স্বাক্ষর জাল করে মুক্তিযোদ্ধার ভাতা তোলার অভিযোগ

টাঙ্গাইলের মির্জাপুরে ভাইবোনের স্বাক্ষর জাল করে প্রয়াত মুক্তিযোদ্ধার ভাতা উত্তোলনের অভিযোগ পাওয়া গেছে। এ ঘটনায় লিখিত অভিযোগ পাওয়ার পর উপজেলা সমাজসেবা কার্যালয় থেকে ভাতা দেওয়া স্থগিত করা হয়েছে।

উপজেলা সমাজসেবা কার্যালয় সূত্রমতে, উপজেলার মহেড়া ইউনিয়নের ছাওয়ালী গ্রামের মুক্তিযোদ্ধা মো. নুরুল ইসলাম ২০০৬ সালের ২০ ফেব্রুয়ারি মারা যান। তাঁর মুক্তিবার্তা নম্বর ৩১০০১০৬৮৩, গেজেট নম্বর ম-৭৫৭১।

মৃত্যুর পর তাঁর স্ত্রী রওশন আরা বেগম ভাতা তোলেন। কিন্তু তিনি অসুস্থ হয়ে পড়লে ছেলেরা বিভিন্ন স্থানে কর্মব্যস্ত থাকায় তাঁর বড় মেয়ে (বৈমাত্রেয়) মাকরুমা বেগমকে তাঁর পক্ষে টাকা তোলার জন্য মনোনীত করেন। ২০১৩ সালের ২২ জুন রওশন আরা বেগম মারা গেলে ভাতা প্রদান বন্ধ হয়। পরে সরকার পোষ্যদের জন্য মুক্তিযোদ্ধা ভাতা দেওয়ার ব্যবস্থা করলে মাকরুমা তাঁর বৈমাত্রেয় ভাই দেওয়ান লালন আহমেদ, দেওয়ান একরামুল ইসলাম ও ছলেমন নেছার স্বাক্ষর জাল করে নিজের নামে নমিনি তৈরি করে চারজনের অংশের ভাতা একাই তোলা শুরু করেন।

গত বছরের নভেম্বরে বিষয়টি টের পান মাকরুমার ভাইবোনেরা। তাঁরা তিনজন বিষয়টি সুরাহার জন্য উপজেলা নির্বাহী কর্মকর্তার (ইউএনও) কাছে লিখিত আবেদন করেন। একই সঙ্গে সোনালী ব্যাংকের মির্জাপুর শাখায় খোঁজ নিয়ে তাঁরা জানতে পারেন, মাকরুমা তাঁদের বাবার মুক্তিযোদ্ধা ভাতা প্রাপ্র্যতার ব্যাংক হিসাব থেকে দুই লাখ টাকা ঋণও গ্রহণ করেছেন।

এ ব্যাপারে দেওয়ান একরামুল ইসলামের সঙ্গে গত রোববার বিকেলে কথা হলে জানান, তাঁদের স্বাক্ষর জাল করে টাকা তোলার বিষয়টি টের পেয়ে তাঁরা সমাজসেবা কার্যালয়ে যান। সেখানে গিয়ে তাঁরা নিশ্চিত হন যে তাঁদের স্বাক্ষর জাল করে টাকা তোলা হয়েছে। এ ছাড়া ব্যাংক থেকে ঋণ নেওয়ার বিষয়টিও তাঁরা জানেন না।

এ বিষয়ে মাকরুমা বেগম দাবি করেন, তিনি ভাইদের সম্মতিতেই নমিনি হিসেবে ভাতা তুলছেন। বিভিন্ন সময়ে ভাইবোনদের তিনি টাকাও দিয়েছেন। ব্যাংক থেকে ঋণ নেওয়ার বিষয়টিও তাঁর ভাইবোনেরা জানেন।

উপজেলা সমাজসেবা কর্মকর্তা মোহাম্মদ খাইরুল ইসলাম গতকাল সোমবার জানান, মাকরুমার বিরুদ্ধে জালিয়াতির বিষয়ে অভিযোগ পাওয়ার পর ভাতা প্রদান স্থগিত করা হয়েছে। এ বিষয়ে সংশ্লিষ্ট ব্যক্তিদের নিয়ে আগামী সপ্তাহে সভা করে প্রয়োজনীয় পদক্ষেপ নেওয়া হবে।