গৃহায়ণ ও গণপূর্তমন্ত্রী শ ম রেজাউল করিম বলেছেন, ‘আসুন সবাই শুদ্ধ হই, সেবাধর্মী হই, দীর্ঘসূত্রতা পরিহার করি এবং জনবান্ধব প্রতিষ্ঠানে পরিণত হই। কোনো সেবাপ্রার্থীকে যেন মন্ত্রণালয় থেকে কোনো অজুহাতে ফিরিয়ে দেওয়া না হয়। আমাদের প্রত্যেককে মনে রাখতে হবে, আমিসহ আমরা সকলে প্রজাতন্ত্রের কর্মচারী।’
আজ রোববার সচিবালয়ে গৃহায়ণ ও গণপূর্ত মন্ত্রণালয়ের সম্মেলনকক্ষে গৃহায়ণ ও গণপূর্ত মন্ত্রণালয় ও আওতাধীন দপ্তর-সংস্থার বার্ষিক কর্মসম্পাদন চুক্তি ২০১৯-২০ অনুষ্ঠান এবং মন্ত্রণালয়ের শুদ্ধাচার পুরস্কার ২০১৭-১৮ এর সনদ বিতরণ অনুষ্ঠানে প্রধান অতিথির বক্তব্যে কর্মকর্তা-কর্মচারীদের উদ্দেশে গৃহায়ণমন্ত্রী শ ম রেজাউল করিম এ আহ্বান জানান।
মন্ত্রী বলেন, ‘রাজউক, গৃহায়ণ কর্তৃপক্ষ, চট্টগ্রাম উন্নয়ন কর্তৃপক্ষসহ মন্ত্রণালয়ের সব দপ্তর-সংস্থাকে জনবান্ধব করতে চাই। সকল বিভাগে পরিচ্ছন্নতা ফিরিয়ে আনতে চাই। একজন মানুষও যেন আমাদের মন্ত্রণালয় ও দপ্তর-সংস্থায় সেবা নিতে এসে টাকার কারণে আটকে না থাকে, ঠুনকো অজুহাতে যেন সেবা থেকে বঞ্চিত না হয়।’
মন্ত্রী বলেন, ‘২৩ জুন বাঙালি জাতির ইতিহাসে, বাংলাদেশের ইতিহাসে অত্যন্ত গুরুত্বপূর্ণ দিন। ২৩ জুন আমাদের ঐতিহ্যের উত্তরাধিকারকে ফিরিয়ে আনার জন্য বাংলাদেশ আওয়ামী লীগ প্রতিষ্ঠিত হয়েছিল। বাংলাদেশের যা কিছু বড় বড় অর্জন, তা কিন্তু আওয়ামী লীগের নেতৃত্বে বাঙালি জাতির ইতিহাসে অবিসংবাদিত নেতা, কালজয়ী মহাপুরুষ, স্বাধীন বাংলাদেশের স্থপতি, জাতির জনক বঙ্গবন্ধু শেখ মুজিবুর রহমানের নেতৃত্বে হয়েছে।’
মন্ত্রণালয় ও আওতাধীন দপ্তর-সংস্থার কর্মকর্তা-কর্মচারীদের উদ্দেশে গণপূর্তমন্ত্রী শ ম রেজাউল করিম বলেন, ‘অর্থনীতিতে সমৃদ্ধ, মানুষের আশা-আকাঙ্ক্ষার প্রতিফলন ঘটা, মুক্তিযুদ্ধের চেতনার অসাম্প্রদায়িক বাংলাদেশ, যেখানে থাকবে না ঘুষ-দুর্নীতি, ক্ষুধা, দারিদ্র্য ও বৈষম্য, বাংলাদেশকে সে জায়গায় নিয়ে যাওয়ার জন্য প্রধানমন্ত্রী শেখ হাসিনা অবিরাম পরিশ্রম করে চলেছেন। আমরা প্রধানমন্ত্রী শেখ হাসিনার দলের সদস্য। আমাদের প্রত্যেককে মনে রাখতে হবে, আমিসহ আমরা সকলে প্রজাতন্ত্রের কর্মচারী। সংবিধানের অনুচ্ছেদ ৭ অনুযায়ী প্রজাতন্ত্রের মালিক এ দেশের সাধারণ মানুষ। সাধারণ মানুষদের কর্মচারী আমরা। আমরা প্রজাতন্ত্রের কর্মচারী। যাঁদের করের টাকায় আপনাদের বেতন ও আমার সম্মানী দেওয়া হয়, যাঁদের কল্যাণের জন্য এই রাষ্ট্রব্যবস্থা, তাঁদের জন্য আমরা একটি দলে কাজ করছি। এটা অবশ্যই মনে রাখতে হবে।’
শ ম রেজাউল করিম বলেন, ‘আমাদের আত্মশুদ্ধির প্রয়োজন। অতীতের গ্লানি, অনিয়ম, দুর্নীতি, অনৈতিকতাকে পরিহার করে আমাদের শুদ্ধ হতে হবে। আমরা আশা করছি শুদ্ধাচার পুরস্কারে প্রত্যেকেই উৎসাহিত হবেন।’
এর আগে গৃহায়ণ ও গণপূর্ত মন্ত্রণালয়ের সচিব মো. শহীদ উল্লা খন্দকারে সঙ্গে মন্ত্রণালয়ের আওতাধীন ১২টি দপ্তর/সংস্থা (গণপূর্ত অধিদপ্তর, জাতীয় গৃহায়ণ কর্তৃপক্ষ, রাজধানী উন্নয়ন কর্তৃপক্ষ, চট্টগ্রাম উন্নয়ন কর্তৃপক্ষ, রাজশাহী উন্নয়ন কর্তৃপক্ষ, খুলনা উন্নয়ন কর্তৃপক্ষ, কক্সবাজার উন্নয়ন কর্তৃপক্ষ, স্থাপত্য অধিদপ্তর, নগর উন্নয়ন অধিদপ্তর, হাউজিং অ্যান্ড বিল্ডিং রিসার্চ ইনস্টিটিউট, সরকারি আবাসন পরিদপ্তর ও অভ্যন্তরীণ নিরীক্ষা পরিদপ্তর) প্রধানেরা বার্ষিক কর্মসম্পাদন চুক্তি ২০১৯-২০ সম্পন্ন করেন।
অনুষ্ঠানের শেষে গৃহায়ণ ও গণপূর্ত মন্ত্রণালয়ের অতিরিক্ত সচিব মো. আখতার হোসেন, হাউজিং অ্যান্ড বিল্ডিং রিসার্চ ইনস্টিটিউটের মহাপরিচালক মোহাম্মদ শামীম আখতার এবং গৃহায়ণ ও গণপূর্ত মন্ত্রণালয়ের প্রশাসনিক কর্মকর্তা মো. সাইফুর রহমানকে মন্ত্রণালয়ের শুদ্ধাচার পুরস্কার ২০১৭-২০১৮ তুলে দেন মন্ত্রী।