নেছারাবাদে কলেজছাত্রী হত্যায় যুবকের মৃত্যুদণ্ড

প্রতীকী ছবি
প্রতীকী ছবি

পিরোজপুরের নেছারাবাদে কলেজছাত্রী ঝর্ণা রানি দেউড়ি (১৯) হত্যা মামলায় এক যুবককে মৃত্যুদণ্ড দিয়েছেন আদালত। আজ বৃহস্পতিবার দুপুরে পিরোজপুরের নারী ও শিশু নির্যাতন দমন ট্রাইব্যুনালের বিচারক মো. মিজানুর রহমান এ রায় দেন।

মৃত্যুদণ্ডপ্রাপ্ত যুবকের নাম লিটন মণ্ডল (৩৪)। তিনি নেছারাবাদ উপজেলার আটঘর গ্রামের সুধীর রঞ্জন মণ্ডলের ছেলে। নিহত ঝর্ণা রানি দেউড়ি একই গ্রামের সুভাষ চন্দ্র দেউড়ি মেয়ে। তিনি বানারীপাড়া শাহ মাহামুদিয়া কলেজের একাদশ শ্রেণির শিক্ষার্থী ছিলেন। বিয়ের প্রস্তাবে রাজি না হওয়ায় ২০০৯ সালের মে মাসে তাঁকে হত্যা করা হয় বলে মামলার এজাহারে উল্লেখ করা হয়েছে।

মামলার সংক্ষিপ্ত বিবরণ ও আদালত সূত্রে জানা গেছে, লিটন মণ্ডল ঝর্ণা রানিকে ভালোবাসতেন। ঝর্ণা বিদ্যালয়ে পড়াশোনার সময় তিনি স্থানীয়দের মাধ্যমে মেয়েটির পরিবারের কাছে বিয়ের প্রস্তাব দেন। তবে ঝর্ণার পরিবার বিয়ের ওই প্রস্তাব প্রত্যাখ্যান করেন। এরপরও লিটন পিছু না ছাড়লে ঝর্ণার পরিবার মেয়েকে নিয়ে পার্শ্ববর্তী উপজেলা বরিশালের বানারীপাড়ায় গিয়ে বসবাস শুরু করেন। পরে আবার আটঘর গ্রামের বাড়ি চলে আসে। ২০০৯ সালের ১৪ মে সকালে ঝর্ণা তাঁর বড় বোনের বাড়ি থেকে নিজ গ্রামে ফিরছিলেন। পথে কৌড়িখাড়া খেয়া ঘাট থেকে লিটন ঝর্ণাকে একটি ট্রলারে তুলে নেন। সাক্ষীদের দাবি, সে সময় বিয়ের প্রস্তাবে সাড়া না দেওয়ায় লিটন ঝর্ণাকে শ্বাসরোধে হত্যা করে স্থানীয় সন্ধ্যা নদীতে ফেলে দেন।

মামলার এজাহার ও পুলিশ সূত্রে জানা গেছে, বানারীপাড়া থানা-পুলিশ নদী থেকে অজ্ঞাত হিসেবে ঝর্ণার লাশ উদ্ধার করেছিল। এ নিয়ে ওই বছরের ১৭ মে একটি পত্রিকায় ‘বানারীপাড়ায় অজ্ঞাত লাশ’ উদ্ধারের সংবাদ প্রকাশ হয়। এর সূত্র ধরে ঝর্ণার বাবা বরিশাল শের-ই-বাংলা মেডিকেল কলেজ হাসপাতাল মর্গে মেয়েকে শনাক্ত করেন। এ ঘটনায় ওই বছরের ২৪ মে সুভাষ চন্দ্র লিটন মণ্ডলের নাম উল্লেখ করে অজ্ঞাত পাঁচজনের বিরুদ্ধে থানায় হত্যা মামলা করেন। আদালত ১২ জনের সাক্ষ্য নেন। অভিযোগ প্রমাণিত না হওয়ায় রতন দেউড়ি, রণজিৎ হালদার ও বিপুল শাঁখারি নামের তিনজনকে খালাস দেওয়া হয়।

রাষ্ট্র পক্ষে মামলাটি পরিচালনা করেন নারী ও শিশু নির্যাতন দমন ট্রাইব্যুনালের সরকারি কৌঁসুলি (বিশেষ পিপি) আবদুর রাজ্জাক খান। তিনি এই রায়ে সন্তুষ্টি প্রকাশ করেন। আবদুর রাজ্জাক খান জানিয়েছেন, ঘটনার পর থেকে আসামি লিটন মণ্ডল পলাতক। লিটন মণ্ডলের পক্ষে রাষ্ট্র নিযুক্ত আইনজীবী ছিলেন ফাতেমা বেগম। খালাস পাওয়া আসামিদের আইনজীবী ছিলেন কানাই লাল বিশ্বাস।