দেশে ফিরে অজ্ঞান পার্টির খপ্পরে সৌদিপ্রবাসী

সৌদি থেকে ফিরে বাড়িতে যাওয়ার পথে পাটুরিয়া-দৌলতদিয়া নৌপথে ফেরি পার হওয়ার সময় ফরহাদ হোসেন মোল্লা (৩০) নামের এক সৌদিপ্রবাসী অজ্ঞান পার্টির খপ্পরে পড়েন। তাঁর বাড়ি মাগুরা সদর উপজেলার সত্যজিৎপুর গ্রামে। এ ঘটনায় জড়িত থাকার দায়ে ইমরান হোসেন মোল্লা (২৪) নামের এক যাত্রীকে এক মাসের কারাদণ্ড দেওয়া হয়েছে। ইমরানের বাড়ি মাগুরার মোহাম্মদপুর উপজেলার চর জাগালিয়া গ্রামে।

থানা-পুলিশ ও স্থানীয়রা জানায়, সৌদি আরব থেকে গতকাল বিকেলে দেশে ফিরে ফরহাদ গাবতলী থেকে দর্শনাগামী সোহেলী পরিবহনের বাসে করে বাড়ির উদ্দেশে রওনা হন। তাঁর পাশের সিটে বসা ছিলেন ইমরান। বিকেল চারটার দিকে তাদের বাসটি পাটুরিয়া ঘাট থেকে কেরামত আলী নামের রো রো ফেরিতে ওঠে। ফেরিটি দৌলতদিয়ার উদ্দেশে ছেড়ে যায়। মাঝপথে পাশে থাকা যাত্রী ইমরান হোসেন বাস থেকে ব্যাগ নিয়ে নেমে পড়ার চেষ্টা করেন। জরিনা বানু (৫২) নামের এক যাত্রী বিষয়টি খেয়াল করেন।

জরিনা বানুর ভাষ্য, ফরহাদ হোসেনের ব্যাগ ও অন্যান্য মালামাল ইমরান নিয়ে বাস থেকে নেমে যাচ্ছিলেন। তিনি বুঝতে পেরে তাৎক্ষণিকভাবে অন্যের ব্যাগ নিয়ে নেমে যাওয়ার কারণ তাঁর কাছে জানতে চান। সন্দেহ হলে তাঁকে আটক করেন। ফরহাদকে অচেতন অবস্থায় বাসের সিটে পড়ে থাকতে দেখেন। বিষয়টি দৌলতদিয়া নৌপুলিশকে জানানো হয়। নৌপুলিশ গোয়ালন্দ ঘাট থানা-পুলিশকে বিষয়টি জানায়। ফেরি দৌলতদিয়া ঘাটে পৌঁছামাত্র ফরহাদ হোসেনকে উদ্ধার এবং ইমরান হোসেনকে আটক করে পুলিশে হস্তান্তর করা হয়। পুলিশ ফরহাদকে গোয়ালন্দ উপজেলা স্বাস্থ্য কমপ্লেক্সে ভর্তি করে এবং আটক ইমরানকেও প্রাথমিক চিকিৎসা দেওয়া হয়।

আটক ইমরানের দাবি, ফরহাদ তাঁর পূর্ব পরিচিত। বাসে আসার সময় তাঁকে দেখে চিনতে পারেন। গাবতলী থেকে বাসে ওঠার পর থেকে ফরহাদ অসুস্থ বোধ করছিলেন। পথে তিনি কী খেয়েছেন, সেটা তাঁর জানা নেই। তিনি কোনো কিছু করেননি। প্রবাসীর মালামাল নিরাপদে রাখতেই তাঁর ব্যাগে তুলছিলেন বলে দাবি তাঁর।

গোয়ালন্দ ঘাট থানার উপপরিদর্শক (এসআই) সনাতন সরকার ঘটনার সত্যতা নিশ্চিত করেন।

গোয়ালন্দ ঘাট থানার ভারপ্রাপ্ত কর্মকর্তা (ওসি) এজাজ শফী বলেন, আজ আটক তরুণকে উপজেলা নির্বাহী কর্মকর্তার (ইউএনও) কার্যালয়ে হাজির করা হয়। অপরাধ স্বীকার করায় ভ্রাম্যমাণ আদালতের মাধ্যমে তাঁকে এক মাসের বিনাশ্রম কারাদণ্ড দেওয়া হয়। পরে তাঁকে রাজবাড়ীর জেলা কারাগারে পাঠানো হয়। আর সকালে ফরহাদকে তাঁর পরিবারের সদস্যরা বাড়ি নিয়ে গেছে।