খালেদার মুক্তি দাবিতে 'প্যাকেজ কর্মসূচির' সিদ্ধান্ত

বিএনপির চেয়ারপারসন খালেদা জিয়ার মুক্তির দাবিতে ‘প্যাকেজ আন্দোলন কর্মসূচি’ দেওয়ার সিদ্ধান্ত নিয়েছে দলটি। আজ শনিবার রাতে গুলশান কার্যালয়ে দলের স্থায়ী কমিটির বৈঠকে এ সিদ্ধান্ত হয় বলে জানা গেছে।

বৈঠকের পর ব্রিফ করেন বিএনপি মহাসচিব মির্জা ফখরুল ইসলাম আলমগীর। তিনিও কর্মসূচি দেওয়ার বিষয়ে কথা বলেন।

বিএনপির মহাসচিব বলেন, এই সভা অবিলম্বে দেশনেত্রী খালেদা জিয়ার মুক্তির জন্য চলমান আন্দোলনকে আরও বেগবান করার জন্য এবং অন্যান্য আইনগত ব্যবস্থা গ্রহণের সিদ্ধান্ত নিয়েছে। কবে নাগাদ আন্দোলনের কর্মসূচি আসবে জানতে চাইলে বিএনপির মহাসচিব বলেন, ‘এ ব্যাপারে আমরা কাজ করছি। আগামী চার সপ্তাহের মধ্যেই এই কর্মসূচিগুলো আসবে।’

খালেদা জিয়ার মুক্তির আন্দোলন বেগবান করতে বিএনপি বিভাগীয় পর্যায়ে কর্মসূচি দেবে বলে সর্বশেষ ২২ জুন স্থায়ী কমিটির বৈঠকে সিদ্ধান্ত নেয়।

গুলশানে চেয়ারপারসনের কার্যালয়ে বিকেলে দলের জাতীয় স্থায়ী কমিটির এই বৈঠক হয়। বৈঠকে দেশের বর্তমান রাজনৈতিক পরিস্থিতি, বরগুনায় রিফাত হত্যাকাণ্ড, ছাত্রদলের চলমান সংকটসহ নানা বিষয়ে আলোচনা হয়। লন্ডন থেকে স্কাইপেতে দলের ভারপ্রাপ্ত চেয়ারম্যান তারেক রহমান এই বৈঠকে যুক্ত ছিলেন।

এই বৈঠকে মহাসচিব ছাড়াও খন্দকার মোশাররফ হোসেন, মওদুদ আহমদ, জমিরউদ্দিন সরকার, মির্জা আব্বাস, গয়েশ্বর চন্দ্র রায়, আবদুল মঈন খান, নজরুল ইসলাম খান, সেলিমা রহমান ও ইকবাল হাসান মাহমুদ টুকু ছিলেন।

বয়সসীমা তুলে দেওয়ার দাবিতে বিক্ষুব্ধ নেতা-কর্মীদের আন্দোলনে সৃষ্ট সংকট সমাধানে কি হয়েছে প্রশ্ন করা হলে মির্জা ফখরুল বলেন, এগুলোর বিষয়ে যাদের দায়িত্ব রয়েছে তারা তাদের দায়িত্ব পালন করবেন। ছাত্রদলের ব্যাপারে যাদের দায়িত্ব আছে তারাই পরে আপনাদের জানাবেন।

মুক্তিযোদ্ধা মন্ত্রী আ ক ম মোজাম্মেল হক প্রয়াত রাষ্ট্রপতি জিয়াউর রহমানের কবর সরিয়ে নেওয়ার বিষয়ে যে বক্তব্য রেখেছেন তা নিয়ে প্রতিক্রিয়া জানতে চাইলে মির্জা ফখরুল বলেন, উনি এই ধরনের কথা প্রায়ই বলেন, এই ধরনের কথা আগেও বলেছেন। আমরা মনে করি যে, তাদের যে রাজনৈতিক দেউলিয়াপনা এসব তারই বহিঃপ্রকাশ। তিনি বলেন, আমি মনে করি, এই ধরনের চিন্তা রাজনৈতিক কোনো চিন্তা বলে মনে হয় না।

রিফাত হত্যাকাণ্ড: সরকারের ব্যর্থতা ও উদাসীনতা

সংবাদ ব্রিফিংয়ে বিএনপি মহাসচিব বরগুনায় রিফাত হত্যাকাণ্ডের ঘটনার নিন্দা জানিয়ে বলেন, সভায় রিফাত হত্যাকাণ্ডের নিন্দা জানানো হয়েছে। সাম্প্রতিককালে এই ধরনের হত্যাকাণ্ড আইনশৃঙ্খলা রক্ষাকারী বাহিনী তথা সরকারের ব্যর্থতা ও উদাসীনতার পরিচয় দিচ্ছে বলে সভা মনে করে। যেহেতু এই সরকার জনগণের দ্বারা নির্বাচিত নয়, ফলে কোনো জবাবদিহি নেই। সে জন্য রাষ্ট্রের প্রতিষ্ঠানগুলো যেভাবে বিগত ৩০ ডিসেম্বরের নির্বাচন সন্ত্রাস ও অস্ত্রের মুখে জনগণের অধিকার হরণ করেছে, সেহেতু রাষ্ট্রের প্রতি জনগণের আস্থা হারিয়ে যাচ্ছে।

বিএনপির স্থায়ী কমিটি মনে করে ক্রমান্বয়ে বাংলাদেশ একটি ব্যর্থ রাষ্ট্রে পরিণত হতে চলেছে এবং একটা চরম অর্থনৈতিক, রাজনৈতিক ও সামাজিক সংকট বিরাজ করছে দেশে। সভা মনে করে, এই সংকট নিরসনের একমাত্র উপায় হচ্ছে, যিনি সারা জীবন গণতন্ত্রের লড়াই করেছে খালেদা জিয়াসহ রাজনৈতিক কারণে যে সমস্ত নেতা-কর্মীকে বন্দী করে রাখা হয়েছে তাদের মুক্তি এবং অবিলম্বে একটি নিরপেক্ষ সরকারের অধীনে অবাধ ও সুষ্ঠু নির্বাচনের মাধ্যমে জনগণের সংসদ গঠন করা।