পৌরসভার বর্জ্য ফেলা হচ্ছে বংশী নদীতে

সাভার পৌর এলাকার ময়লা-আবর্জনা ফেলা হচ্ছে বংশী নদীতে।  ছবি: প্রথম আলো
সাভার পৌর এলাকার ময়লা-আবর্জনা ফেলা হচ্ছে বংশী নদীতে। ছবি: প্রথম আলো

ঢাকার সাভার পৌরসভার কয়েকটি এলাকার ময়লা-আবর্জনা বংশী নদী ও নদীর তীরে ফেলা হচ্ছে। এতে নদীর পানি দূষিত হচ্ছে। আবর্জনা থেকে ছড়ানো দুর্গন্ধে চরম দুর্ভোগে পড়েছেন আশপাশের বাসিন্দারা।

পরিচ্ছন্নতাকর্মীরা বলেন, নির্ধারিত জায়গা না থাকায় তাঁরা নদী ও নদীর তীরে ময়লা ফেলছেন। বিষয়টি পৌর কর্তৃপক্ষেরও জানা আছে বলে জানান তাঁরা।

সাভার পৌরসভার পাশ দিয়ে সাভার ও ধামরাইয়ের সীমানা ঘেঁষে বয়ে গেছে বংশী নদী। দখল-দূষণে এই নদীর অস্তিত্ব এখন হুমকির মুখে। ময়লা-আবর্জনা ফেলার কারণে নদীটি আরও সরু হয়ে যাচ্ছে।

মঙ্গলবার সাভারের রেডিও কলোনি-নামাবাজার সড়কের পাশে বাঁশপট্টির কাছে বখতারপুর এলাকায় বংশী নদী এবং এর তীরে ময়লা–আবর্জনা ফেলতে দেখা যায়। পৌরসভার পরিচ্ছন্নতাকর্মীরা রিকশা-ভ্যানে করে আবর্জনা নদীর তীরে এনে স্তূপ করছিলেন। পরে সেখান থেকে আবর্জনা নদীতে ফেলা হয়। দীর্ঘদিন ধরে আবর্জনা ফেলার কারণে আবর্জনার স্তূপ কয়েক বিঘা এলাকায় বিস্তৃত হয়ে পড়েছে।

আবর্জনার স্তূপের পাশের চা–দোকানি রুমা বেগম বলেন, এক বছরের বেশি সময় ধরে নদী ও নদীর তীরে ময়লা ফেলা হচ্ছে। ময়লা থেকে ছড়ানো দুর্গন্ধে অনেক সময় দোকানে থাকা কষ্টকর হয়ে পড়ে। গন্ধের কারণে তাঁর দোকানে লোকজন তেমন একটা যান না। রুমা বেগমের দোকানে বসে চা পান করছিলেন পৌর এলাকার আড়াপাড়া মহল্লার আবুল কাশেম। তিনি বলেন, আগে তিনি নিয়মিত ওই দোকানে চা পান করতেন। দুর্গন্ধের কারণে খুব প্রয়োজন ছাড়া তিনি আর ওই দোকানে যান না। বখতারপুরের বাসিন্দা আবদুল কাদের বলেন, ময়লা-আবর্জনার কারণে এলাকায় মশা, মাছি ও পোকামাকড়ের উপদ্রব বেড়ে গেছে। দুর্গন্ধের কারণে ঘরের ভেতরে বসে খাবার খেতেও সমস্যা হয়।

>পরিচ্ছন্নতাকর্মীরা বলেন, নির্ধারিত জায়গা না থাকায় তাঁরা নদী ও নদীর তীরে ময়লা ফেলছেন।

নদীতে ময়লা-আবর্জনা ফেলছেন এমন কয়েকজন পরিচ্ছন্নতাকর্মী বলেন, পৌরসভার আড়াপাড়া, উত্তরপাড়া, বিনোদবাইদ, বাজার রোড, বখতারপুর, নামাবাজারসহ আশপাশের এলাকার ময়লা ফেলার নির্দিষ্ট কোনো জায়গা নেই। এ কারণে ওই সব এলাকার ময়লা-আবর্জনা নদী ও নদীর তীরে ফেলা হচ্ছে।

সাভার উপজেলা স্বাস্থ্য ও পরিবার পরিকল্পনা কর্মকর্তা আমজাদুল হক বলেন, আবর্জনার দূষণ থেকে মানুষের পেটে পীড়া, চর্মরোগ, ডায়রিয়া, ব্রঙ্কাইটিস ও শ্বাসকষ্ট হতে পারে।

সাভার নাগরিক কমিটির সাধারণ সম্পাদক সালাউদ্দিন খান বলেন, প্রথমে মাসের পর মাস আবর্জনা ফেলে নদী ভরাট করা হয়। পরে সেখানে ঘর তুলে ভাড়া দেওয়া হয় অথবা দখল বিক্রি করা হয়। এভাবেই পৌর এলাকায় নদী এবং নদীর তীরে কয়েক হাজার অবৈধ পাকা ও আধা পাকা স্থাপনা গড়ে উঠেছে।

জানতে চাইলে সাভার পৌরসভার প্রধান নির্বাহী কর্মকর্তা শরফ উদ্দিন আহমদ চৌধুরী বলেন, নদী অথবা নদীর তীরে ময়লা-আবর্জনা ফেলার কথা না। এরপরও এমন হয়ে থাকলে তদন্ত করে সংশ্লিষ্টদের বিরুদ্ধে ব্যবস্থা নেওয়া হবে।