তিউনিসিয়া থেকে ফিরলেন ১৭ জন

প্রতীকী ছবি
প্রতীকী ছবি

তিন সপ্তাহ তিউনিসিয়া উপকূলে ভূমধ্যসাগরে ভেসে থাকা অবৈধ পথে অভিবাসনপ্রত্যাশী ৬৪ বাংলাদেশির মধ্যে ১৭ জন দেশে ফিরেছেন। শুক্রবার বিকেলে কাতার এয়ারওয়েজের একটি ফ্লাইটে তিউনিসিয়া থেকে ঢাকায় শাহজালাল আন্তর্জাতিক বিমানবন্দরে পৌঁছান তাঁরা। রাত নয়টায় এই প্রতিবেদন লেখা পর্যন্ত অভিবাসন (ইমিগ্রেশন) পুলিশের হেফাজতে রেখে তাঁদের জিজ্ঞাসাবাদ করা হচ্ছিল।

গত ৩১ মে তিউনিসিয়া উপকূলে ভূমধ্যসাগরে ৬৪ বাংলাদেশিসহ ৭৫ জনকে উদ্ধার করে একটি নৌকা। বাকিরা মরক্কো, সুদান ও মিসরের নাগরিক। কিন্তু তিউনিসিয়ার কর্তৃপক্ষ নৌকাটিকে তীরে ভেড়ার অনুমতি দিচ্ছিল না। নৌকাটি উপকূলীয় জারজিস শহর থেকে ২৫ কিলোমিটার দূরে সাগরে ভাসতে থাকে।

তিউনিসিয়ায় বাংলাদেশের দূতাবাস নেই। আটকে পড়া বাংলাদেশিরা দেশে ফিরে যাবেন, লিবিয়ার বাংলাদেশ দূতাবাসের পক্ষ থেকে তিউনিসিয়ার কর্তৃপক্ষকে এমন নিশ্চয়তা দেওয়ার পর ১৮ জুন সন্ধ্যায় তাঁদের জারজিস বন্দরে নামার অনুমতি দেওয়া হয়। পরে তাঁদের কঠোর নিরাপত্তাব্যবস্থায় তিউনিসে এনে রেড ক্রিসেন্ট ও আন্তর্জাতিক শরণার্থী সংস্থার (আইওএম) যৌথভাবে পরিচালিত আশ্রয়কেন্দ্রে রাখা হয়।

খোঁজ নিয়ে জানা গেছে, গতকাল দেশে ফেরা ১৭ জনের মধ্যে আটজন মাদারীপুরের। বাকি নয়জনের চারজন ব্রাহ্মণবাড়িয়ার। আর পাঁচজনের বাড়ি শরীয়তপুর, নোয়াখালী, চাঁদপুর, মৌলভীবাজার ও সুনামগঞ্জ জেলায়। এঁদের একজন মাদারীপুরের লাদেম মাতবর। তাঁর বাবা লুৎফর মাতবর মুঠোফোনে প্রথম আলোকে বলেন, ‘ছেলে কবে ফিরবে জানতাম না। তাই বিমানবন্দরে যেতে পারিনি। ৮ লাখ টাকা খরচ করে ছেলেকে বিদেশ পাঠাইছি। সাড়ে তিন লাখ টাকা ধার করে, আড়াই লাখ টাকায় জমি বেচে।’

লিবিয়ার বাংলাদেশ দূতাবাস বলছে, প্রথম দফায় ২০ জনকে টিকিট দিলেও তিনজন আসতে রাজি হননি। বাকি ১৭ জন গতকাল বিকেলে ঢাকায় আসেন। তিনজন দেশে আসতে রাজি না হওয়ার বিষয়টি নতুন দুশ্চিন্তার কারণ। কেননা ৬৪ জনের দেশে ফিরে যাওয়ার বিষয়ে তিউনিসিয়া কর্তৃপক্ষকে নিশ্চয়তা দেওয়া হয়েছে।

ভূমধ্যসাগর দিয়ে এভাবে বিদেশে যাওয়ার চেষ্টা বাংলাদেশের ভাবমূর্তিকে সংকটে ফেলছে বলে মনে করেন বেসরকারি সংস্থা ব্র্যাকের অভিবাসন কর্মসূচির প্রধান শরিফুল হাসান। তিনি বলেন, এ ধরনের মানব পাচার যেকোনো মূল্যে বন্ধ করতে হবে।