স্ত্রীকে হত্যা করে ডায়রিয়ায় মৃত্যুর গুজব

প্রতিকী ছবি
প্রতিকী ছবি

শরীয়তপুরের ভেদরগঞ্জ উপজেলায় মাহমুদা বেগম (২৮) নামে এক গৃহবধূকে পিটিয়ে হত্যা করার অভিযোগ উঠেছে। হত্যায় জড়িত থাকার অভিযোগে গৃহবধূর স্বামী দুলাল গাজীকে গ্রেপ্তার করেছে পুলিশ। আজ মঙ্গলবার আদালতের মাধ্যমে তাঁকে জেলা কারাগারে পাঠানো হয়েছে।

সখীপুর থানা সূত্রে জানা গেছে, নড়িয়া উপজেলার শরিফ হাওলাদারের মেয়ে মাহমুদা বেগম। ১০ বছর আগে পাশের ভেদরগঞ্জ উপজেলার চরভাগা হাওলাদারকান্দি গ্রামের দুলাল গাজীর সঙ্গে তাঁর বিয়ে হয়। তাদের তিন সন্তান আছে। দরিদ্রতা নিয়ে প্রায়ই তাঁদের মধ্যে ঝগড়া হতো। গত রোববার মাহমুদার সঙ্গে দুলাল গাজীর ঝগড়া হয়। ঝগড়ার একপর্যায়ে দুলাল মাহমুদাকে মারধর করেন। লাঠি দিয়ে পিটিয়ে ও পেটে লাথি মেরে আহত করা হয় তাঁকে। এতে মাহমুদা অচেতন হয়ে পড়েন।

অচেতন অবস্থায় রাতেই মাহমুদার মৃত্যু হয়। মাহমুদা মারা যাওয়ার পর তাঁর স্বামী দুলাল গাজী এলাকায় প্রচার করেন, ডায়রিয়ায় আক্রান্ত হয়ে মাহমুদার মৃত্যু হয়েছে। বিষয়টি নিয়ে গ্রামবাসীর সন্দেহ হলে পুলিশে খবর দেওয়া হয়। পুলিশ লাশ উদ্ধার করে ময়নাতদন্তের জন্য শরীয়তপুর সদর হাসপাতালে পাঠায়। গতকাল সোমবার ময়নাতদন্তে তার শরীরে বিভিন্ন স্থানে আঘাতের চিহ্ন পাওয়া যায়। ওই দিনই দুলাল গাজীকে আটক করে পুলিশ। জিজ্ঞাসাবাদে সোমবার রাতে দুলাল তাঁর স্ত্রীকে হত্যা করার কথা স্বীকার করেন।

এ ঘটনায় মাহমুদার বাবা শরিফ হাওলাদার বাদী হয়ে আজ সকালে সখীপুর থানায় একটি হত্যা মামলা করেন। ওই মামলায় গ্রেপ্তার দেখিয়ে দুলাল গাজীকে আদালতের মাধ্যমে কারাগারে পাঠানো হয়েছে।

মাহমুদার বাবা শরিফ হাওলাদার বলেন, ‘দুলাল আমার মেয়েকে প্রায়ই নির্যাতন করত। টাকা দাবি করত। ওর তিনটি শিশুসন্তানের মুখের দিকে চেয়ে আমরা সাধ্য অনুযায়ী দিতাম। দুলাল এভাবে আমার মেয়েকে শেষ করে ফেলবে তা ভাবতেও পারিনি। মাহমুদার সন্তানদের কী জবাব দেব? তাদের কার কাছে রাখব?’

সখীপুর থানার ভারপ্রাপ্ত কর্মকর্তা (ওসি) এনামুল হক বলেন, ডায়রিয়ায় মাহমুদার মৃত্যু হয়েছে, এমন প্রচারণা চালান তাঁর স্বামী। বিষয়টি নিয়ে সন্দেহ হয়। তাই তাঁর স্বামী দুলালকে পুলিশের নজরদারিতে রাখা হয়। ময়নাতদন্তে হত্যার বিষয়টি নিশ্চিত হয়ে তাঁকে আটক করা হয়। জিজ্ঞাসাবাদে তিনি হত্যাকাণ্ডে জড়িত থাকার কথা স্বীকার করেছেন।