কলেজে পড়ার স্বপ্নটা সড়কে পিষ্ট হলো

এবারে এসএসসি পরীক্ষা পাসের বহু আগেই কলেজে পড়ার স্বপ্নটি দেখেছিল দিনাজপুরের পার্বতীপুর উপজেলার কামরুজ্জামান নয়ন। এসএসসি পাসের স্বপ্নটি নিজের করে পাওয়ার দূরত্ব ছিল বাড়ি থেকে কলেজ যাওয়ার পথটুকুই। তবে এই দূরত্বটুকু পাড়ি দিতে পারেনি নয়ন। কলেজে যাওয়ার পথেই স্বপ্নটা সঙ্গে নিয়ে নয়ন পিষ্ট হয়ে গেলে সড়কে। আজ বেলা ১১টার দিকে কলেজে ভর্তি হতে যাওয়ার পথে এক পিকআপের ধাক্কায় মৃত্যু হয়েছে নয়নের।

নিহত কামরুজ্জামান নয়ন পার্বতীপুর উপজেলার আনন্দ বাজার চাকলা গ্রামের আমিনুল হকের ছেলে। পার্বতীপুর উপজেলার পাটিকাঘাট উচ্চবিদ্যালয় থেকে এবার এসএসসি পাস করেছিল নয়ন।

কামরুজ্জামানের পরিবার জানায়, কলেজে ভর্তি হওয়ার উদ্দেশ্যে সোমবার বেলা ১১টার দিকে নয়ন প্রয়োজনীয় কাগজপত্রসহ বাড়ি থেকে বের হয়। সে যাচ্ছিল ফুলবাড়ি উপজেলার ফুলবাড়ি শহীদ স্মৃতি আদর্শ ডিগ্রি কলেজে ভর্তি হতে। এ জন্য বাইসাইকেলে চড়ে কলেজে যাচ্ছিল। তবে দুপুর ১২টার দিকে ফুলবাড়ি পৌর শহরের হাসপাতাল মোড়ে পৌঁছালে একটি পিকআপ তাকে ধাক্কা দিয়ে পালিয়ে যায়।

ফুলবাড়ি থানার ভারপ্রাপ্ত কর্মকর্তা মো. ফকরুল ইসলাম বলেন, হাসপাতাল মোড় এলাকায় পৌঁছালে পেছন থেকে একটি মালবাহী পিকআপ নয়নকে ধাক্কা দেয়। এতে রাস্তায় ছিটকে পড়ে ঘটনাস্থলেই তার মৃত্যু হয়। অন্যদিকে দ্রুতবেগে পিকআপ চালিয়ে পালিয়ে যান চালক। এ জন৵ পিকআপটিকে আটক করা সম্ভব হয়নি।

নয়নের নিহতের ঘটনায় প্রায় ঘণ্টাব্যাপী দিনাজপুর-ঢাকা মহাসড়ক অবরোধ করে রাখেন উত্তেজিত এলাকাবাসী। পরে উপজেলা নির্বাহী কর্মকর্তা আবদুস সালাম চৌধুরী ও ফুলবাড়ি থানার ভারপ্রাপ্ত কর্মকর্তা মো. ফকরুল ইসলাম ঘটনাস্থলে পৌঁছে পরিস্থিতি নিয়ন্ত্রণে আনেন।

এদিকে দিনাজপুরের বীরগঞ্জ উপজেলার বেলতলী নামক স্থানে বালুভর্তি ট্রাক্টরের ধাক্কায় দুই ছাত্র নিহত হয়েছে।

নিহত দুজন হলো বীরগঞ্জ উপজেলার পাল্টাপুর ইউনিয়নের ভোগডুমা গ্রামের আবদুল লতিফের ছেলে মো. মারুফ (১৪) এবং অন্যজন একই ইউনিয়নের সনকা গ্রামের আনারুল ইসলামের ছেলে মো. রানা (১৭)। তারা উভয়ে উপজেলার সনকা উচ্চবিদ্যালয়ের নবম শ্রেণির ছাত্র।

প্রত্যক্ষদর্শী সূত্রে জানা যায়, সোমবার বেলা ১১টার দিকে মোটরসাইকেলে চড়ে শহর থেকে বাড়ি ফিরছিল ওই দুই ছাত্র। বেলতলী নামের স্থানে পৌঁছালে বিপরীত দিকে থেকে আসা বালুভর্তি একটি ট্রাক্টরের সঙ্গে তাদের মোটরসাইকেলটির ধাক্কা লাগে। গুরুতর আহত অবস্থায় স্থানীয় লোকজন তাদের উদ্ধার করে বীরগঞ্জ উপজেলা স্বাস্থ্য কমপ্লেক্সে নিয়ে যান। সেখানে কর্তব্যরত চিকিৎসক ডা. ফারজানা খাতুন তাদের মৃত ঘোষণা করেন।

বীরগঞ্জ থানার অফিসার ইনচার্জ সাকিলা পারভীন বলেন, ‘স্থানীয় জনগণ ট্রাক্টরটিকে আটক করে পুলিশের হেফাজতে দিয়েছে। তবে ট্রাক্টরের চালক ও হেলপার পলিয়ে যেতে সক্ষম হয়েছে।’