রোকেয়া বিশ্ববিদ্যালয়ে সভা-সমাবেশ নিষিদ্ধ

লাগাতার আন্দোলনের মধ্যে বেগম রোকেয়া বিশ্ববিদ্যালয়ের প্রশাসনিক ও শিক্ষা কার্যক্রম ভবনে সভা-সমাবেশ নিষিদ্ধ করেছে কর্তৃপক্ষ। গতকাল মঙ্গলবার মধ্যরাতে সদ্য দায়িত্ব নেওয়া প্রক্টর আতিউর রহমানের সই করা জরুরি বিজ্ঞপ্তির মাধ্যমে এ সিদ্ধান্তের কথা জানানো হয়।

বেগম রোকেয়া বিশ্ববিদ্যালয়ে কর্মচারীদের নীতিমালা বাস্তবায়নসহ তিন দফা দাবিতে লাগাতার আন্দোলন চলছে। এ আন্দোলনের মুখে আবু কালাম ফরিদ উল ইসলামকে প্রক্টর পদ থেকে সরিয়ে দেওয়া হয়।

বিজ্ঞপ্তিতে বলা হয়, ‘ক্যাম্পাসে শিক্ষার সুষ্ঠু পরিবেশ নিশ্চিত করার লক্ষ্যে প্রশাসনিক ও একাডেমিক ভবনসমূহে সকল প্রকার সভা-সমাবেশ, মিছিল, মাইকিং এবং বিশ্ববিদ্যালয়ের স্বার্থ পরিপন্থী সকল কর্মকাণ্ড নিষিদ্ধ।’

এদিকে ভবনের বাইরে আজ বুধবার সকাল ১০টায় কর্মচারীরা ক্যাম্পাসে বিক্ষোভ মিছিল ও সমাবেশ করেছেন। এ নিয়ে নতুন করে উত্তেজনা দেখা দেয়।

এই বিজ্ঞপ্তি প্রচারের পর শিক্ষার্থীসহ বিভিন্ন সাংস্কৃতিক ও আবৃত্তি সংগঠনের মধ্যে বিরূপ প্রতিক্রিয়া দেখা দিয়েছে। এসব সংগঠন ইতিমধ্যে সামাজিক যোগাযোগমাধ্যম ফেসবুকে তাদের প্রতিক্রিয়া জানিয়েছে।

কর্মচারী সমন্বয় পরিষদের ব্যানারে তিন দফা দাবি বাস্তবায়নে গত সোমবার থেকে বিশ্ববিদ্যালয়ের কর্মচারীরা অনির্দিষ্টকালের জন্য কর্মবিরতি শুরু করেন। গতকাল বিক্ষুব্ধ কর্মচারীরা প্রশাসনিক ভবনে তালা লাগিয়ে দেন। আবার সেই তালা বিকেলে বিশ্ববিদ্যালয়ের একজন শিক্ষকের নেতৃত্বে বেশ কিছু শিক্ষার্থী ভেঙে ফেলেন। এ নিয়ে দিনভর উত্তেজনা ছিল। পুরো প্রশাসনিক কার্যক্রমে অচলাবস্থা সৃষ্টি হয়।

এ প্রসঙ্গে তাবিউর রহমান নামের ওই শিক্ষক মুঠোফোনে প্রথম আলোকে বলেন, ‘কর্মচারীরা সবাইকে জিম্মি করে প্রশাসনিক ভবনে তালা মেরে দিতে পারে না। তাই তালা বিশ্ববিদ্যালয় কর্তৃপক্ষ ভেঙেছে। এতে আমি একা নই, অনেক শিক্ষকই উপস্থিত ছিলেন। ওই সময় কিছু শিক্ষার্থী তাঁদের কাজের প্রয়োজনে প্রশাসনিক ভবনে উপস্থিত ছিলেন।’

ক্যাম্পাসের আইনশৃঙ্খলা পরিস্থিতি সম্পর্কে বিশ্ববিদ্যালয় পুলিশ ফাঁড়ির দায়িত্বে থাকা উপপরিদর্শক (এসআই) মহিব্বুল ইসলাম প্রথম আলোকে বলেন, পরিস্থিতি নিয়ন্ত্রণে রাখার চেষ্টা করা হয়েছে। উত্তেজনা থাকলেও আপাতত পরিস্থিতি শান্ত রয়েছে। এখানে সংঘাতের চেষ্টা হলে পুলিশ তা প্রতিহত করবে।

কর্মচারী অ্যাসোসিয়েশনের সভাপতি নুর আলম বলেন, ‘আমাদের দাবি নিয়ে আমরা বহুবার আন্দোলন করেছি। কিন্তু শুধু আশ্বাসই দেওয়া হয়, দাবি বাস্তবায়ন হয় না।’

কর্মচারীদের দাবি হলো বিশ্ববিদ্যালয়ে কর্মচারীবান্ধব পদোন্নতি নীতিমালা বাস্তবায়ন, ৫৮ জন কর্মচারীর ৪৪ মাসের বকেয়া বেতন-ভাতা প্রদান এবং মাস্টাররোল কর্মচারীদের চাকরি স্থায়ীকরণ।

কর্মচারীরা জানান, ৩৪৬ জন কর্মচারীর মধ্যে ২৮৮ জনের বকেয়া পরিশোধ করা হলেও ৫৮ জন কর্মচারীকে ৪৪ মাসের বকেয়া বেতন দেওয়া হয়নি।

এ ব্যাপারে বিশ্ববিদ্যালয়ের উপাচার্য নাজমুল আহসান কলিমউল্লাহ মুঠোফোনে প্রথম আলোকে বলেন, ‘কর্মচারীদের এসব দাবি আগের উপাচার্যের আমলে। এরপরও আমি চেষ্টা করছি তাঁদের সমস্যা সমাধানের। তাঁদের তিনটি দাবি বাস্তবায়ন প্রক্রিয়াধীন রয়েছে।’