ছাত্রদলের বিক্ষুব্ধরা '৬ মাসের কমিটি' চান

ছাত্রদলের বিক্ষুব্ধ নেতা-কর্মীরা ছয় মাসের জন্য স্বল্পকালীন কমিটি অথবা নিয়মিত ছাত্রদের দিয়ে কমিটি গঠনের দাবি জানিয়েছেন। আজ শনিবার দুপুরে নয়াপল্টনে বিএনপির কেন্দ্রীয় কার্যালয়ের নিচে সংবাদ সম্মেলনে ছাত্রদলের সদ্য বিলুপ্ত কমিটির একাংশের নেতারা এ দাবি জানান।

৩ জুন রাতে ছাত্রদলের কেন্দ্রীয় কমিটি বিলুপ্ত করে গণমাধ্যমে বিজ্ঞপ্তি পাঠানো হয়। এতে আগামী ৪৫ দিনের মধ্যে নতুন কেন্দ্রীয় কমিটি গঠনের কথা বলা হয়। নতুন কমিটিতে নেতা হওয়ার যোগ্যতা হিসেবে ২০০০ সাল থেকে পরবর্তী যেকোনো বছরে এসএসসি/সমমানের পরীক্ষায় উত্তীর্ণ হতে হবে বলে জানানো হয়।

এ সিদ্ধান্তের প্রতিবাদে ১১ জুন বিএনপির কেন্দ্রীয় কার্যালয়ের ফটকে তালা ঝুলিয়ে দিয়ে বিক্ষোভ করে ছাত্রদলের বিলুপ্ত কমিটির একাংশ। বিলুপ্ত কমিটির নেতারা ছাত্রদলের নতুন কমিটিতে প্রার্থী হতে ২০০০ সাল পর্যন্ত এসএসসি বা সমমানের পরীক্ষায় উত্তীর্ণ হওয়ার যে বয়সসীমা নির্ধারণ করা হয়েছে, তা তুলে দেওয়ার দাবি করেন। কিন্তু বিএনপির নীতিনির্ধারকেরা ছাত্রদের দিয়েই কমিটি করতে চান। এরপর থেকে ছাত্রদলের একাংশ আন্দোলন করে আসছে।

ওই একাংশরই এক নেতা ও ছাত্রদলের সহসভাপতি এজমল হোসেন আজ সংবাদ সম্মেলনে বলেন, আমাদের দাবি ছয় মাসের জন্য একটি স্বল্পকালীন কমিটি গঠন করা হোক। অথবা নিয়মিত ছাত্রদের দিয়ে কমিটির গঠন করা হোক।

এজল হোসেন বলেন, ২০০০ সালের এসএসসির বাধ্যবাধকতা তুলে দিতে হবে। কারণ ২০০০ সালে এসএসসি পাস করা একজন ছাত্রের আনুমানিক বয়স ৩৫ বছর। তাঁর মাত্র দুই-তিন বছর আগে ৯৬-৯৭-৯৮ সালে এসএসসি পাস করা সদ্য বিলুপ্ত কমিটির সহসভাপতি ও যুগ্ম সম্পাদকেরা রয়েছেন। ৩৫ ও ৩৬ বছর বয়সে ছাত্রদল করা গেলে ৩৭ ও ৩৮ বছর বয়সে কেন করা যাবে না?

এজমাল হোসেন বলেন, এই বয়স নির্ধারণের সঙ্গে গভীর ষড়যন্ত্র রয়েছে। সবাইকে বাদ দিয়ে সিন্ডিকেটের ব্যক্তিকেন্দ্রিক বয়স নির্ধারণ ছাত্রদলের লাখ লাখ নেতা-কর্মী মোটেও মেনে নিতে পারছে না।

সংবাদ সম্মেলনে লিখিত বক্তব্যে বিলুপ্ত কমিটির সহসভাপতি ইকতিয়ার রহমান বলেন, দেশের কোনো ছাত্র সংগঠনের কেন্দ্রীয় কমিটি নিয়মিত ছাত্রদের দিয়ে গঠিত হয় না। এর মধ্যে ছাত্রদলের নেতৃত্বের বয়স অপরাপর ছাত্র সংগঠনের তুলনায় তুলনামূলকভাবে একটু বেশি। তিনি বলেন, দুই বছর মেয়াদি কমিটি পাঁচ বছর চললেও দল কর্ণপাত করত না।

ইকতিয়ার রহমান বলেন, দুই বছরের কমিটির মেয়াদ প্রায় পাঁচ বছর অতিবাহিত হওয়ায় আমরা ছয় মাসের জন্য একটি ধারাবাহিক কমিটির আবেদন তারেক রহমানের কাছে করেছিলাম। এতে দল তার কর্মীদের বর্তমান ও ভবিষ্যতে সঠিকভাবে মূল্যায়ন করার পাশাপাশি এখন দেশব্যাপী বেশ কিছু অসমাপ্ত সাংগঠনিক কাজ সম্পন্ন করার সুযোগ পাচ্ছে।

ঢাকা মহানগর দক্ষিণ ছাত্রদলের সভাপতি জহির উদ্দিন তুহিন বলেন, আমাদের দাবি পূরণের জন্য ধারাবাহিকভাবে শান্তিপূর্ণ আন্দোলন করে যাচ্ছি। আগামীকাল আমাদের কর্মসূচি স্থগিত থাকবে। এর মধ্যে দাবি পূরণ না হলে সোমবার থেকে আবার আমাদের অবস্থান কর্মসূচি অব্যাহত থাকবে।

আজকের সংবাদ সম্মেলনে ছাত্রদলের সদ্য বিলুপ্ত কমিটির সহসভাপতি আসাদুজ্জামান আসাদের সভাপতিত্বে কেন্দ্রীয় নেতাদের একাংশ উপস্থিত ছিলেন।