বান্দরবানের জেএসএস কর্মীকে হত্যা

বান্দরবানের রোয়াংছড়ি উপজেলায় অস্ত্রের মুখে বাড়ি থেকে তুলে নিয়ে এক ব্যক্তিকে গুলি করে হত্যা করেছে দুষ্কৃতকারীরা। গতকাল সোমবার রাতে এ হত্যার ঘটনা ঘটে।

নিহত অংসিংচিং মারমা (৩৭) পার্বত্য চট্টগ্রামের আঞ্চলিক সংগঠন জনসংহতি সমিতির (জেএসএস) কর্মী বলে জানিয়েছেন স্থানীয় লোকজন।

স্থানীয় লোকজনের তথ্যমতে, মগ পার্টির সদস্যরা এ হত্যাকাণ্ড ঘটিয়ে থাকতে পারে। জেএসএস অভিযোগ, মগ পার্টি একটি সশস্ত্র সংগঠন। আরাকান লিবারেশন আর্মি নামের একটি সশস্ত্র সংগঠনের কিছু দলছুট সদস্য এবং স্থানীয় কিছু বিপথগামী যুবক মিলে এই সংগঠন গড়ে তুলেছে। আওয়ামী লীগের স্থানীয় কিছু নেতার ছত্রচ্ছায়ায় এই সংগঠন কাজ করছে বলে দলটির অভিযোগ। যদিও আওয়ামী লীগ এ অভিযোগ বরাবরই অস্বীকার করে আসছে। আবার আইনশৃঙ্খলা রক্ষাকারী বাহিনীও এর কোনো অস্তিত্ব স্বীকার করে না।

পুলিশ ও এলাকাবাসী জানিয়েছেন, রোয়াংছড়ি উপজেলা সদর থেকে পাঁচ কিলোমিটার দূরে থোয়াইঅংগ্যপাড়ায় দিবাগত রাত একটার দিকে একদল দুষ্কৃতকারী আসে। তারা জেএসএসের সমর্থক অংসিংচিং মারমাকে খোঁজ করতে থাকে। পরে বাড়িতে গিয়ে তাঁকে ঘুম থেকে তুলে অস্ত্রের মুখে ধরে নিয়ে যায়।

রোয়াংছড়ি সদর ইউনিয়ন পরিষদের (ইউপি) চেয়ারম্যান চহ্লামং মারমা বলেছেন, পাড়া থেকে পৌনে এক কিলোমিটার দূরে নিয়ে যাওয়ার সন্ত্রাসীরা অংসিংচিং মারমাকে গুলি করে হত্যা করে। পুলিশসহ স্থানীয় লোকজন সেখানে গিয়ে অংসিংচিংয়ের লাশ উদ্ধার করে। চহ্লামং বলেছেন, অংসিংচিং আগে জেএসএস করলেও পরে নিষ্ক্রিয় ছিলেন।

রোয়াংছড়ি থানার ভারপ্রাপ্ত কর্মকর্তা (ওসি) শরীফুল ইসলাম বলেন, ঘটনাস্থল থোয়াইঅংগ্যপাড়ার কিছু দূর থেকে আজ সকাল সাড়ে নয়টার দিকে অংসিংচিং মারমার গুলিবিদ্ধ লাশ উদ্ধার করা হয়। স্থানী লোকজন জানান, আগে তিনি জেএসএস করতেন। তবে বর্তমানে কোনো দল করেন না। তাঁকে কেন এবং কারা হত্যা করেছে, তদন্তে জানা যাবে।

বান্দরবানে গত মাসেই আওয়ামী লীগ ও জনসংহতি সমিতির একাধিক নেতা-কর্মী অপহরণ ও হত্যার ঘটনা ঘটেছে। ৭ মে বান্দরবান সদর উপজেলার রাজবিলা ইউনিয়নের তাইংখালী এলাকায় বিনয় তঞ্চঙ্গ্যাকে গুলি করে হত্যা ও ফোলাধন তঞ্চঙ্গ্যাকে অপহরণ করা হয়। এর দুই দিন পর ৯ মে একই উপজেলার কুহালং ইউনিয়নের ৩ নম্বর রাবারবাগানে জয়মনি তঞ্চঙ্গ্যাকে গুলি করে হত্যা করা হয়। তাঁরা সবাই জেএসএসের কর্মী-সমর্থক ছিলেন। এরপর ১৮ মে রাজবিলা ৮ নম্বর রাবারবাগানে আওয়ামী লীগ নেতার ভাই ক্যচিংথোয়াই মারমাকে গুলি করে হত্যা করে দুষ্কৃতকারীরা। ২২ মে রাতে কুহালং ইউনিয়নের উজিমুখ হেডম্যানপাড়া এলাকা থেকে আওয়ামী লীগের পৌর শাখার সহসভাপতি চথোয়াইমং মারমাকে অপহরণ করে হত্যা করা হয়।

এসব ঘটনায় আওয়ামী লীগ ও জেএসএস একে অপরকে দায়ী করেছে। তবে দুই দল অভিযোগ অস্বীকার করেছে।