বাল্যবিবাহের বরযাত্রী ৪ ইউপি চেয়ারম্যান

বাল্যবিবাহ । প্রতীকী ছবি
বাল্যবিবাহ । প্রতীকী ছবি

অপ্রাপ্তবয়স্ক দুই ছেলেমেয়ের বিয়ের আয়োজনে বরযাত্রী হয়ে গিয়েছিলেন চারটি ইউনিয়ন পরিষদের (ইউপি) চারজন চেয়ারম্যান। সরকারি গাড়ি ব্যবহার করে গতকাল বুধবার বিকেল পাঁচটায় কুষ্টিয়া সদর উপজেলার ওই বিয়েতে যান তাঁরা। গোপন তথ্যের ভিত্তিতে ভ্রাম্যমাণ আদালত অভিযান চালিয়ে সংশ্লিষ্ট ব্যক্তিদের কারা ও অর্থদণ্ডে দণ্ডিত করেন। 


কুষ্টিয়া সদর উপজেলার নির্বাহী কর্মকর্তা (ইউএনও) জুবায়ের হোসেন চৌধুরী ভ্রাম্যমাণ আদালতের অভিযান পরিচালনা করেন। বাল্যবিবাহ দেওয়ার দায়ে মেয়ের বাবা ও খালাতো ভাইকে চার দিন করে কারাদণ্ড দেন জুবায়ের হোসেন চৌধুরী। বাল্যবিবাহে সহযোগিতার দায়ে চার চেয়ারম্যানের কাছ থেকে ১০ হাজার টাকা করে জরিমানা আদায় করেন তিনি।

ভ্রাম্যমাণ আদালত সূত্র জানায়, মেয়েটি সদর উপজেলার স্থানীয় একটি বিদ্যালয়ের দশম শ্রেণির ছাত্রী। পার্শ্ববর্তী ঝিনাইদহের হরিণাকুণ্ডু উপজেলার অপ্রাপ্তবয়স্ক এক ছেলের সঙ্গে পালিয়ে যায় সে। অ্যাফিডেভিট করে বয়স বাড়িয়ে আদালতের মাধ্যমে বিয়ে করে তারা। পারিবারিকভাবে এ বিয়ে মেনে নিয়ে গতকাল বুধবার বিকেলে মেয়ের বাড়িতে আনুষ্ঠানিকভাবে বিয়ের আয়োজন করা হয়। বরসহ বরযাত্রীরা গতকাল বিকেলের মধ্যে মেয়ের বাড়িতে হাজির হন। বরের সঙ্গে হরিণাকুণ্ডু উপজেলার চারটি ইউপির চারজন চেয়ারম্যানও আসেন। তাঁরা একই উপজেলা পরিষদের চেয়ারম্যানের সরকারি গাড়িতে চড়ে আসেন।

বাল্যবিবাহের তথ্য পেয়ে গতকাল বিকেল পাঁচটার দিকে ইউএনও জুবায়ের হোসেন চৌধুরী মেয়ের বাড়িতে অভিযান চালান। এ সময় বরপক্ষের লোকজন খাওয়াদাওয়া করছিলেন। তাঁদের উপস্থিতি টের পেয়ে বরসহ কয়েকজন পালিয়ে যান।

নির্বাহী হাকিম জুবায়ের হোসেন চৌধুরী বলেন, মেয়ের বয়স ১৭ বছর নিশ্চিত হওয়া গেছে। ছেলের বয়সও কম বলে জানা গেছে। বিয়েসংক্রান্ত অ্যাফিডেভিট নিয়েও সন্দেহ রয়েছে। মেয়ের বাবা ও খালাতো ভাইকে চার দিন করে কারাদণ্ড দেওয়া হয়েছে। একই সঙ্গে বাল্যবিবাহে বরযাত্রী হয়ে আসা ও বিয়েতে সহযোগিতার দায়ে হরিণাকুণ্ডু উপজেলার ভায়না ইউপির চেয়ারম্যান ছমির উদ্দিন, খলিসা ইউপির চেয়ারম্যান ফজলুর রহমান, চাঁদপুর ইউপির চেয়ারম্যান গোলাম মোস্তফা ও দৌলতপুর ইউপির চেয়ারম্যান মোহাম্মদ আলীকে ১০ হাজার টাকা করে জরিমানা করা হয়।

অভিযান পরিচালনার সময় ইসলামী বিশ্ববিদ্যালয় থানার ভারপ্রাপ্ত কর্মকর্তা (ওসি) রতন শেখ, স্থানীয় ঝাউদিয়া ইউপির চেয়ারম্যান কেরামত আলীসহ প্রশাসনের কর্মকর্তারা উপস্থিত ছিলেন।