আ.লীগকে কেউ ধ্বংস করতে পারবে না: প্রধানমন্ত্রী

আওয়ামী লীগের ৭০তম প্রতিষ্ঠাবার্ষিকী উপলক্ষে আয়োজিত আলোচনা সভায় বক্তব্য রাখছেন প্রধানমন্ত্রী শেখ হাসিনা। বঙ্গবন্ধু আন্তর্জাতিক সম্মেলন কেন্দ্র, ঢাকা, ২৪ জুন। ছবি: বাসস
আওয়ামী লীগের ৭০তম প্রতিষ্ঠাবার্ষিকী উপলক্ষে আয়োজিত আলোচনা সভায় বক্তব্য রাখছেন প্রধানমন্ত্রী শেখ হাসিনা। বঙ্গবন্ধু আন্তর্জাতিক সম্মেলন কেন্দ্র, ঢাকা, ২৪ জুন। ছবি: বাসস

প্রধানমন্ত্রী শেখ হাসিনা বাংলাদেশ আওয়ামী লীগকে এই উপমহাদেশের একটি প্রাচীন এবং সুসংগঠিত রাজনৈতিক দল হিসেবে আখ্যায়িত করে বলেছেন, একে কেউ ধ্বংস করতে পারবে না।

আজ সোমবার বিকেলে রাজধানীর বঙ্গবন্ধু আন্তর্জাতিক সম্মেলন কেন্দ্রে আওয়ামী লীগের ৭০তম প্রতিষ্ঠাবার্ষিকী উপলক্ষে আয়োজিত আলোচনা সভায় সভাপতির ভাষণে এ কথা বলেন প্রধানমন্ত্রী।

দেশের জন্য ত্যাগের মানসিকতা নিয়ে আওয়ামী লীগের নেতা-কর্মীদের কাজ করে যাওয়ার আহ্বান জানিয়ে প্রধানমন্ত্রী বলেন, ‘আওয়ামী লীগের নেতা-কর্মীদেরও এটাই মনে রাখতে হবে যে, আমাদের পূর্বসূরিরা যেভাবে আত্মত্যাগ করে গেছেন, ঠিক প্রত্যেক নেতা-কর্মীকে জাতির পিতার আদর্শ নিয়ে চলতে হবে।’ তিনি শৈশবের নৈতিক শিক্ষা ‘সিম্পল লিভিং হাই থিংকিং’ এর প্রসঙ্গ উল্লেখ করে বলেন, ‘সাধারণ জীবনযাপনের মধ্য দিয়েই, ত্যাগের মধ্য দিয়েই অর্জন করা যায়। কারণ বঙ্গবন্ধু বলে গেছেন মহৎ অর্জনের জন্য মহান ত্যাগের প্রয়োজন।’

প্রধানমন্ত্রী বলেন, ‘আওয়ামী লীগ এই উপমহাদেশের রাজনৈতিক দলগুলোর মধ্যে একটি প্রাচীন সুসংগঠিত দল, শত আঘাতেও এই দলকে ছিন্নভিন্ন করতে পারেনি। ভবিষ্যতেও পারবে না, ইনশা আল্লাহ। আওয়ামী লীগের শিকড় বাংলার মাটির সঙ্গে এমনভাবে প্রোথিত, শত চেষ্টা করেও একে কেউ উপড়ে ফেলতে পারেনি। আর পারবেও না।’

প্রধানমন্ত্রী বলেন, তিনি এবং তাঁর সরকার বঙ্গবন্ধুর নীতি মেনে চলার কারণেই বাংলাদেশ আজকে উন্নয়নের উচ্চ শিখরে এগিয়ে যাচ্ছে। প্রবৃদ্ধি ৮ দশমিক ১৩ ভাগে এবং মাথাপিছু আয় ১ হাজার ৯০৯ ডলারে উন্নীত করেছে তাঁর সরকার এবং একে আরও এগিয়ে নিয়ে যাওয়াই সরকারের লক্ষ্য, উল্লেখ করে তিনি বলেন, যখন বাংলাদেশের মানুষের কোনো অর্জন হয়, তখন তাঁর মৃত বাবার আত্মা শান্তি পায় বলেও নিজস্ব অনুভূতি ব্যক্ত করেন বঙ্গবন্ধুর কন্যা।

