বগুড়া-৬ আসনে বিএনপি প্রার্থী সিরাজের গাড়ি ভাঙচুর

বগুড়া সদর উপজেলার শাখারিয়া ইউনিয়নের পাঁচবাড়িয়া বাজারে বগুড়া–৬ আসনের ধানের শীষের প্রার্থী জি এম সিরাজের কর্মী-সমর্থকদের সঙ্গে স্বতন্ত্র প্রার্থী মো. মিনহাজ মণ্ডলের সমর্থকদের মধ্যে সংঘর্ষের ঘটনা ঘটে। ছবি: সোয়েল রানা
বগুড়া সদর উপজেলার শাখারিয়া ইউনিয়নের পাঁচবাড়িয়া বাজারে বগুড়া–৬ আসনের ধানের শীষের প্রার্থী জি এম সিরাজের কর্মী-সমর্থকদের সঙ্গে স্বতন্ত্র প্রার্থী মো. মিনহাজ মণ্ডলের সমর্থকদের মধ্যে সংঘর্ষের ঘটনা ঘটে। ছবি: সোয়েল রানা

বগুড়া-৬ (সদর) আসনের নির্বাচনে বিএনপির ধানের শীষের প্রার্থী জি এম সিরাজের প্রচারবহরে হামলা ও গাড়ি ভাঙচুরের ঘটনা ঘটেছে। আপেল প্রতীক নিয়ে প্রতিদ্বন্দ্বিতাকারী স্বতন্ত্র প্রার্থী মো. মিনহাজ মণ্ডলের কর্মীদের সঙ্গে ধানের শীষের প্রার্থীর সংঘর্ষের সময় এ ঘটনা ঘটে। এতে উভয় পক্ষের সাতজন কর্মী আহত হয়েছেন। তাঁরা শহরের বিভিন্ন ক্লিনিক-হাসপাতাল থেকে চিকিৎসা নিয়েছেন।

আজ সোমবার বেলা দেড়টার দিকে বগুড়া সদর উপজেলার শাখারিয়া ইউনিয়নের পাঁচবাড়িয়া বাজারে এ ঘটনা ঘটে। পরে পুলিশ গিয়ে পরিস্থিতি নিয়ন্ত্রণে আনে। সহিংসতা এড়াতে সেখানে বিপুলসংখ্যক পুলিশ মোতায়েন করা হয়েছে।

নির্বাচনী প্রচারণা ও গাড়িবহরে হামলার জন্য স্বতন্ত্র প্রার্থী মো. মিনহাজ মণ্ডলকে দায়ী করে জি এম সিরাজ বিকেলে রিটার্নিং কর্মকর্তার কাছে লিখিত অভিযোগ করেছেন। সেখানে মিনহাজের বিরুদ্ধে আচরণবিধি লঙ্ঘনের অভিযোগ আনা হয়।
দলীয় সূত্রে জানা গেছে, মিনহাজ মণ্ডল মালয়েশিয়ায় থাকাকালে জাতীয়তাবাদী যুবদলের মালয়েশিয়া শাখার সাধারণ সম্পাদক ছিলেন। দেশে ফেরার পর তিনি বগুড়া সদর উপজেলা শাখার উপদেষ্টা পদে রয়েছেন। বগুড়া-৬ শূন্য আসনের নির্বাচনে জি এম সিরাজকে ধানের শীষ প্রতীক ও দলীয় মনোনয়ন দেওয়া হলেও নির্দেশ লঙ্ঘন করে বগুড়া-৬ আসনের নির্বাচনে স্বতন্ত্র প্রার্থী হয়েছেন। তিনি আপেল প্রতীক নিয়ে লড়ছেন।

