ভাগনেকে ফেরত চান সোহেল তাজ

চট্টগ্রাম থেকে আট দিন ধরে নিখোঁজ সৈয়দ ইফতেখার আলম সৌরভকে ফেরত চেয়েছেন তার স্বজনেরা। সৌরভের নিখোঁজের ব্যাপারে আজ সোমবার দুপুরে ঢাকা রিপোটার্স ইউনিটির সাগর–রুনি মিলনায়তনে এক সংবাদ সম্মেলনের আয়োজন করা হয়। সেখানে সৌরভের মামা সাবেক স্বরাষ্ট্র প্রতিমন্ত্রী তানজিম আহেমদ সোহেল তাজ বলেছেন, গণতন্ত্র ও সুবিচার প্রতিষ্ঠার জন্য মুক্তিযুদ্ধ করে স্বাধীন করা দেশে গুম, অপহরণ কাম্য নয়।

সোহেল তাজ বলেন, ‘পরিবারের ব্যাকগ্রাউন্ড কী সেটা মূখ্য বিষয় নয়। রাষ্ট্র চলবে আইনের শাসনের মাধ্যমে। আশা করব সব মানুষের জন্য এটি সমানভাবে প্রযোজ্য হবে। সে অনুযায়ী আমার ভাগনেকে জীবিত ও সুস্থ অবস্থায় দ্রুত ফিরে পাব রাষ্ট্র ও আইনশৃঙ্খলা রক্ষাকারী বাহিনীর কাছে সেটাই প্রত্যাশা থাকবে।’
গত ৯ জুন সন্ধ্যায় চট্টগ্রামের মিমি সুপার মার্কেটে যাওয়ার পথে নিখোঁজ হন সৌরভ। সংবাদ সম্মেলনে লিখিত বক্তব্যে সৌরভের মা সৈয়দা ইয়াসমিন আরজুমান বলেন, ‘ওই দুপুরে র‍্যাবের লোকজন সৌরভের সঙ্গে যোগাযোগ করে সন্ধ্যা সাতটায় মার্কেটের সামনে যেতে বলেছিলেন। সেখানে গিয়ে সৌরভ আর ফিরে আসেনি। এরপর থেকে তার মুঠোফোনও বন্ধ পাওয়া যায়।’
তবে র‍্যাবের গণমাধ্যম শাখায় যোগযোগ করা হলে তারা অভিযোগের ছবি তুলে পাঠাতে বলেন।

সৌরভের সঙ্গে র‍্যাবের যোগাযোগ করতে চাওয়ার কারণ ও আগের ঘটনার বর্ণনায় ইয়াসমিন আরজুমান বলেন, ২০১৭ সালে এক তরুণীর সঙ্গে সৌরভের যোগাযোগ ও সম্পর্ক তৈরি হয়। তরুণী পর্দানশীল পরিবারের সদস্য হওয়ায় সৌরভকে প্রস্তাব দেয় সম্পর্ক অক্ষত রাখতে হলে প্রাথমিকভাবে টেলিফোনে বিয়ে করতে হবে। বিয়ে না করলে তরুণীটি নিজের প্রাণনাশেরও হুমকি দেয়। এরই মধ্যে তরুনির বাবা জোর করে তাকে অন্য জায়গায় বিয়ে দেয়। ২০১৮ সালে এই বিয়ে ভেঙে যায়।

ইয়াসিমন আরজুমান অভিযোগ করেন, এই বিয়ে ভেঙে যাওয়ার কারণ হিসেবে তরুণীর বাবা তৈরি পোশাক কারখানার ব্যবসায়ী সৌরভকে দায়ি করে ও তার প্রাণনাশের হুমকি দেয়। এর জের ধরে ২০১৯ সালের ৭ ফেব্রুয়ারি সৌরভ ঢাকার বনানীতে এক পরিচিতের বাসায় থাকার সময়ে উত্তরায় র‍্যাব এর কার্যালয়ে ডেকে নেওয়া হয় ও সওদার সঙ্গে যোগাযোগ না রাখতে বলা হয়। এর চারদিন পর ১২ ফেব্রুয়ারি বনানী থানার ওসি সৌরভকে ডেকে নিয়ে মামলা করে ফাঁসিয়ে দেওয়ার হুমকি দেন।
লিখিত বক্তব্যে তিনি বলেন, গত ১৬ মে বনানীর বাসা থেকে ডিজিএফআই ও র‍্যাব পরিচয় দিয়ে ৮–১০ জন সৌরভকে চোখ বেঁধে নিয়ে যায়। পরদিন ১৭ মে রাতে আবার ফেরত দিয়ে যায়। এ সময় র‍্যাব–১ বাসার পরিচিতজনের এই মর্মে সাক্ষর নেয় যে, তারা সৌরভকে অক্ষত অবস্থায় ফেরত পেয়েছে। চট্টগ্রামে ফিরে আসলে ৮ জুন র‍্যাব আবার সৌরভের সঙ্গে যোগাযোগ করে ও তাকে ওই তরুণীর সঙ্গে যোগাযোগ না রাখতে বলে। একই সঙ্গে চাকরির প্রলোভন দেওয়া হয় । ৯ জুন প্রয়োজনীয় কাগজ ও পাসপোর্টসহ র‍্যাব দেখা করতে বলে। এরপর থেকে সৌরভকে আর বাসায় ফিরে আসেনি।
এ বিষয়ে রাতে যোগাযোগ করা হলে র‍্যাবের আইন ও গণমাধ্যম শাখার কর্মকর্তা রইসুল আজম বলেন, এ বিষয়ে র‍্যাব কিছু জানে না। চাকরির কথা বলে ডেকে নেওয়ার অভিযোগ প্রসঙ্গে তিনি বলেন, র‍্যাব আইনশৃঙ্খলা রক্ষাকারী বাহিনী। কাউকে চাকরি দেওয়া র‍্যাবের কাজ না।