গরম পানিতে আম শোধনযন্ত্র উদ্ভাবন

বারি উদ্ভাবিত ‘হট ওয়াটার ট্রিটমেন্ট’ যন্ত্র।
বারি উদ্ভাবিত ‘হট ওয়াটার ট্রিটমেন্ট’ যন্ত্র।

গরম পানিতে আম শোধন করলে আমের সংরক্ষণক্ষমতা যেমন বাড়বে, তেমনি আমের মধ্যে থাকা দূষিত পদার্থ এবং রোগবালাইও দূর হবে। বাংলাদেশ কৃষি গবেষণা ইনস্টিটিউট (বারি) গরম পানিতে আম শোধনের (হট ওয়াটার ট্রিটমেন্ট) এমন যন্ত্র উদ্ভাবন করেছে।

বিদ্যুচ্চালিত এই যন্ত্রে ৫৫ ডিগ্রি সেন্টিগ্রেড তাপমাত্রার পানির ভেতরে পাঁচ মিনিট আম রাখলে তা পরিশোধিত হয়। আঞ্চলিক উদ্যানতত্ত্ব গবেষণা কেন্দ্রে (আম গবেষণা কেন্দ্র) গতকাল দিনব্যাপী আমচাষিদের নিয়ে বৈজ্ঞানিক উপায়ে আম সংগ্রহ, গরম পানিতে আম শোধন ও সংগ্রহোত্তর ব্যবস্থাপনা বিষয়ে একটি প্রশিক্ষণ অনুষ্ঠানে এ যন্ত্রে আম শোধনপ্রক্রিয়া দেখানো হয়।

অনুষ্ঠানের প্রধান অতিথি কৃষি মন্ত্রণালয়ের অতিরিক্ত সচিব (গবেষণা) কমলারঞ্জন দাশ নিজে একজন কৃষিবিদ। তিনি অনুষ্ঠানে প্রধান অতিথির বক্তব্য দিতে গিয়ে বলেন, ‘আমাদের দেশে গাছ থেকে আম পাড়ার পদ্ধতি অবৈজ্ঞানিক। আম পাড়ার পর আমের বোঁটা থেকে নির্গত রসে ম্যালিক অ্যাসিড থাকে। এই অ্যাসিড আমের পচন ত্বরান্বিত করে। এ রোগকে বোঁটা পচা রোগ বা অ্যানথ্রাক নোজ বলে। এ ছাড়া আমে মাছি পোকার (ফ্রুটফ্লাই) আক্রমণ হয়ে থাকলে ওই পোকার ডিমও সেখানে থাকতে পারে। সেই ডিম কয়েক দিনের ব্যবধানে পোকায় পরিণত হয়। গরম পানিতে শোধন করলে সেই ডিমও নষ্ট হয়ে যায়। আমের সংরক্ষণক্ষমতাও বাড়ে।

আম শোধনের ওই যন্ত্রটি সম্পর্কে ব্যাখ্যা দিতে গিয়ে গবেষণা কেন্দ্রের প্রধান বৈজ্ঞানিক কর্মকর্তা জমির উদ্দিন বলেন, বারির প্রকৌশল বিভাগ বহু আগে যন্ত্রটি উদ্ভাবন করলেও তখন যন্ত্রটি ছিল অনেক বড়। পরিবহনে সমস্যা ছিল। এখনকার যন্ত্রটি আকারে ছোট ও সহজে পরিবহনযোগ্য। বিদ্যুচ্চালিত এ যন্ত্রের এক প্রান্তে গরম পানির মধ্যে প্লাস্টিকের আমভর্তি ঝুড়ি চুবিয়ে দেওয়া হয়। এটি অন্য প্রান্তে যেতে পাঁচ মিনিট সময় লাগে। এ যন্ত্রের মধ্যে তাপমাত্রা ৫৫ ডিগ্রি সেন্টিগ্রেডে থাকে। একের পর এক ঝুড়ি চুবিয়ে দেওয়া পর অন্য প্রান্ত থেকে উঠিয়ে নিয়ে আমগুলো থেকে পানি ঝরিয়ে শুকিয়ে নেওয়া হয়।