চুরির অভিযোগে গণপিটুনিতে যুবক নিহত

চট্টগ্রামের মিরসরাই উপজেলায় গণপিটুনিতে এক যুবকের মৃত্যু হয়েছে। গ্রামবাসীর ভাষ্য, ওই যুবক চোর চক্রের সদস্য ছিলেন। গতকাল মঙ্গলবার রাতে এক বাড়িতে দলবল নিয়ে চুরি করতে গিয়ে ধরা পড়লে এলাকার লোকজন পিটিয়ে তাঁকে মেরে ফেলে। পুলিশ লাশটি উদ্ধার করেছে।

নিহত যুবকের নাম কবির মোল্লা (৩০)। তিনি পটুয়াখালী সদরের বদরপুর এলাকার আমজাদ মোল্লার ছেলে। গতকাল দিবাগত রাত তিনটার সময় মিরসরাই উপজেলার মায়ানী ইউনিয়নের মধ্যম মায়ানী গ্রামে এই গণপিটুনির ঘটনা ঘটে। এ সময় কবিরের সঙ্গে থাকা তিনজন পালিয়ে যায়।

পুলিশ ও স্থানীয় জনপ্রতিনিধি সূত্র জানায়, মধ্যম মায়ানী গ্রামে দুই-তিন মাস ধরে একটি চোর চক্র প্রায় প্রতি রাতেই কারও না কারও বাড়িতে ঢুকে মোবাইল ফোন, টাকা-পয়সা ও মূল্যবান জিনিসপত্র নিয়ে যাচ্ছিল। যেসব বাড়িতে পুরুষ থাকত না, সেসব বাড়িতে ঢুকে চুরির পাশাপাশি নারীদের শারীরিকভাবে লাঞ্ছিত করত। চোরের দলটির এমন অত্যাচারে অতিষ্ঠ হয়ে ১৫ দিন ধরে গ্রামের পাড়ায় পাড়ায় পাহারা বসায় স্থানীয় লোকজন। গতকাল রাতে দুটি বাড়িতে চুরি করতে ঢুকে ধাওয়া খেয়ে গ্রামের চৌধুরীপাড়ার ছাইদুল হকের বাড়িতে আসে চার সদস্যের চোর দল। সেখানে পাহারায় থাকা লোকদের হাতে কবির মোল্লা ধরা পড়লেও অন্য তিনজন পালিয়ে বাঁচে।

এ বিষয়ে জানতে চাইলে মধ্যম মায়ানী গ্রামের ইউপি সদস্য মো. নজরুল ইসলাম প্রথম আলোকে বলেন, এই চোর দলের উৎপাতে গ্রামবাসী অতিষ্ঠ ছিল। চুরির পাশাপাশি নারীদের গায়ে হাত দিত বলে গ্রামবাসীর ক্ষোভ ছিলে বেশি। গতকাল রাতে ধাওয়া করে একজনকে ধরতে পেরে গণধোলাই দেয়।

নিহত যুবক দিনের বেলায় এক ঠিকাদারের অধীনে মিরসরাই অর্থনৈতিক অঞ্চলে গ্যাস লাইনের ওয়েল্ডিং সহকারী হিসেবে কাজ করতেন বলে জানা গেছে।

গণপিটুনিতে যুবক নিহত হওয়ার তথ্যের সত্যতা নিশ্চিত করেছেন মিরসরাই থানার উপপরিদর্শক (এসআই) মাহফুজুল আলম। প্রথম আলোকে তিনি বলেন, ‘খবর পেয়ে আজ বুধবার ভোর সাড়ে পাঁচটায় ঘটনাস্থলে গিয়ে লাশ উদ্ধার করে থানায় নিয়ে আসি। মাথায় দুটি ক্ষত ও হাতের দুই বাহুতে রশি দিয়ে বাঁধার দাগ ছিল।’

এসআই জানান, ময়নাতদন্তের জন্য লাশটি চট্টগ্রাম মেডিকেল কলেজে পাঠানো হবে। নিহত যুবকের পরিবারের কাছে খবর পাঠানো হয়েছে। তদন্ত করে এ বিষয়ে আইনগত ব্যবস্থা নেওয়া হবে।