নালিতাবাড়ীতে ইউপি সদস্যের বিরুদ্ধে নারীর টাকা আত্মসাতের অভিযোগ

শেরপুরের নালিতাবাড়ীতে ইউনিয়ন পরিষদের (ইউপি) কাজ দেওয়ার প্রতিশ্রুতি দিয়ে এক নারীর কাছ থেকে ৩০ হাজার টাকা নিয়ে আত্মসাতের অভিযোগ উঠেছে। ওই নারী গত বৃহস্পতিবার উপজেলা প্রেসক্লাবে এসে কলসপাড় ইউপির ৭ নম্বর ওয়ার্ডের সদস্য আজগর আলীর বিরুদ্ধে এই অভিযোগ করেন।

অসহায় ওই নারীর নাম সুবেদা বেগম (৪০)। তিনি কলসপাড় ইউনিয়নের তারাকান্দি গ্রামের দিনমজুর নুরুল ইসলামের স্ত্রী। স্বামীর পাশাপাশি সুবেদাও দিনমজুরের কাজ করে জীবিকা নির্বাহ করেন।

নারী শ্রমিক সুবেদার সঙ্গে কথা বলে জানা গেছে, স্বামী ও চার সন্তানসহ ছয়জনের সংসার তাঁর। স্বামী-স্ত্রীর দিনমজুরি থেকে উপার্জনের অর্থে সংসার চলে। তাঁদের বড় ছেলে শফিকুল ইসলাম চলতি বছর এসএসসি পরীক্ষায় জিপিএ-৫ পেয়েছে। অর্থাভাবে মেজ ছেলে রফিকুল ইসলাম পড়ালেখা করতে পারেনি। এখন ঢাকায় একটি হোটেলে শ্রমিকের কাজ করে। অপর দুই সন্তান ছোট। সুবেদা বেগম ইউনিয়ন পরিষদের কাজ পেতে ২০১৭ সালে ইউপি সদস্য আজগর আলীর সঙ্গে যোগাযোগ করেন। তিনি ইউনিয়নে সারা বছর যেসব কাজ হয়, তাতে স্থায়ীভাবে নিযুক্ত করার কথা বলে সুবেদার কাছ থেকে ৩০ হাজার টাকা নেন। ওই ঘটনার ছয় মাস অতিবাহিত হওয়ার পরও কাজ না পাওয়ায় তিনি ইউপি সদস্যের কাছে বিষয়টি সম্পর্কে জানতে চান। কিন্তু আজগর আলী ‘দিচ্ছি, দেব’ বলে সময়ক্ষেপণ করতে থাকেন। চার মাস আগেওই নারী বিষয়টি কলসপাড় ইউপির চেয়ারম্যান আবুল কাশেমকে অবগত করেন। চেয়ারম্যান ওই ইউপি সদস্যকে টাকা ফেরত দিতে বলেন। কিন্তু তিনি আজ পর্যন্ত টাকা ফেরত দেননি। টাকা চাইতে গেলে আজগর উল্টো রাগ দেখাচ্ছেন।

সুবেদা বেগম তাঁর বড় ছেলে শফিকুল ইসলামকে সঙ্গে নিয়ে বৃহস্পতিবার সন্ধ্যায় স্থানীয় প্রেসক্লাবে আসেন। এ সময় তিনি সাংবাদিকদের কাছে ঘটনার বিস্তারিত তুলে ধরেন।

সুবেদা বেগম বলেন, ‘বিভিন্ন জায়গা থেকে ঋণ করে ৩০ হাজার টাকা জুগাড় কইরা আজগর আলী মেম্বাররে দিছিলাম। এই টাকা ফিরত পাইতে অনেকবার মেম্বারের কাছে গেছি। অহন উল্টা আমারে দেখলে রাগ করে। আমরা গরিব মানুষ। দিন আইনা দিন খাই। একটা ছেলে কলেজে পড়ে। হাতে কাজকাম না থাহায় বিরাট অসুবিধায় আছি। টাকাডা পাইলে আমগর লাইগা বিরাট উপকার অইত।’

সুবেদা বেগমের সঙ্গে থাকা ছেলে শফিকুল ইসলাম বলেন, ‘এলাকায় এখন তেমন কোনো কাজ নেই। মা ও বাবাকে বেশির ভাগ সময়ই বেকার থাকতে হচ্ছে। আমরা চার ভাইবোন। ৩০ হাজার টাকাটা ফেরত পেলে আমাদের সংসারের জন্য অনেক উপকার হয়।’

বক্তব্য জানতে আজগর আলীর মুঠোফোন নম্বরে বৃহস্পতিবার ও গতকাল শুক্রবার একাধিকবার ফোন দিলেও সেটি বন্ধ পাওয়া যায়। তবে কলসপাড় ইউপির চেয়ারম্যান আবুল কাশেম প্রথম আলোকে বলেন, ‘চার মাস আগে বিষয়টি জানার পর আমি ইউপি সদস্য আজগরকে ওই টাকা ফেরত দিতে বলেছিলাম। তিনি টাকা ফেরত দেবেন বলে আমাকে বলেছিলেন। পরে ওই বিষয়ে আর কোনো খবর পাইনি। এখন দ্রুত ওই টাকা ফেরত দিতে আমি ইউপি সদস্যকে বলব।’