লালমনিরহাটে ৪০ মিটার সড়ক নদীর গর্ভে

কয়েক দিনের বৃষ্টিপাত ও উজান থেকে আসা পাহাড়ি ঢলে সড়ক ভেঙে ধরলা নদীতে বিলীন হয়েছে। এতে তিনটি গ্রামের প্রায় তিন হাজার মানুষ দুর্ভোগে পড়েছেন। গতকাল লালমনিরহাট সদর উপজেলার দক্ষিণ শিবের কুঠি গ্রামে।  ছবি: প্রথম আলো
কয়েক দিনের বৃষ্টিপাত ও উজান থেকে আসা পাহাড়ি ঢলে সড়ক ভেঙে ধরলা নদীতে বিলীন হয়েছে। এতে তিনটি গ্রামের প্রায় তিন হাজার মানুষ দুর্ভোগে পড়েছেন। গতকাল লালমনিরহাট সদর উপজেলার দক্ষিণ শিবের কুঠি গ্রামে। ছবি: প্রথম আলো

লালমনিরহাট সদর উপজেলার কুলাঘাট ইউনিয়নের দক্ষিণ শিবের কুঠি গ্রামে ৪০ মিটার পাকা সড়ক ভেঙে গতকাল বুধবার ধরলা নদীর গর্ভে চলে গেছে। গত কয়েক দিনের বৃষ্টিপাত ও উজান থেকে আসা পাহাড়ি ঢলে সড়কটি ভেঙে যায়।

সড়কটি ভেঙে যাওয়ায় তিনটি গ্রামের প্রায় তিন হাজার মানুষের সড়কপথে সরাসরি যোগাযোগ বন্ধ হয়ে পড়েছে। গ্রামগুলো হলো চর শিবের কুঠি, ধর্মপাল ও বোয়ালমারী। সড়কটি দিয়ে এই তিন গ্রামের মানুষ কুলাঘাট বাজার, লালমনিরহাট জেলা শহরসহ বিভিন্ন স্থানে যাতায়াত করত।

সড়ক ও জনপথ বিভাগ (সওজ) ও এলাকাবাসী সূত্রে জানা যায়, দক্ষিণ শিবের কুঠি গ্রামের ওই স্থানে একটি কালভার্ট ছিল। পাকা করার সময় সেটি সড়কটির নিচে পড়ে বন্ধ হয়ে যায়। এ কারণে কালভার্টটি দিয়ে পানি নিষ্কাশনের পথ বন্ধ হয়ে যায়। গত কয়েক দিনের বৃষ্টিপাত ও উজান থেকে নেমে আসা পাহাড়ি ঢলে ধরলা নদীর পানি বেড়ে যায়। এই পানি বের হতে না পেরে তার চাপ পড়ে সড়কটিতে। একপর্যায়ে গতকাল সকালে সড়কটির ৪০ মিটার অংশ ভেঙে নদীর গর্ভে বিলীন হয়ে যায়।

চর শিবের কুঠি গ্রামের কৃষক মো. মোজাম্মেল হক বলেন, ‘এখন বর্ষাকাল। চলাচলের এমনি সমস্যা। তার ওপর রাস্তার কিছু অংশ নদীতে চলে গেল। সড়কটি মেরামত না করা হলে আমরা গ্রামে অবরুদ্ধ হয়ে থাকব। আয়-উপার্জনের জন্য গ্রামের লোকজন কোথাও যেতে পারব না।’

জানতে চাইলে কুলাঘাট ইউপির চেয়ারম্যান মো. ইদ্রিস আলী বলেন, গত দু-তিন দিনের লাগাতার বৃষ্টি ও ভারত থেকে আসা পাহাড়ি ঢলে ধরলা নদীর পানি বেড়ে গেছে। প্রবল পানির চাপে সড়কটি ভেঙে নদীতে চলে গেছে। এতে প্রায় তিন হাজার মানুষের কুলাঘাট ও জেলা শহরে সড়কপথে যাতায়াতে সমস্যা দেখা দিয়েছে। বিষয়টি জেলা প্রশাসন, জেলা পরিষদ, উপজেলা প্রশাসনসহ অন্যান্য দপ্তরে জানানো হয়েছে। তিনি আরও জানান, ওই স্থানে একটি কালভার্ট ছিল। সেটি সড়কের নিচে পড়ে বন্ধ হয়ে গেছে।

খবর পেয়ে গতকাল দুপুরে জেলা প্রশাসক মো. আবু জাফর ঘটনাস্থলে যান। এ সময় আরও উপস্থিত ছিলেন সদর উপজেলা নির্বাহী কর্মকর্তা জয়শ্রী রানী রায়, সওজ বিভাগের জেলা কার্যালয়ের নির্বাহী প্রকৌশলী আলী নুরায়েন, পানি উন্নয়ন বোর্ডের জেলা দপ্তরের উপবিভাগীয় প্রকৌশলী (অতিরিক্ত দায়িত্ব) মো. বজলে করিম, কুলাঘাট ইউপির চেয়ারম্যান মো. ইদ্রিস আলী প্রমুখ। বিকেলে জেলা পরিষদের চেয়ারম্যান ও জেলা আওয়ামী লীগের সাধারণ সম্পাদক মতিয়ার রহমানও সড়কটি দেখতে যান।

জানতে চাইলে জেলা প্রশাসক মো. আবু জাফর বলেন, সওজ বিভাগের নির্বাহী প্রকৌশলীকে জনগুরুত্ব বিবেচনায় জরুরি ভিত্তিতে পাকা সড়কটির ক্ষতিগ্রস্ত অংশ মেরামতে ব্যবস্থা নিতে গতকাল বিকেলে লিখিতভাবে বলা হয়েছে।

এ ব্যাপারে সওজের লালমনিরহাট কার্যালয়ের নির্বাহী প্রকৌশলী আলী নুরায়েন বলেন, সড়কটি এই মুহূর্তে স্থায়ীভাবে পুনর্নির্মাণ করা সম্ভব নয়। তবে চলাচলের জন্য অস্থায়ী ব্যবস্থা হিসেবে সড়কটির দুই পাশে বাঁশের বেড়া দিয়ে সেখানে বালুভর্তি বস্তা ফেলা হবে। এ কাজ করতে কয়েক দিন সময় লাগবে।