সরকারি টাকায় ব্যক্তিগত রাস্তা

সরকারি অর্থে পাকা করা সড়ক। বানিয়াচং উপজেলার তোপখানা মহল্লায়।  প্রথম আলো
সরকারি অর্থে পাকা করা সড়ক। বানিয়াচং উপজেলার তোপখানা মহল্লায়। প্রথম আলো

হবিগঞ্জের বানিয়াচং উপজেলায় সরকারি বরাদ্দের টাকায় একটি ব্যক্তিগত সড়ক পাকা করার অভিযোগ উঠেছে। হবিগঞ্জ জেলা পরিষদের ২ নম্বর ওয়ার্ডের সদস্য মনির হোসেন খানের বিরুদ্ধে এই অভিযোগ উঠেছে। তবে মনির হোসেনের দাবি, জনস্বার্থে এ সড়কটি নির্মাণ করা হয়েছে।

এলাকাবাসীর অভিযোগ সূত্রে জানা গেছে, বানিয়াচং উপজেলার তোপখানা মহল্লায় ১৪০ ফুট দীর্ঘ ও ৮ ফুট প্রস্থের আরসিসি ঢালাই করা একটি সড়কের নির্মাণকাজ সম্প্রতি সম্পন্ন করেছে জেলা পরিষদ। এতে ব্যয় ধরা হয় ৪ লাখ টাকা। এলাকাবাসীর দাবি, পাকা করা এ সড়কটি হবিগঞ্জ জেলা পরিষদের ২ নম্বর ওয়ার্ড সদস্য মনির হোসেন খানের বাড়ির ব্যক্তিগত সড়ক।

সরেজমিনে দেখা গেছে, মহল্লায় অবস্থিত মনিরের বাড়িতে যাতায়াতের একমাত্র রাস্তাটি পাকাকরণ কাজ শেষ হয়েছে। সড়কটির নির্মাণকাজের উদ্বোধন ফলকে লেখা, ‘ফারুক মিয়ার বাড়ির সামন থেকে তালেব হোসেন খানের বাড়ি (তালেব হোসেন খান জেলা পরিষদ সদস্য মনির হুসেন খানের বাবা) পর্যন্ত ১৪০ ফুট দৈর্ঘ্য ও ৮ ফুট প্রস্থ আরসিসি ঢালাই কাজ। (২০১৭-১৮ অর্থবছর) বাস্তবায়নে জেলা পরিষদ।’ মনির হোসেন খান নিজেই এ সড়কটি উদ্বোধন করেন।

এ সড়কের পূর্ব ও পশ্চিমে একটি দেয়াল রয়েছে। এ দেয়ালের বিপরীতে বসবাস করে পাঁচটি পরিবার। ওই পরিবারগুলো নির্মাণ করা এ সড়ক দিয়ে চলাচল করে না। তারা পাশের এলজিইডির সড়ক দিয়ে চলাচল করে।

নাম প্রকাশ না করার শর্তে এলাকার এক বাসিন্দা বলেন, প্রথমে সবাই মনে করেছিল মনির নিজের বাড়ির সৌন্দর্য রক্ষায় ব্যক্তিগত অর্থে সড়কটি নির্মাণ করেছেন। পরে উদ্বোধন ফলক দেখে জানতে পারেন সড়কটি সরকারি অর্থে অর্থাৎ প্রকল্প গ্রহণ করে ৪ লাখ টাকা ব্যয়ে পাকা করা হয়েছে।

জানতে চাইলে সদস্য মনির হোসেন বলেন, তিনি নিজের স্বার্থে এ সড়ক নির্মাণ করাননি। এ সড়কটি দিয়ে চার-পাঁচটি পরিবারের সদস্যরা চলাচল করে থাকেন। যে কারণে জনকল্যাণেই রাস্তাটি পাকা করা হয়।

জেলা পরিষদের প্রধান নির্বাহী কর্মকর্তা (অতিরিক্ত দায়িত্ব) নুরুল ইসলাম বলেন, ব্যক্তিগত সড়ক সরকারি অর্থ দিয়ে নির্মাণ করার কোনো সুযোগ নেই। তিনি সদ্য এ পরিষদে দায়িত্ব নিয়েছেন। বিষয়টি খোঁজ নিয়ে দেখবেন।

জেলা পরিষদ চেয়ারম্যান মুশফিক হোসেন চৌধুরী বলেন, জেলা পরিষদ জনস্বার্থে গ্রামীণ অবকাঠামোগত উন্নয়নকাজ করে থাকে। কারও ব্যক্তিগত উন্নয়ন করার সুযোগ নেই। তিনি খোঁজ নিয়ে ব্যবস্থা গ্রহণ করবেন।