'গ্যাসের দাম বাড়িয়ে জনগণকে জিম্মি করছে সরকার'

গ্যাসের দাম বাড়ানোর প্রতিবাদে প্রেসক্লাবের সামনে বিক্ষোভ মিছিল করে সিপিবির নেতা–কর্মীরা। ঢাকা, ১ জুলাই। ছবি: সাজিদ হোসেন
গ্যাসের দাম বাড়ানোর প্রতিবাদে প্রেসক্লাবের সামনে বিক্ষোভ মিছিল করে সিপিবির নেতা–কর্মীরা। ঢাকা, ১ জুলাই। ছবি: সাজিদ হোসেন

গ্যাসের দাম বাড়ানোর প্রতিবাদে বিক্ষোভ মিছিল করেছে ৩টি বাম রাজনৈতিক দল। তাঁরা বলছে, গ্যাসের দাম বাড়ানো হলে উৎপাদনশীল খাতে প্রভাব ফেলবে। জনগণের জীবন দুর্বিষহ করতেই সরকার গ্যাসের দাম বাড়িয়েছে, দামবৃদ্ধির দায় চাপাচ্ছে।

আজ সোমবার বিকেলে রাজধানীর জাতীয় প্রেসক্লাবের সামনের সড়কে বিক্ষোভ মিছিল ও সমাবেশ করেছে বাংলাদেশের কমিউনিস্ট পার্টি (সিপিবি), বাংলাদেশের ওয়ার্কার্স পার্টি ও গণসংহতি আন্দোলন।

বিক্ষোভ মিছিল শেষে সমাবেশে সিপিবির কেন্দ্রীয় সম্পাদক পরিষদের সদস্য রুহিন হোসেন প্রিন্স বলেন, গ্যাস সম্পদকে জিম্মি করে গ্যাস আমদানি করে এর সুবিধা ভোগ করবে দেশি-বিদেশি লুটেরা ব্যবসায়ীরা। তাইতো ব্যবসায়ীদের স্বার্থ রক্ষার্থে গ্যাসের দাম বাড়িয়ে জনগণকে জিম্মি করছে সরকার। একদিকে বাজেটে কর বসিয়ে জনগণের পকেট কাটা হয়েছে, আরেকদিকে গ্যাসের দাম বাড়িয়ে পকেট উজার করা হচ্ছে। ঐক্যবদ্ধ প্রতিরোধের মধ্য দিয়ে এই অন্যায়, অযৌক্তিক সিদ্ধান্ত ঠেকাতে হবে। গ্যাসের দাম বাড়ানোর প্রতিবাদে সিপিবির পক্ষ থেকে ৬ জুলাই পর্যন্ত টানা বিক্ষোভ চলবে বলে জানান তিনি।
সভাপতির বক্তব্যে শ্রমিকনেতা আবদুল কাদের বলেন, এই সরকারের অন্যায় সিদ্ধান্তের বিরুদ্ধে হরতাল ডাকা হয়েছে। বিক্ষোভ ও পথসভার মাধ্যমে প্রতিবাদ করতে হবে। সরকার যদি বাধা দেয়, তাহলে এর চেয়ে বৃহত্তর আন্দোলন করা হবে।

এইক সময় বিক্ষোভ মিছিল শেষে সংক্ষিপ্ত সমাবেশে গণসংহতি আন্দোলনের প্রধান সমন্বয়কারী জোনায়েদ সাকি বলেন, জনগণের ওপর দামবৃদ্ধির দায় চাপিয়ে দিচ্ছে সরকার। গ্যাসের দামিবৃদ্ধির ফলে জনগণের নাভিশ্বাস উঠবে, দেশের শিল্প, কল–কারখানা, কৃষি সামগ্রিকভাবে উৎপাদন ব্যবস্থা বিপর্যয়ের মুখে পড়বে, প্রতিযোগিতায় মার খাবে। এর পেছনে যুক্তি দিচ্ছে, গ্যাস নাকি নেই, বিপুল দামে ভর্তুকি নাকি দিচ্ছে।
জোনায়েদ সাকি বলেন, মানুষের সংকটকে পুঁজি করে ব্যবসার এই ফাঁদ আমরা আগে বিদ্যুতের ক্ষেত্রে দেখেছি। এখন গ্যাসের ক্ষেত্রে তা চলছে। এইভাবে তারা জনগণের পকেটের টাকা হাতিয়ে নিয়ে লুটপাটের সরবরাহ করছে।

বিক্ষোভে গণসংহতি আন্দোলনের রাজনৈতিক পরিষদের অন্যতম নেতা ফিরোজ আহমেদ বলেন, গ্যাসের দাম বাড়লে সাধারণ মানুষ, শ্রমিক, কৃষকের জীবনের খরচ বাড়বে, পরিবহণ খরচ বাড়বে, শিল্প, কল–কারখানায় পণ্যের দাম বাড়বে। প্রত্যেকটি জিনিসের দাম বাড়বে। বাংলাদেশকে লুণ্ঠনের লীলাক্ষেত্রতে পরিণত করেছে। সরকার উন্নয়নের নামে মহালুণ্ঠন করছে।

সমাবেশে আরও বক্তব্য দেন গণসংহতি আন্দোলনের রাজনৈতিক পরিষদের অন্যতম নেতা তাসলিমা আখতার, সংগঠক আরিফ দেওয়ান, ভারপ্রাপ্ত নির্বাহী সমন্বয়কারী আবুল হাসান প্রমুখ।

প্রেসক্লাবের সামনে আরেকটি বিক্ষোভ করেছে বাংলাদেশের ওয়ার্কার্স পার্টি। গ্যাসের মূল্যবৃদ্ধির প্রতিবাদে দলটির মহানগর কমিটি এই বিক্ষোভের আয়োজন করে। বিক্ষোভে বাংলাদেশের ওয়ার্কার্স পার্টির মহানগর কমিটির সভাপতি আবুল হোসাইন বলেন, ‘সরকারের গ্যাসের মূল্যবৃদ্ধি সিদ্ধান্ত আমরা মানি না, মানব না। এভাবে চাপিয়ে না দিয়ে গ্যাসের দাম বাড়ানোর সিদ্ধান্ত থেকে অবিলম্বে সরকারের সরে আসা উচিত।’
বিক্ষোভকারীরা বলেন, কোনো প্রকার আলোচনা ও যুক্তি–তর্ক ছাড়াই সরকার গ্যাসের দাম বাড়িয়েছে। এতে করে মানুষের মধ্যে শান্তির পরিবেশ আর থাকবে না।
সমাবেশে দলটির পলিটব্যুরোর সদস্য কামরুল আহসান, কেন্দ্রীয় কমিটির সদস্য মোস্তফা আলমগীর প্রমুখ বক্তব্য দেন।