বন্ধুর বিয়ের টাকার জন্য খুনে জড়ান তিনজন

প্রতীকী ছবি
প্রতীকী ছবি

বিয়ের টাকা জোগাড় করার জন্য চালককে হত্যা করে অটোরিকশা ছিনতাইয়ের চেষ্টা করেন তিন বন্ধু। ফেনীর সোনাগাজীতে অটোরিকশাচালক নুর আলম হত্যা মামলায় গ্রেপ্তার হওয়ার প্রধান আসামি মেহেদী হাসান ওরফে জনি (২০) আদালতে স্বীকারোক্তিমূলক জবানবন্দিতে এসব তথ্য দেন। গতকাল সোমবার বিকেলে ফেনীর জ্যেষ্ঠ বিচারিক হাকিম মো. জাকির হোসাইনের আদালতে তাঁর জবানবন্দি নেওয়া হয়। 

পুলিশ জানায়, তথ্যপ্রযুক্তির ব্যবহারের মাধ্যমে গত শনিবার রাতে নেত্রকোনা জেলার কলমাকান্দা উপজেলার লেঙ্গুয়া বাজার এলাকা থেকে অটোরিকশাচালক হত্যা মামলার প্রধান আসামি মেহেদী হাসানকে গ্রেপ্তার করা হয়। 

জবানবন্দিতে মেহেদী হাসান আদালতকে হত্যাকাণ্ডের দায় স্বীকার করে বলেন, তিনি সোনাগাজী উপজেলার বগাদানা ইউনিয়নের ওসমানীয়া আলিম মাদ্রাসায় আলিম শ্রেণিতে পড়েন। গত সাত-আট মাস আগে ফেসবুকের মাধ্যমে নারায়ণগঞ্জের একটি মেয়ের সঙ্গে প্রেমের সম্পর্ক গড়ে ওঠে। 

এরপর তাঁর সঙ্গে মুঠোফোনে কথাবার্তা হতে থাকে। গত কিছুদিন আগ থেকে মেয়েটি তাঁকে বিয়ের জন্য চাপ দেয়। ঘটনার সপ্তাহ খানেক আগে মেয়েটি ফেনী চলে আসেন। এরপর বিয়ের টাকা সংগ্রহের জন্য বন্ধুদের সঙ্গে পরামর্শ করেন। তখন বন্ধু মিনহাজ পরামর্শ দেন তাঁর সঙ্গে কুঠিরহাট এলাকার নুর আলম নামে এক অটোরিকশাচালকের দ্বন্দ্ব রয়েছে। তাঁর অটোরিকশাটি চুরি বা ছিনতাই করে বিক্রি করে টাকা পাওয়া যাবে। পরে ঘটনার দিন রাতে মেহেদী হাসানসহ দুই বন্ধু নুর আলমের অটোরিকশাটি ভাড়া করে মিয়াজিঘাট এলাকায় যান। পথিমধ্যে মিনহাজও তাঁদের সঙ্গে যোগ দেন। অটোরিকশাটি মিয়াজিঘাট এলাকায় গেলে পেছন দিক থেকে মেহেদী হাসান ধারালো অস্ত্র দিয়ে চালক নুর আলমের গলা কেটে দেন। রক্তাক্ত অবস্থায় বাঁচাও বাঁচাও চিৎকার করেন নুর আলম। এ সময় ভয়ে তাঁরা তিনজন পালিয়ে যান। ধরা পড়ার ভয়ে মেহেদী হাসান নেত্রকোনার কলমাকান্দা উপজেলার লেঙ্গুয়া বাজার এলাকায় তাঁর ভাইয়ের বন্ধুর বাড়িতে গিয়ে আশ্রয় নেন।

 মামলার তদন্ত কর্মকর্তা ও সোনাগাজী মডেল থানার উপপরিদর্শক (এসআই) আনোয়ার হুসেন প্রথম আলোকে বলেন, মেহেদী হাসানকে ফেনীর কারাগারে পাঠানো হয়েছে। এর আগে গত ২২ জুন বিকেলে উপজেলার চর বদরপুর এলাকা থেকে একই ঘটনায় জড়িত অপর আসামি মো. মিনহাজকে গ্রেপ্তার করা হয়। তিনি আদালতে জবানবন্দি দিয়েছেন। 

প্রসঙ্গত, গত ১৯ জুন বুধবার রাতে উপজেলার চর মজলিশপুর ইউনিয়নের মিয়াজিঘাট এলাকায় নুর আলম (৩০) নামে এক অটোরিকশাচালককে গলা কেটে হত্যা করা হয়। এ ঘটনায় ২০ জুন রাতে নুর আলমের বাবা নুর নবী বাদী হয়ে অজ্ঞাতপরিচয়ের দুর্বৃত্তদের আসামি করে থানায় একটি হত্যা মামলা করেন।