পুলিশ ও প্রত্যক্ষদর্শী সূত্রে জানা গেছে, আজ দুপুরে ধানের শীষের প্রার্থী জি এম সিরাজ কর্মী-সমর্থকদের সঙ্গে নিয়ে শাখারিয়া ইউনিয়নের পাঁচবাড়িয়া বাজারে যান। এ সময় বাজারের বিএনপির কার্যালয় দখল নিয়ে মিনহাজ মণ্ডলের সমর্থকদের সঙ্গে ধানের শীষের সমর্থকদের বিতণ্ডা বাধে। এ নিয়ে উভয় পক্ষের মধ্যে উত্তেজনা তৈরি হলে আপেল প্রতীকের সমর্থকেরা লাঠিসোঁটা, হকিস্টিক হাতে ধানের শীষের নেতা–কর্মীদের ওপর হামলা করেন। এতে উভয় পক্ষের মধ্যে সংর্ঘষ বাধে। এতে সদর উপজেলা ছাত্রদলের আহ্বায়ক সিফাত সরকার, জেলা ছাত্রদলের যুগ্ম সম্পাদক শাহেদ, শ্রমিক দলের সভাপতি আবদুল্লাহ আল মামুন, ছাত্রদলের নেতা আরিফ ও আল আমিন এবং আপেল প্রতীকের কর্মী সম্রাট ও মাসুদ আহত হন। সিফাতকে টিএমএসএস মেডিকেল কলেজ হাসপাতাল এবং মামুনকে বগুড়ার শহীদ জিয়াউর রহমান মেডিকেল কলেজ হাসপাতালে ভর্তি করা হয়েছে। একপর্যায়ে ধানের শীষের কর্মীদের নিয়ে জি এম সিরাজের গাড়িবহর পাঁচবাড়িয়া বাজার ত্যাগ করতে চাইলে আপেল প্রতীকের সমর্থকেরা লাঠিসোঁটা ও হকিস্টিক হাতে বহরে হামলা করেন। এতে দুটি মাইক্রোবাস এবং বেশ কয়েকটি মোটরসাইকেল ভাঙচুর করা হয়। পাঁচবাড়িয়া বাজারে গিয়ে জোহরের নামাজের সময় হওয়ায় মসজিদে নামাজের প্রস্ততি নিচ্ছিলেন ধানের শীষের কর্মীরা। কিন্তু বিনা উসকানিতে আপেল প্রতীকের প্রার্থী এবং ৩০-৪০ জন সমর্থক হকিস্টিক ও লাঠি হাতে ধানের শীষের কর্মীদের ওপর হামলা করেন।

বগুড়ায় বিএনপির প্রার্থী ও স্বতন্ত্র প্রার্থীর সমর্থকদের মধ্যে সংঘর্ষ। ছবি: প্রথম আলো
বগুড়ায় বিএনপির প্রার্থী ও স্বতন্ত্র প্রার্থীর সমর্থকদের মধ্যে সংঘর্ষ। ছবি: প্রথম আলো

সংঘাত এড়াতে গাড়িবহর নিয়ে ঘটনাস্থল ত্যাগ করার সময় আরেক দফা বহরে হামলা চালিয়ে দুটি মাইক্রোবাস এবং বেশ কয়েকটি মোটরসাইকেল ভাঙচুর করা হয়। এতে ধানের শীষের পাঁচজন নেতা–কর্মী আহত হয়েছেন।
হামলার অভিযোগ অস্বীকার করে আপেল প্রতীকের প্রার্থী মিনহাজ মণ্ডল প্রথম আলোকে বলেন, ধানের শীষের কর্মীরা বিনা উসকানিতে আপেল প্রতীকের নির্বাচনী ক্যাম্পে হামলা করে বেশ কয়েকজন কর্মীকে আহত করে। খবর পেয়ে সাধারণ মানুষ একজোট হয়ে গাড়িবহরের বেশ কয়েকটি গাড়ি ভাঙচুর করেছে। তিনি বলেন, ‘বিএনপি করতাম। নিজের পরিচিতি বাড়ানোর জন্য প্রার্থী হয়েছি। দল পারলে বহিষ্কার করুক।’

বগুড়া সদর সার্কেলের অতিরিক্ত পুলিশ সুপার সনাতন চক্রবর্তী বলেন, ঘটনার পরপরই পুলিশ সেখানে গিয়ে পরিস্থিতি নিয়ন্ত্রণে আনে। সংঘাত এড়াতে সেখানে অতিরিক্ত পুলিশ মোতায়েন করা হয়েছে।