন। মামুনের দাবি, শামীমা খাতুন মানসিক ভারসাম্যহীন। টানা ছয় মাস ধরে চুয়াডাঙ্গায় চিকিৎসক শাহাবুদ্দীন মুজতবার কাছে চিকিৎসা নিচ্ছেন।

এদিকে পুলিশের হাতে আটকের পর শামীমা তার মেয়েকে খুনের ঘটনা সরাসরি স্বীকার করেন। শামীমা বলেন, ‘গত এক বছর ধরে ছোট মেয়েকে খুন করার বিষয়টি মাথার ভেতর ঘুরপাক খেত। খুন করার জন্য মানসিক অস্থিরতায় ভুগতাম। স্নেহাকে খুন করার জন্য এর আগেও তিন-চার দিন চেষ্টা করি। গলাতে কয়েক দফা ছুরিও ধরি। কিন্তু মেয়েটির মুখের দিকে তাকিয়ে মায়া করায় খুন করতে পারেনি। আজ নিজেকে নিয়ন্ত্রণে না রাখতে পেরে গলা কেটে খুন করে ফেলি।’

তবে নাম প্রকাশে অনিচ্ছুক কয়েকজন প্রতিবেশীর ভাষ্য, পরপর তিনটি মেয়ে হওয়ায় পারিবারিকভাবে মানসিক নির্যাতন চলত শামীমার ওপর। বিশেষ করে ছোট মেয়েটি জন্মানোর পর শ্বশুরবাড়ির লোকজনকে নিয়ে শামীমা অস্বস্তিতে ভুগতেন। মাঝে-মধ্যে তিনি বলতেন, ছোট মেয়েটিই যখন কাল, তখন ওকেই শেষ করে ফেলব।

আলমডাঙ্গা থানার ভারপ্রাপ্ত কর্মকর্তা (ওসি) মো. আসাদুজ্জামান মুন্সী বলেন, ঘটনাটি খুবই মর্মান্তিক। আটক শামীমা খুনের কথা স্বীকার করেছেন। তবে খুনের পেছনের কারণ ও শামীমার বক্তব্য যাচাই করা হচ্ছে। এ ঘটনায় হত্যা মামলার প্রস্তুতি চলছে।