প্রেমের ফাঁদে ফেলে অপহরণ

গ্রেপ্তার রবিউল ইসলাম
গ্রেপ্তার রবিউল ইসলাম

শেরপুরে ফেসবুকের মাধ্যমে প্রেমের ফাঁদে ফেলে অপহরণের প্রায় সাড়ে তিন মাস পর এক কলেজছাত্রীকে (১৯) উদ্ধার করেছে পুলিশ। এ ঘটনায় জড়িত থাকার অভিযোগে রবিউল ইসলামকে (২৫) গ্রেপ্তার করা হয়েছে।

গতকাল মঙ্গলবার দুপুরে জেলা সদর হাসপাতালে ছাত্রীটির ডাক্তারি পরীক্ষা সম্পন্ন হয়। ছাত্রীটি স্থানীয় একটি কলেজের এইচএসসি পরীক্ষার্থী ছিলেন। তিনি শেরপুর শহরের এক সবজি বিক্রেতার মেয়ে।

গত রোববার রাতে কুমিল্লা ইপিজেডের উমাইসার এলাকা থেকে মেয়েটিকে উদ্ধার ও রবিউলকে গ্রেপ্তার করে পুলিশ। রবিউল পিরোজপুরের ইন্দুরকানি উপজেলার টেংরাখালী গ্রামের আবদুল লতিফ সর্দারের ছেলে। সোমবার সন্ধ্যায় বিচারিক হাকিম মো. শরীফুল ইসলাম খানের নির্দেশে রবিউলকে জেলা কারাগারে পাঠানো হয়।

মেয়েটি বর্তমানে তাঁর মা–বাবার কাছে রয়েছেন। এ ঘটনায় তাঁর বাবা বাদী হয়ে গ্রেপ্তার রবিউলের বিরুদ্ধে নারী ও শিশু নির্যাতন দমন আইনে সদর থানায় মামলা করেছেন।

পুলিশ ও মামলার এজাহার সূত্রে জানা গেছে, চার মাস আগে ফেসবুকের মাধ্যমে রবিউলের সঙ্গে ছাত্রীটির পরিচয় হয়। এরপর তাঁদের মধ্যে প্রেমের সম্পর্ক গড়ে ওঠে। ছাত্রীটির কাছে রবিউল নিজেকে আইটি ইঞ্জিনিয়ার হিসেবে পরিচয় দিয়েছিলেন এবং কুমিল্লা ইপিজেডে চাকরি করেন বলে জানান। এরপর ১৩ মার্চ ছাত্রীটি শেরপুর শহরের বাসা থেকে কোচিং সেন্টারে যাওয়ার উদ্দেশে বের হলে রবিউল তাঁকে অপহরণ করে কুমিল্লায় নিয়ে যান। কুমিল্লা শহরের একটি ভাড়া বাসায় রেখে মেয়েটিকে একাধিকবার ধর্ষণ করেন রবিউল। অপহরণের পরদিন মেয়েটির বাবা তাঁর মেয়ের নিখোঁজ হওয়ার বিষয়ে সদর থানায় সাধারণ ডায়েরি করেন। পরে বিভিন্নভাবে জানতে পারেন, রবিউল তাঁর মেয়েকে অপহরণ করে নিয়ে গেছেন। এরপর ১৭ এপ্রিল তিনি বাদী হয়ে রবিউলের বিরুদ্ধে নারী ও শিশু নির্যাতন দমন আইনে মামলা করেন। পুলিশ সুপার কাজী আশরাফুল আজীমের নির্দেশে সদর থানার উপপরিদর্শক ও মামলার তদন্ত কর্মকর্তা মো. আনসার আলী দীর্ঘ অনুসন্ধান শেষে রোববার রাতে কুমিল্লা ইপিজেডের উমাইসার এলাকা থেকে মেয়েটিকে উদ্ধার ও রবিউলকে গ্রেপ্তার করেন।

মামলার তদন্ত কর্মকর্তা আনসার আলী গতকাল বিকেলে প্রথম আলোকে বলেন, ধর্ষণের ফলে মেয়েটি বর্তমানে তিন মাসের অন্তঃসত্ত্বা। নারী ও শিশু নির্যাতন দমন আইনের ২২ ধারা মোতাবেক বিচারিক হাকিম ফারিন ফারজানার আদালতে তিনি জবানবন্দি দিয়েছেন।

পুলিশ সুপার কাজী আশরাফুল আজীম বলেন, পুলিশের প্রাথমিক তদন্তে গ্রেপ্তার রবিউলের বিরুদ্ধে অভিযোগের সত্যতা পাওয়া গেছে। রবিউল একজন প্রতারক। এর আগে তিনি দুটি বিয়ে করেছেন এবং মিথ্যা কথা ও আশ্বাস দিয়ে একাধিক তরুণীর সঙ্গে শারীরিক সম্পর্ক গড়ে তোলেন। পুলিশের জিজ্ঞাসাবাদে তিনি এসব অভিযোগ স্বীকার করেছেন।

সোমবার বিকেলে থানা হেফাজতে আটক থাকার সময় রবিউল বিভিন্ন গণমাধ্যমকর্মীর কাছেও অভিযোগগুলো স্বীকার করেন।