স্কুলছাত্র হত্যায় পুলিশ কনস্টেবলের স্বীকারোক্তি

টাঙ্গাইলের স্কুলছাত্র সজীব মিয়াকে হত্যায় স্বীকারোক্তিমূলক জবানবন্দি দিয়েছেন পুলিশের এক কনস্টেবল ও নিহত সজীবের বন্ধু। শুক্রবার আদালতে তারা এ জবানবন্দি দেন। তাঁরা জানিয়েছেন, এ হত্যাকাণ্ডে তাঁদের প্ররোচনা দিয়েছেন নিহতের দূর সম্পর্কের চাচা মো. মনিরুজ্জামান। 


স্বীকারোক্তিমূলক জবানবন্দি দেওয়া ব্যক্তিরা হলেন, পুলিশের কনস্টেবল মোশারফ হোসেন ওরফে হৃদয় ও নিহত সজিব মিয়ার বন্ধু মো. সজীব। গ্রেপ্তার অপর ব্যক্তি মনিরুজ্জামানকে শনিবার কারাগারে পাঠানো হয়েছে।

আদালত সূত্রে জানা গেছে, জবানবন্দিতে মোশারফ ও সজীব বলেছেন, সজিবকে প্রথমে কোমল পানীয়র সঙ্গে অচেতন করার বড়ি খাওয়ানো হয়। এরপর গলায় রশি পেঁচিয়ে শ্বাসরোধ করে হত্যা করা হয়। এ হত্যাকাণ্ডে তাঁদের প্ররোচনা দিয়েছেন সজিব মিয়ার দুর সম্পর্কের চাচা মো. মনিরুজ্জামান।

ঘটনার পরে গ্রেপ্তার মোশারফ ও সজিবকে শুক্রবার টাঙ্গাইল বিচারিক হাকিম আদালতে হাজির করা হয়। আদালতের জ্যেষ্ঠ বিচারিক হাকিম সুমন কর্মকার তাঁদের স্বীকারোক্তিমূলক জবানবন্দি লিপিবদ্ধ করার পর কারাগারে পাঠান।

ওই দুজনের তথ্যের ভিত্তিতে পুলিশ মনিরুজ্জামানকেও গ্রেপ্তার করেছে। তিনি টাঙ্গাইল সদর উপজেলার কোনাবাড়ী গ্রামের সেকান্দার আলীর ছেলে। নিহত সজীব মিয়ার ব্যবহৃত মোটরসাইকেলটি পুলিশ কনস্টেবল মোশারফ হোসেনের শ্বশুরবাড়ি রংপুরের গঙ্গাচরা থেকে জব্দ করা হয়।

পুলিশ সূত্রে জানা গেছে, মনিরুজ্জামান সঙ্গে সজীবদের জমি সংক্রান্ত বিরোধ আছে। এই বিরোধের জেরে এই হত্যাকাণ্ড হয়েছে। নিহত সজীব স্থানীয় একটি স্কুলের নবম শ্রেণীর শিক্ষার্থী ছিল।

পুলিশ সূত্র জানায়, কনস্টেবল মোশারফ এসএএফ শাখার বঙ্গবন্ধু সেতু কেপিআই ক্যাম্পে কর্মতর ছিলেন। তিনি কিশোরগঞ্জের নিকলী উপজেলার চেতরা গ্রামের বাসিন্দা। অপর আসামি মো. সজিব ভূঞাপুর উপজেলার পলশিয়া গ্রামের বাসিন্দা।

পুলিশ জানায়, কালিহাতী উপজেলার হাতিয়া উত্তরপাড়া রাস্তার পাশের জঙ্গল থেকে গত ১৬ জুন বিকেলে ১৭ বা ১৮ বছরের এক তরুণের লাশ উদ্ধার করা হয়। ওই দিনই টাঙ্গাইল সদর উপজেলার কোনাবাড়ী গ্রামের সামাদ মিয়ার স্ত্রী জাহানারা বেগম লাশটি তাঁর ছেলের বলে শনাক্ত করেন। পরদিন জাহানারা বাদী হয়ে অজ্ঞাত ব্যক্তিদের আসামি করে কালিহাতী থানায় মামলা করেন। পুলিশ প্রযুক্তির ব্যবহার করে এই ঘটনার সঙ্গে কনস্টেবল মোশারফ ও মো. সজীবের সম্পৃক্ততা সম্পর্কে নিশ্চিত হয়। তাঁদের দুজনকে গত বৃহস্পতিবার বঙ্গবন্ধু সেতু এলাকা থেকে গ্রেপ্তার করা হয়।