ফেসবুক লাইভে মাদক সেবনের স্বীকারোক্তি

পুলিশের হাতে আটক হয়ে ফেসবুক লাইভে মাদক সেবনের স্বীকারোক্তি ও ভবিষ্যতে মাদক না নেওয়ার শপথ করেন। হাকিমপুর, দিনাজপুর, ২৩ জুন। ছবি: এস এম আলমগীর
পুলিশের হাতে আটক হয়ে ফেসবুক লাইভে মাদক সেবনের স্বীকারোক্তি ও ভবিষ্যতে মাদক না নেওয়ার শপথ করেন। হাকিমপুর, দিনাজপুর, ২৩ জুন। ছবি: এস এম আলমগীর

‘আমি সামছু মিয়া। দীর্ঘদিন ধরে দিনাজপুরের হিলিতে এসে বিভিন্ন ধরনের মাদক সেবন করি। আজ হিলির সাতকুড়িতে মাদক সেবন করতে এসে এলাকাবাসী ও পুলিশের কাছে ধরা পড়ি। মাদক সেবন অপরাধ ও ক্ষতিকর। আর কখনো মাদক গ্রহণ করব না। আপনারা কেউ কখনো মাদক গ্রহণ করবেন না।’ 

সামছু গতকাল রোববার নিজের ফেসবুক লাইভে এসব কথা বলছিলেন। পুলিশ জানায়, রোববার রাতে হিলিতে মাদক সেবন করতে এসে পুলিশের হাতে ধরা পড়েন ১১ জন। তাঁরা সবাই ফেসবুক লাইভে এসে এভাবে মাদক সেবনের স্বীকারোক্তি দেন। সেই সঙ্গে ভবিষ্যতে মাদক গ্রহণ না করার শপথ নেন।

পুলিশ সূত্র জানায়, আটক ব্যক্তিরা হলেন মাসুদ বিল্লাহ, তুহিন, আবদুল্লাহ, আবদুর রহমান, আবদুল খালেক, রায়হান কবির, সামছু মিয়া, রহমান সরকার, ফরিদ মিয়া, স্বপন তালুকদার এবং রফিকুল। এঁরা সবাই গাইবান্ধা জেলার বিভিন্ন উপজেলার বাসিন্দা। এরা কেউ শিক্ষক, কেউ ব্যবসায়ী, কেউ ছাত্র, কেউ সাংবাদিক বলে নিজেদের পরিচয় দেন।

হাকিমপুর সার্কেলের সহকারী পুলিশ সুপার (এএসপি) মো. আখিউল ইসলাম প্রথম আলোকে জানান, মাদক একটি সামাজিক সমস্যা। সামাজিকভাবে দমন করা না গেলে কখনোই মাদক দমন সম্ভব নয়। অনেক মাদকসেবীর পরিবার, প্রতিবেশী, সহকর্মী জানেন না যে তাঁদের খুব কাছের লোকটি মাদকসেবী। ফলে ওই মাদকসেবীকে ঘৃণা বা প্রতিরোধে ব্যবস্থা নিতে পারেন না। ফেসবুক লাইভে এসে মাদকসেবীদের প্রতিজ্ঞা একটি সামাজিক প্রতিরোধ হিসেবে কাজ করবে। তিনি বলেন, হিলি সীমান্তবর্তী শহর হওয়ায় বিভিন্ন এলাকা থেকে মাদকসেবীরা সেখানে আসেন। আটক মাদকসেবীদের ফেসবুক লাইভে স্বীকারোক্তি হিলিতে মাদকসেবীদের আনাগোনা কমাবে।

হাকিমপুর থানার ভারপ্রাপ্ত কর্মকর্তা (ওসি) আনোয়ার হোসেন জানান, এই ১১ জনের বিরুদ্ধে মাদক নিয়ন্ত্রণ আইনে মামলা করে সোমবার আদালতে নেওয়া হয়। আদালত তাঁদের জামিনের নির্দেশ দিয়েছেন।