রাঙ্গুনিয়ায় নির্মাণের এক সপ্তাহ পরেই কালভার্টে ফাটল

নির্মাণকাজ শেষ হওয়ার এক সপ্তাহ পরই দেবে যায় কালভার্ট। এখন এটি ভেঙে ফেলা হচ্ছে। গতকাল বিকেলে রাঙ্গুনিয়ার গজালিয়া ফকিরটিলা এলাকায়।  প্রথম আলো
নির্মাণকাজ শেষ হওয়ার এক সপ্তাহ পরই দেবে যায় কালভার্ট। এখন এটি ভেঙে ফেলা হচ্ছে। গতকাল বিকেলে রাঙ্গুনিয়ার গজালিয়া ফকিরটিলা এলাকায়। প্রথম আলো

নির্মাণকাজ শেষ হওয়ার সপ্তাহ না পেরোতেই কালভার্টে ফাটল দেখা দেয়। এক পাশে দেবেও যায়। চলাচলে ঝুঁকিপূর্ণ হয়ে পড়ে। ফলে কালভার্টটি পরিত্যক্ত ঘোষণা করে ভেঙে ফেলতে হয়েছে।
চট্টগ্রামের রাঙ্গুনিয়া উপজেলার লালানগর ইউনিয়নের গজালিয়া ফকিরটিলা এলাকায় এই ঘটনা ঘটেছে। নিম্নমানের উপকরণসামগ্রী ব্যবহারের কারণে কালভার্টটিতে ফাটল সৃষ্টি হয়েছে বলে অভিযোগ করেছেন স্থানীয় বাসিন্দারা। তবে প্রকৌশলীর দাবি, অতিরিক্ত বৃষ্টির কারণেই কালভার্ট দেবে গেছে।
উপজেলার লালানগর ইউনিয়নের ফকিরটিলা, গাজালিয়া, ফুইট্ট্যাগোদা, ছনখোলা বিল, মোল্লাপাড়া, আকবর শিকদারপাড়া, ওয়াহেদ আকবর শিকদারপাড়া, সামসের নগর, আলম শাহপাড়া ও পাশ্ববর্তী হোছনাবাদ ইউনিয়নের নিশ্চিন্তাপুর এলাকার লোকজন এই কালভার্ট দিয়ে চলাচল করে।
লালানগর ইউনিয়ন পরিষদের (ইউপি) চেয়ারম্যান মীর তৌহিদুল ইসলামের উদ্যোগে ১৩ জুন কালভার্টের ঢালাইয়ের কাজ শেষ হয়। নির্মাণকাজ শেষ হওয়ার পর থেকে কালভার্টে ফাটল সৃষ্টি হয়। একপর্যায়ে দেবে যায়। এ জন্য গতকাল সোমবার তা ভেঙে ফেলা হয়।
উপজেলা প্রকৌশল কার্যালয় সূত্র জানায়, উপজেলা পরিষদ উন্নয়ন তহবিলের অর্থায়নে ২০১৭ সালের শুরুর দিকে এই কালভার্টের নির্মাণকাজ শুরু হয়েছিল। ইউনিয়নের কুলকুরমাই খালের ওপর ২০ ফুট দীর্ঘ ও ৬ ফুট প্রশস্ত এই কালভার্টের নির্মাণ ব্যয় ধরা হয়েছিল ১ লাখ টাকা। কিন্তু অপ্রতুল বরাদ্দের কারণে মাত্র তিনটি পিলার তৈরির পরেই নির্মাণকাজ থেমে যায়। পরে আর শুরু হয়নি। এরপর স্থানীয় লোকজন পিলারের ওপর বাঁশের সাঁকো তৈরি করে চলাচল করছিল।
স্থানীয় বাসিন্দা সিরাজুল করিম বাঁশের সাঁকোর ছবি সামাজিক যোগাযোগমাধ্যম ফেসবুকে দেন। তা দেখে কালভার্টটি পুনর্নিমাণের জন্য স্থানীয় লালানগর ইউনিয়ন পরিষদের (ইউপি) চেয়ারম্যান মীর তৌহিদুল ইসলামকে দায়িত্ব দেন উপজেলা নির্বাহী কর্মকর্তা মো. মাসুদুর রহমান।
ইউপি চেয়ারম্যান তৌহিদুল ইসলাম বলেন, বরাদ্দ কম থাকায় শুধু পিলারের কাজ করেছিলেন ঠিকাদার। সম্প্রতি ইউএনও তাঁকে এর নির্মাণকাজ শেষ করার দায়িত্ব দেন। কিন্তু অতিরিক্ত বৃষ্টির কারণে কালভার্টের নিচ থেকে ঢালাইয়ের জন্য দেওয়া খুঁটিগুলো সরে যায়। ফলে কালভার্ট দেবে যায়। এখন ভেঙে নতুন করে নির্মাণ করা হবে।
তবে পুনর্নির্মাণের পর কালভার্টে ফাটলের বিষয়ে জানা নেই বলে জানান ইউএনও।
ইউনিয়নের হোছনাবাদ–লালানগর উচ্চবিদ্যালয় পরিচালনা পরিষদের সভাপতি সিরাজুল করিম অভিযোগ করেন, ঠিকাদার তিনটি পিলার তৈরি করে দুই বছর পার করে দিয়েছেন। সরকারি নিয়ম না মেনে অপরিকল্পিতভাবে কালভার্টটি নির্মাণ করা হয়েছে। নিম্নমানের পিলারে ঢালাই দেওয়ায় কালভার্টটিতে ফাটল দেখা দেয়। এ বিষয়ে কর্তৃপক্ষের ব্যবস্থা নেওয়া উচিত।
ফাটল দেখা দেওয়ায় কালভার্টটি পরিত্যক্ত ঘোষণা করা হয়েছে বলে জানান উপজেলা উপসহকারী প্রকৌশলী আবুল কালাম। তিনি বলেন, কাঠের পাটাতন দিয়ে কালভার্টটি নতুনভাবে নির্মাণ করা হবে।