দুদকের দুর্নীতিবাজ ছেঁটে ফেলুন, হাইকোর্টের মন্তব্য

দুদকের আইনজীবীর উদ্দেশে হাইকোর্ট বলেছেন, ‘দুদকের ভেতরে যদি কোনো দুর্নীতিবাজ থাকে, তাহলে সেই ক্যানসারগুলোকে ছেঁটে ফেলতে হবে।’ বিচারপতি এফ আর এম নাজমুল আহসান ও বিচারপতি কে এম কামরুল কাদেরের সমন্বয়ে গঠিত হাইকোর্ট বেঞ্চ গতকাল বৃহস্পতিবার এই মন্তব্য করেন। 

সোনালী ব্যাংকের ঋণ জালিয়াতির অভিযোগে দুর্নীতি দমন কমিশনের (দুদক) করা মামলায় নিরীহ পাটকলশ্রমিক জাহালমের কারাভোগ ও ক্ষতিপূরণ প্রশ্নে রুল শুনানিতে আদালত এই মন্তব্য করেন। 

দুদকের আইনজীবী খুরশীদ আলম খানকে আদালত বলেন, দেশের অর্থনীতির এখন স্বর্ণযুগ চলছে। তাই এখন অর্থনৈতিক অপরাধ হওয়ার সুযোগ থাকছে। আমরা চাই দুদক যথাযথভাবে কাজ করবে। নতুন বিধিতে দুদককে অনেক ক্ষমতা দেওয়া হয়েছে। এই ক্ষমতার যাতে অপব্যবহার না হয়, তা গুরুত্বপূর্ণ। সততা ও স্বচ্ছতার সঙ্গে দুদককে কাজ করতে হবে। দুদক শক্তিশালী না হলে অর্থনীতিও শক্তিশালী হবে না। আর দুদকের মধ্যে দুর্নীতিবাজ থাকলে সেসব দুর্নীতিবাজ ক্যানসারকে ছেঁটে ফেলতে হবে। 

আদালত বলেন, যেকোনো প্রতিষ্ঠানের ভেতর সমস্যা থাকতে পারে। সমস্যা সামনে এলে তা যথাযথভাবে পদক্ষেপ নিতে হবে। তা ঢেকে রাখার চেষ্টা হলে মানুষের আস্থা থাকে না। 

‘স্যার, আমি জাহালম, সালেক না…’ শিরোনামে গত ২৮ জানুয়ারি প্রথম আলোতে প্রতিবেদন ছাপা হয়। সোনালী ব্যাংক থেকে সাড়ে ১৮ কোটি টাকা ঋণ নিয়েছিলেন আবু সালেক নামের এক লোক। কিন্তু দুদক সালেকের স্থলে জাহালমকে জেলে ঢুকিয়ে দেয়। প্রতিবেদনটি সেদিন আদালতের নজরে আনেন সুপ্রিম কোর্টের আইনজীবী অমিত দাশগুপ্ত। শুনানি নিয়ে হাইকোর্টের একই বেঞ্চ স্বতঃপ্রণোদিত রুল দেন। গত ৩ ফেব্রুয়ারি হাইকোর্ট জাহালমকে মুক্তি দিতে আইজি প্রিজনকে নির্দেশ দেন। প্রায় তিন বছর পর সেদিন মুক্তি পান তিনি। 

আদালতে দুদকের পক্ষে শুনানি করেন আইনজীবী খুরশীদ আলম খান। রাষ্ট্রপক্ষে ছিলেন ডেপুটি অ্যার্টনি জেনারেল এ বি এম আবদুল্লাহ আল মাহমুদ
বাশার। শুনানিতে জাহালমসংক্রান্ত সংশ্লিষ্ট মামলার নথিপত্র ও সম্পূরক অভিযোগপত্র আদালতে দাখিল করেন খুরশীদ আলম খান। তিনি বলেন, জাহালমের বিষয়ে দুদকের অভ্যন্তরীণ তদন্ত কমিটির তদন্ত শেষ হয়েছে। এখন কমিশনের অনুমোদনের অপেক্ষায়। শুনানি নিয়ে দুদকের অভ্যন্তরীণ তদন্ত প্রতিবেদন আগামী ১১ জুলাই আদালতে দাখিল করতে নির্দেশ দিয়েছেন হাইকোর্ট।