রোগী সেজে ভুয়া চিকিৎসক আটক

রোগী সেজে প্রথমে চিকিৎসকের চেম্বারে প্রবেশ করেন র‍্যাব–৭ চট্টগ্রামের সহকারী পরিচালক মিমতানূর রহমান। চেম্বারের বাইরে অপেক্ষা করতে থাকেন নির্বাহী ম্যাজিস্ট্রেট তাহমিলুর রহমান এবং সিভিল সার্জন কার্যালয়ের স্বাস্থ্য কর্মকর্তা মোহা. ওয়াজেদ চৌধুরী। একপর্যায়ে তাঁরাও ঢুকে পড়েন চেম্বারে। এরপর দফায় দফায় জেরায় বেরিয়ে আসে ভুয়া চিকিৎসক বিকিরণ বড়ুয়ার কীর্তিকলাপ। তাঁর নেই কোনো এমবিবিএস ডিগ্রি। বিএমডিসি রেজিস্ট্রেশন নম্বরটিও ভুয়া।

গত সোমবার সন্ধ্যায় চট্টগ্রাম নগরের দক্ষিণ পতেঙ্গার বিজয় নগর এলাকার আয়েশা মেডিকো নামের একটি ওষুধ বিক্রির দোকানে এই ভুয়া চিকিৎসকের সন্ধান মেলে। প্রতারণার জন্য এই ভুয়া ডাক্তারকে ছয় মাসের কারাদণ্ড ও এক লাখ টাকা জরিমানা করেন ভ্রাম্যমাণ আদালত।

একই সময়ে আয়েশা মেডিকোকেও মেয়াদোত্তীর্ণ ও ভেজাল ওষুধ বিক্রি করায় পঞ্চাশ হাজার টাকা জরিমানা ও মালিক ফরিদুল আলমকে তিন মাসের কারাদণ্ড দেওয়া হয়।

বিষয়টি নিশ্চিত করেন নির্বাহী ম্যাজিস্ট্রেট তাহমিলুর রহমান। তিনি জানান, বিকিরণ বড়ুয়া নিজেকে ডায়াবেটিস, মেডিসিন ও শিশুরোগের চিকিৎসক দাবি করে দীর্ঘদিন ধরে মানুষের সঙ্গে প্রতারণা করে আসছিলেন। তাঁর ডিগ্রি সম্পর্কে জানতে চাইলে তিনি ভারতের একটি মেডিকেল কলেজের বেশ কিছু ভুয়া প্রিন্ট করা সনদ দেখান।

বিএমডিসি রেজিস্ট্রেশন নম্বর জানতে চাওয়া হলে তিনি বলেন ৯১১১৩। কিন্তু বিএমডিসির ওয়েবসাইটে এ রকম কোনো নাম ও নম্বরই নেই। অন্যদিকে আয়েশা মেডিকোরও নিবন্ধন নেই। বিকিরণ ও ফার্মেসির মালিক ফরিদুল আলম যৌথভাবে ভুয়া চিকিৎসা দিয়ে ব্যবসা করে আসছিলেন।

সূত্র জানায়, দক্ষিণ পতেঙ্গা, ইপিজেড, কলসিদীঘির পাড় এলাকায় নামের পাশে এমবিবিএস ডিগ্রি দেখিয়ে অনেক ভুয়া চিকিৎসক রোগী দেখছেন। তাঁদের মূল লক্ষ্য বিভিন্ন কারখানায় কর্মরত পোশাকশ্রমিকেরা। অতীতেও তাঁদের বিরুদ্ধে আইনশৃঙ্খলা রক্ষাকারী বাহিনী অভিযান পরিচালনা করে। ভুয়া চিকিৎসকদের কয়েকটি সমিতিও রয়েছে।