সুনামগঞ্জে হত্যার দায়ে বাবা ও দুই ছেলের যাবজ্জীবন

সুনামগঞ্জে একটি হত্যা মামলায় রায়ে একই পরিবারের তিনজনকে যাবজ্জীবন কারাদণ্ড দিয়েছেন আদালত। একই সঙ্গে তিন ব্যক্তিকে ৫০ হাজার টাকা করে জরিমানা করা হয়েছে। সুনামগঞ্জের অতিরিক্ত জেলা ও দায়রা জজ মোহাম্মদ আবদুল্লাহ আল মামুন আজ সোমবার এ রায় দেন।

দণ্ডপ্রাপ্তরা হলেন জেলার তাহিরপুর উপজেলার চিকসা গ্রামের হাছন আলী এবং তাঁর দুই ছেলে নোমান মিয়া ও কামাল মিয়া। রায় ঘোষণার সময় আসামিরা আদালতে উপস্থিত ছিলেন।

মামলা সূত্রে জানা গেছে, চিকসা গ্রামের রণজিৎ পুরকায়স্থের বড় ছেলে শিক্ষার্থী রুবেল ২০০০ সালের ২০ আগস্ট রাতে নিজ ঘরে পড়ছিল। এ সময় প্রতিবেশী মির্জা হাছন আলীর ছেলে ও রুবেলের সহপাঠী নোমান মিয়া এসে কাজ আছে বলে তাকে ঘর থেকে ডেকে নেয়। তখন রুবেলকে দ্রুত ফিরে আসতে বলে দেন তার বাবা। এরপর রণজিৎ ঘুমিয়ে পড়েন। রাত দুইটার দিকে রণজিৎ ও তাঁর পরিবারের অন্যরা বাড়ির পশ্চিম পাশে ‘চোর’ ‘চোর’ বলে কিছু লোকের চিৎকার শোনেন। এরপর তাঁরা ঘর থেকে বেরিয়ে হাছন আলী, নোমান ও কামালকে দেখেন। তখন হাছন আলী রণজিৎকে উদ্দেশ্য করে বলেন, ‘তোদের বাড়িতেই চোর’। নোমান ও কামাল উত্তেজিত হয়ে পুকুর পাড়ে গিয়ে চোর দেখার জন্য এবং চোরকে চিনে নেওয়ার জন্য বলেন। পুকুরপাড়ে গিয়ে রুবেলকে রক্তাক্ত অবস্থায় পড়ে থাকতে দেখেন তাঁর পরিবারের সদস্যরা। তাহিরপুর উপজেলা স্বাস্থ্য কমপ্লেক্সে নেওয়া হলে চিকিৎসক তাকে মৃত ঘোষণা করেন। এ ঘটনায় পরের দিন রণজিৎ পুরকায়স্থ বাদী হয়েছে হাছন আলী, নোমান ও কামালসহ সাতজনের বিরুদ্ধে থানায় একটি হত্যা মামলা করেন।

পুলিশ মামলার তদন্ত শেষে সাত আসামির বিরুদ্ধে আদালতে অভিযোগপত্র দেয়। মামলার দীর্ঘ শুনানি শেষে আদালত আজ তিন আসামিকে যাবজ্জীবন এবং অন্য চার আসামিকে খালাস দেন।

মামলার রায়ের বিষয়টি নিশ্চিত করেছেন সুনামগঞ্জের অতিরিক্ত সরকারি কৌঁসুলি (এপিপি) সোহেল আহমদ ছইল মিয়া।

বাদী পক্ষে ছিলেন আইনজীবী রবিউল লেইছ এবং আসামি পক্ষের আইনজীবী সৈয়দ জামিলুল হক।