থানা থেকে পালিয়ে গেল অস্ত্র মামলার আসামি

প্রতীকী ছবি
প্রতীকী ছবি

লালমনিরহাট সদর থানা থেকে অস্ত্র মামলার এক আসামি পালিয়ে গেছে। গতকাল শুক্রবার রাত ৮টার দিকে এ ঘটনা ঘটে। পালিয়ে যাওয়া আসামির নাম মুরাদ হোসেন ওরফে আনন্দ (২২)। পুলিশের দাবি, থানার এক পুলিশ কর্মকর্তার অফিস কক্ষের টয়লেটের ভেন্টিলেটর ভেঙে মুরাদ পালিয়ে যায়।

মুরাদ হোসেন ওরফে আনন্দ লালমনিরহাট শহরের বালাটারী গ্রামের আদর্শ কলোনির বাসিন্দা মো. ইসলামের ছেলে। তিনি পেশায় রংমিস্ত্রি। পুলিশ সূত্রে জানা গেছে, গত বৃহস্পতিবার ভোরে শহরের বালাটারী গ্রামের আদর্শ কলোনি থেকে মুরাদ হোসেনকে ১টি বিদেশি পিস্তলসহ আটক করে সদর থানার পুলিশ। পরে মুরাদ হোসেনের দেওয়া স্বীকারোক্তি অনুযায়ী শহরের বাবু পাড়া এলাকা থেকে পারভেজ আক্তার টফি (৪১) ও শহিদুল ইসলামকে (২৩) আটক করা হয়। পারভেজ লালমনিরহাট বিভাগীয় রেলওয়ের ডিপিও সেকশন অফিসের উচ্চমান সহকারী ও লালমনিরহাট বিভাগীয় রেল শ্রমিক লীগের সাবেক যুগ্ম সম্পাদক। আর শহিদুল পেশায় রং মিস্ত্রি। এ ঘটনায় এসআই মাইনুল ইসলাম বাদী হয়ে শুক্রবার বিকেলে লালমনিরহাট সদর থানায় অস্ত্র আইনে তিনজনকে গ্রেপ্তার দেখিয়ে একটি মামলা দায়ের করেন।

লালমনিরহাট সদর থানার এসআই মাইনুল ইসলাম প্রথম আলোকে বলেন, গতকাল শুক্রবার রাত আটটার দিকে ওসি তদন্তের অফিস কক্ষে মুরাদ হোসেনকে জিজ্ঞাসাবাদ চলছিল। একপর্যায়ে মুরাদ কক্ষ সংলগ্ন টয়লেটে যায়। চার/পাঁচ মিনিট পরও আসামির কোনো সাড়া-শব্দ না পেয়ে টয়লেটের দরজা ভাঙা হয়। পরে দেখা যায়, টয়লেটের ভেন্টিলেটর ভেঙে মুরাদ পালিয়ে গেছে।

সদর থানার পরিদর্শক (তদন্ত) এরশাদুল আলম সাংবাদিকদের বলেন, ‘আমি ওই সময়ে অফিস কক্ষে ছিলাম না। আসামি মুরাদ হোসেন পেটের পীড়ায় ভুগছে, এমন কথা বলে অফিসের টয়লেটে যায়। পরে টয়লেটের ভেন্টিলেটর ভেঙে পালিয়ে যায়। তাঁকে গ্রেপ্তারের চেষ্টা চলছে। এ ব্যাপারে ডিউটি অফিসার আনোয়ার বাদী হয়ে একটি মামলা করেছেন।’

মামলার এজাহারে জানা যায়, প্রায় বছর দেড়েক আগে রেল কর্মকর্তা পারভেজের বাসায় রঙের কাজ করেছিল মুরাদ হোসেন ও শহীদুল ইসলাম। এ সময় পারভেজের বাড়িতে থাকা অবৈধ অস্ত্রটি চুরি করেন তাঁরা।

মুরাদ হোসেনের বাবা মো. ইসলাম বলেন, ‘শহিদুল ইসলাম গত রোজার ঈদের আগে ঢাকা থেকে লালমনিরহাটে এসে আমার ছেলের কাছে থাকা অস্ত্রটির বিষয়ে জানতে চায়। এ নিয়ে তাঁদের মধ্যে ঝগড়া হয়। আসলে আমার স্ত্রী অস্ত্রটি দেখতে পেয়ে ছেলের অজান্তে বাড়ির ভেতরেই তা মাটিতে পুতে রেখেছিল। আমার স্ত্রীই পুলিশকে খবর দিয়েছে। এখন আমার ছেলে থানা থেকে কীভাবে হারাল, সেটা আমার মাথায় ঢুকে না। আমি আমার ছেলেকে সুস্থ অবস্থায় দেখতে চাই।’

লালমনিরহাট সদর থানার ভারপ্রাপ্ত কর্মকর্তা (ওসি) মাহফুজ আলম একটি বিদেশি পিস্তল উদ্বারের কথা স্বীকার করে বলেন, এ ঘটনায় পারভেজ আক্তার, মুরাদ হোসেন ও শহিদুল ইসলাম নামের তিনজনকে আটক করা হয়। তাদের মামলায় গ্রেপ্তার দেখানো হয়। তিনি বলেন, উদ্ধার অস্ত্রটি চীনের তৈরি সেভেন পয়েন্ট টু সিক্স বোরের একটি পিস্তল। এর বাইরে আর কিছু বলতে রাজি হননি তিনি।