শেখ হাসিনা বলেন, ‘বাংলাদেশের একটি মানুষও যদি কষ্ট পায়, আমি জানি আমার বাবার আত্মা কষ্ট পাবে। কাজেই আমাদের এমনভাবে কাজ করতে হবে যাতে করে এ দেশের প্রতিটা মানুষের ভাগ্যের পরিবর্তন হয়।’ তিনি এ সময় ভোট দিয়ে তাঁর সরকারকে নির্বাচিত করায় দেশের উন্নয়নের গতিধারাটা অব্যাহত রাখতে পেরেছেন উল্লেখ করে দেশবাসীর প্রতি কৃতজ্ঞতা জানান। তিনি বলেন, ‘কৃতজ্ঞতা জানাই যাঁরা আওয়ামী লীগের প্রতি বিশ্বাস রেখেছেন, ভোট দিয়েছেন, নির্বাচিত করেছেন, বারবার নির্বাচিত করে তাঁদের সেবা করার সুযোগ আমাদের দিয়েছেন। সরকারের ধারাবাহিকতা আছে বলেই এই উন্নয়ন আজকে আমরা করতে পেরেছি।’

প্রধানমন্ত্রী এ সময় কোনোভাবেই কোনো প্রকার আত্ম-অহংকারকে মনের মধ্যে ঠাঁই না দেওয়ার জন্য দলের অগণিত নেতা-কর্মীর প্রতি পরামর্শ দিয়ে বলেন, ‘আমরা অহমিকা করব না, মাটির সঙ্গে মিশে চলব। মানুষের সঙ্গে মিশে চলব। কিন্তু দেশের মানুষের যেন কল্যাণ হয় এবং বাংলাদেশের মানুষ যেন আন্তর্জাতিকভাবে মর্যাদা নিয়ে সম্মানের সঙ্গে চলতে পারে, দেশকে আমরা সেইভাবে গড়ে তুলব।’ তিনি বলেন, আওয়ামী লীগের ৭০ বছরে যে সংগ্রামের ইতিহাস এবং যে অর্জন, সেই অর্জনের ইতিহাসে আওয়ামী লীগ আজ উজ্জ্বল।

দলের সাধারণ সম্পাদক এবং সড়ক পরিবহন ও সেতুমন্ত্রী ওবায়দুল কাদের সভায় প্রারম্ভিক বক্তব্য দেন। আওয়ামী লীগের উপদেষ্টামণ্ডলীর সদস্য আমির হোসেন আমু এবং তোফায়েল আহমেদ, সভাপতিমণ্ডলীর সদস্য মতিয়া চৌধুরী, শেখ ফজলুল করিম সেলিম এবং মোহাম্মদ নাসিম, দলের যুগ্ম সম্পাদক আবদুর রহমান ও জাহাঙ্গীর কবির নানক, ঢাকা মহানগর উত্তর এবং দক্ষিণ আওয়ামী লীগের সভাপতি সাংসদ এ কে এম রহমতউল্লাহ এবং আবুল হাসানাত প্রমুখ সভায় বক্তব্য দেন।

আওয়ামী লীগের প্রচার ও প্রকাশনা সম্পাদক এবং তথ্যমন্ত্রী হাছান মাহমুদ এবং উপ-প্রচার সম্পাদক আমিনুল ইসলাম সভা পরিচালনা করেন। এ সময় দলের সভাপতিমণ্ডলীর জ্যেষ্ঠ সদস্য সৈয়দা সাজেদা চৌধুরীসহ দলের জ্যেষ্ঠ নেতৃবৃন্দ মঞ্চে উপস্থিত ছিলেন।