কে এল না এল তা বিবেচ্য নয়: অলি

অলি আহমদ। ফাইল ছবি
অলি আহমদ। ফাইল ছবি

জাতীয় মুক্তি মঞ্চের উদ্যোক্তা কর্নেল (অব.) অলি আহমদ বলেছেন, ‘জাতিকে মুক্তি দেওয়ার জন্য জাতীয় মুক্তি মঞ্চ করেছি। চট্টগ্রাম থেকেই এর কর্মসূচি শুরু করলাম। সারা দেশে যাব। কে এল না এল তা বিবেচ্য নয়।’

পুনর্নির্বাচন এবং খালেদা জিয়ার মুক্তি দাবিতে জাতীয় মুক্তি মঞ্চের প্রথম আলোচনা সভায় প্রধান অতিথির বক্তব্যে লিবারেল ডেমোক্রেটিক পার্টির (এলডিপি) সভাপতি অলি আহমদ এ কথা বলেন। চট্টগ্রাম নগরের প্রেস ক্লাবের বঙ্গবন্ধু মিলনায়তনে আজ সোমবার বিকেলে এই সভা অনুষ্ঠিত হয়। এতে সভাপতিত্ব করেন বাংলাদেশ কল্যাণ পার্টির সভাপতি মেজর জেনারেল (অব.) সৈয়দ মুহাম্মদ ইবরাহিম।

বিএনপি সরকারের সাবেক এই মন্ত্রী বলেন, ‘মানুষ বিচার পাচ্ছে না। ভোটের অধিকার নেই। কৃষক ন্যায্যমূল্য পাচ্ছে না। জনগণের ওপর করের বোঝা চাপিয়ে দেওয়া হয়েছে। জনগণ আজ কষ্টে আছে। জাতীয় মুক্তি মঞ্চের মাধ্যমে তাদের মুক্ত করতে চাই।’

গত ২৭ জুন ঢাকায় সংবাদ সম্মেলনের মাধ্যমে জাতীয় মুক্তি মঞ্চ আত্মপ্রকাশ করে। এরপর তাদের প্রথম কর্মসূচি গতকাল চট্টগ্রামে অনুষ্ঠিত হয়। এলডিপি, কল্যাণ পার্টি ছাড়াও জাতীয় গণতান্ত্রিক পার্টি এবং জাতীয় দলের প্রতিনিধি সভায় বক্তব্য রাখেন। নগর বিএনপির প্রতিষ্ঠাতা সাধারণ সম্পাদক জাহাঙ্গীর আলম, বিএনপির নেতা ইসমাইল হোসেন বেঙ্গলও বক্তব্য দেন।

অলি আহমদ জাতীয় মুক্ত মঞ্চ প্রতিষ্ঠার প্রেক্ষাপট তুলে ধরে বলেন, ‘মুক্তিযুদ্ধে কারও গান শুনে যাইনি। সেদিন প্রথম ক্যাপ্টেন হিসেবে বিদ্রোহ করেছিলাম। আজ আবার জাতিকে মুক্তি দেওয়ার জন্য জাতীয় মুক্তি মঞ্চ করেছি। চট্টগ্রাম থেকেই এর কর্মসূচি শুরু করলাম। সারা দেশে যাব। কে এল না এল তা বিবেচ্য নয়।’
অলি বলেন, ‘বিএনপির পাশাপাশি সরকারি দলও আমাদের স্বাগত জানিয়েছে। এটা ব্যতিক্রম। আমরা শুধু চাই জনগণের অধিকার প্রতিষ্ঠা করতে। জাতিকে বিভক্ত নয়, ঐক্যবদ্ধ করতে চাই।’
তিনি বলেন, ‘মুক্তি মঞ্চ কোনো সন্ত্রাসী কর্মকাণ্ডে লিপ্ত হবে না। আমরা কাউকে ব্যঙ্গ করে বিদ্রূপ করে স্লোগান দেব না। কোনো অসভ্য স্লোগান যেন কর্মীরা না দেয়। একটা রাজনৈতিক সুবাতাস আসুক। জাতীয়তাবাদী সকল শক্তিকে নিয়ে কাঁধে কাঁধ মিলিয়ে থাকব।’

মুক্তি মঞ্চের ১৮ দফা দাবি তুলে ধরে অলি আহমদ বলেন, ‘ডিসেম্বরে প্রহসনের নির্বাচন হয়েছে। আমরা পুনর্নির্বাচন দাবি করছি, পাশাপাশি খালেদা জিয়ার মুক্তির দাবি জানাচ্ছি। আসুন মুক্তিযুদ্ধের চেতনা বাস্তবায়ন করি। সে চেতনা মানুষকে মুক্তির মাধ্যমে করতে হবে।’
সৈয়দ মুহাম্মদ ইবরাহিম বলেন, ‘২০–দলীয় জোটে ছিলাম, আছি, থাকব। আমাদের মধ্যে মতের পার্থক্য ছিল। তিন মাস আগে থেকে মতের পার্থক্য হয়। আমরা বলি আন্দোলনে নামুন। তারা বলে “না”। খালেদা জিয়া জেলখানায়, আমার কইলজা ফেটে যায়। উনি কারাগারে ওনার দোষে নয়, আমাদের দোষে। রাজনৈতিক সহকর্মীদের দোষে।’

তিনি আরও বলেন, ‘হতাশ হলে চলবে না। জাতীয় মুক্তি মঞ্চের মাধ্যমে একনায়কতন্ত্র, স্বৈরতন্ত্র, জেল জুলুম থেকে মুক্তি মিলবে। আমরা জীবন বিপন্ন করে স্বাধীনতা এনেছিলাম। এখন মুক্তির স্বপ্ন দেখাচ্ছেন অলি আহমদ।’

আলোচনা সভায় জাতীয় দলের সভাপতি এহসানুল হুদা, জাগপার সহসভাপতি রাশেদ প্রধান, এলডিপির সভাপতিমণ্ডলীর সদস্য নুরুল আলম, এলডিপির যুগ্ম মহাসচিব শাহদাত হোসেন সেলিম ও সফিউল আলম, জাগপার সহসভাপতি আবু মোজাফফর মো. আনাছ, কল্যাণ পার্টির মো ইলিয়াস, মোয়াজ্জেম হোসেন, এলডিপির এস এম নিজাম উদ্দিন, দীবাকর দেওয়ান প্রমুখ বক্তব্য দেন।