৭৯ শতাংশ ভোটকেন্দ্রই অতিগুরুত্বপূর্ণ চিহ্নিত

বগুড়া-৬ (সদর) আসনের নির্বাচনে প্রায় ৭৯ শতাংশ ভোটকেন্দ্রই ঝুঁকিপূর্ণ (পুলিশের ভাষায় অতি গুরুত্বপূর্ণ) বলে চিহ্নিত করেছে আইনশৃঙ্খলা রক্ষাকারী বাহিনী। জেলার বিশেষ শাখার (ডিএসবি) পুলিশের গোয়েন্দা প্রতিবেদনের ভিত্তিতে কেন্দ্রগুলো ঝুঁকিপূর্ণ চিহ্নিত করা হয়েছে বলে পুলিশের একটি সূত্র জানিয়েছে।

এসব ভোটকেন্দ্রে যেকোনো ধরনের গোলযোগ ও সহিংসতা এড়াতে তিন স্তরের নিরাপত্তাবলয় প্রস্তুত করার কথা জানিয়েছেন বগুড়ার পুলিশ সুপার মো. আলী আশরাফ ভূঞা।

জেলা পুলিশের বিশেষ শাখা সূত্রে জানা গেছে, ২৪ জুন বগুড়া-৬ (সদর) আসনের নির্বাচনে ১৪১টি কেন্দ্রে ইলেকট্রনিক ভোটিং মেশিনে (ইভিএম) ভোট গ্রহণ অনুষ্ঠিত হবে। এসব কেন্দ্রের মধ্যে ১১১টি কেন্দ্র ‘অতি গুরুত্বপূর্ণ’ বা ঝুঁকিপূর্ণ চিহ্নিত করা হয়েছে। প্রতিটি ভোটকেন্দ্রে পুলিশ, র‌্যাব, বিজিবিসহ (বর্ডার গার্ড বাংলাদেশ) আইনশৃঙ্খলা রক্ষাকারী বাহিনীর তিন স্তরের কঠোর নিরাপত্তাবলয় নিশ্চিত করা হবে। নির্বাচনী এলাকায় যেকোনো ধরনের গোলযোগ ঠেকাতে আইনশৃঙ্খলা রক্ষাকারী বাহিনীর সদস্যদের সঙ্গে কাজ করবেন নির্বাহী হাকিমেরা।

ডিএসবি সূত্রে জানা গেছে, বগুড়া সদর উপজেলার ১১টি ইউনিয়ন এবং ১টি পৌরসভার ২১টি ওয়ার্ড নিয়ে গঠিত বগুড়া-৬ আসন। ২৪ জুন অনুষ্ঠেয় এই আসনের নির্বাচনে নিরাপত্তা নিশ্চিত করার জন্য আইনশৃঙ্খলা রক্ষাকারী বাহিনীর প্রায় সাড়ে তিন হাজার সদস্য কাজ করবেন। এর মধ্যে প্রায় ১ হাজার পুলিশ, ৪০০ বিজিবি সদস্য, র‌্যাবের ৪৫০ সদস্য এবং ১ হাজার ৭০০ আনসার সদস্য রয়েছেন।

ডিএসবি সূত্র জানায়, বিগত নির্বাচনে প্রতিটি ভোটকেন্দ্রে আনসার সদস্যদের সঙ্গে একজন পুলিশ দায়িত্ব পালন করত। এবার ভোট গ্রহণের দিন ঝুঁকিপূর্ণ বা গুরুত্বপূর্ণ ১১১টি ভোটকেন্দ্রে কিন্তু এখন পরিদর্শক বা উপপরিদর্শক পদমর্যাদার একজন কর্মকর্তার নেতৃত্বে পাঁচজন পুলিশ মোতায়েন থাকবে। অন্য ৩০টি কেন্দ্রে পুলিশ মোতায়েন থাকবে চারজন করে। প্রতিটি কেন্দ্রে ১২ জন করে আনসার বাহিনীর সদস্যরা দায়িত্ব পালন করবেন। ভোট গ্রহণের আগেই মাঠে নামবেন ১৩ প্লাটুন বিজিবি সদস্য। প্রতিটি ইউনিয়নে এক প্লাটুন এবং বগুড়া শহরে দুই প্লাটুন বিজিবি মোতায়েন থাকবে। প্রতিটি প্লাটুনে বিজিবির সদস্য থাকবেন ২০ থেকে ৩০ জন। ভোট গ্রহণের দিন র‌্যাবের ১৫ প্লাটুন সদস্য আইনশৃঙ্খলা রক্ষার দায়িত্বে থাকবে। এর বাইরে ১০ সদস্যের ১৩টি স্ট্রাইকিং ফোর্স যেকোনো ধরনের পরিস্থিতি মোকাবিলার জন্য ভোটের দিন কেন্দ্র এলাকায় প্রস্তুত থাকবে। ২৫ জন নির্বাহী হাকিমের নেতৃত্বে সহিংসতা মোকাবিলার জন্য প্রস্তুত থাকবে ২৬টি ভ্রাম্যমাণ দল।

 বগুড়ার পুলিশ সুপার আলী আশরাফ ভূঞা গত বুধবার রাতে সার্কিট হাউস মিলনায়তনে এক বৈঠকে প্রার্থীদের আশ্বস্ত করে বলেন, অবাধ, সুষ্ঠু ও শান্তিপূর্ণ পরিবেশে ভোট গ্রহণের জন্য আইনশৃঙ্খলা রক্ষাকারী বাহিনী যা যা করা দরকার সবকিছু করবে। এ জন্য সব ধরনের প্রস্তুতি শেষ হয়েছে।

এই নির্বাচনে আওয়ামী লীগের টি জামান নিকেতা (নৌকা), বিএনপির গোলাম মোহাম্মদ সিরাজ (ধানের শীষ), জাতীয় পার্টির নুরুল ইসলাম ওমর (লাঙ্গল), মুসলিম লীগের রফিকুল ইসলাম (হারিকেন), বাংলাদেশের কংগ্রেসের মুনসুর রহমান (ডাব) ও মিনহাজ মণ্ডল (আপেল) প্রতিদ্বন্দ্বিতা করছেন।

 দুর্নীতির মামলায় বিএনপির চেয়ারপারসন খালেদা জিয়া কারাগারে থাকায় একাদশ জাতীয় সংসদ নির্বাচনে দলীয় মহাসচিব মির্জা ফখরুল ইসলাম আলমগীর ধানের শীষ প্রতীকে প্রতিদ্বন্দ্বিতা করে প্রায় দেড় লাখ ভোটের ব্যবধানে মহাজোটের প্রার্থী নুরুল ইসলামকে হারিয়ে বিজয়ী হন। মির্জা ফখরুল শপথ না নেওয়ায় আসনটি শূন্য ঘোষণা করেন জাতীয় সংসদের স্পিকার শিরীন শারমিন চৌধুরী। ঘোষিত তফসিল অনুযায়ী ২৪ জুন ইভিএমে ভোট গ্রহণ করা হবে। নির্বাচনে ৩ লাখ ৮৭ হাজার ৪৫৮ জন ভোটার ভোট দেবেন।