ফারাজ স্মরণে দোয়া মাহফিল

ফারাজ আইয়াজ হোসেন স্মরণে আয়োজিত মিলাদ মাহফিলে বক্তব্য দেন তাঁর বড় ভাই যারেফ আয়াত হোসেন। গতকাল গুলশানে তাঁর নানা লতিফুর রহমানের বাসভবনে।  ছবি: প্রথম আলো
ফারাজ আইয়াজ হোসেন স্মরণে আয়োজিত মিলাদ মাহফিলে বক্তব্য দেন তাঁর বড় ভাই যারেফ আয়াত হোসেন। গতকাল গুলশানে তাঁর নানা লতিফুর রহমানের বাসভবনে। ছবি: প্রথম আলো

গুলশানে হোলি আর্টিজান বেকারিতে জঙ্গি হামলায় নিহত ফারাজ আইয়াজ হোসেনের আত্মার মাগফিরাত কামনা করে মিলাদ মাহফিল ও দোয়া অনুষ্ঠিত হয়েছে।

গতকাল সোমবার আসরের নামাজের পর ফারাজের নানা লতিফুর রহমানের বাসভবনে এই দোয়া মাহফিল হয়। ফারাজের পরিবারের সদস্যরা ছাড়াও বিশিষ্ট ব্যক্তিরা এবং ট্রান্সকম গ্রুপের বিভিন্ন প্রতিষ্ঠানের কর্মকর্তা–কর্মচারীরা উপস্থিত ছিলেন।

দোয়া পরিচালনা করেন নারিন্দার পীর সাহেব শাহ সৈয়দ মুরাদুল্লাহ আহমেদ। তিনি বলেন, হোলি আর্টিজানে বন্ধুদের সঙ্গে খেতে গিয়েছিলেন ফারাজ হোসেন। সেখানে জঙ্গিরা হামলা চালায়। ওই সময় জঙ্গিরা ফারাজকে বলেছিল তুমি মুসলমান, তুমি চলে যাও। কিন্তু ফারাজ বন্ধুদের ছেড়ে যেতে অস্বীকার করেন। এ কারণে জঙ্গিরা তাঁকে মেরে ফেলে। বন্ধুদের জন্য কারও এ ধরনের আত্মত্যাগ শহীদের মর্যাদার সমান। তিনি শহীদের মর্যাদা পেয়েছেন।

দোয়া মাহফিলে ফারাজের বড় ভাই যারেফ আয়াত হোসেন বলেন, ‘দেশে ও দেশের বাইরে ফারাজকে আজকে স্মরণ করা হচ্ছে। যে সম্মান দিয়ে তাঁকে স্মরণ করা হচ্ছে, তাতে আমরা গর্বিত।’

এদিকে ফারাজ স্মরণে ঢাকা ছাড়াও বগুড়া, রাজশাহী, ফেনী, পটুয়াখালী, কক্সবাজার, ফরিদপুরসহ দেশের বিভিন্ন স্থানে দোয়া ও মিলাদ মাহফিল অনুষ্ঠিত হয়েছে। মিলাদ মাহফিলে ফারাজের আত্মার শান্তি কামনা করে মোনাজাত করা হয়।

বগুড়ার ফুলদীঘিতে ট্রান্সকম গ্রুপের প্রতিষ্ঠান ট্রান্সক্রাফটের ছাপাখানায় বাদ আসর মিলাদ অনুষ্ঠিত হয়। স্থানীয় চককাতুলী বাইতুল আমান জামে মসজিদের খতিব মাওলানা আবদুল মান্নান দোয়া পরিচালনা করেন। তিনি বলেন, ফারাজ হোসেন মানবতার জন্য আত্মদান করেছেন। মিলাদ মাহফিলে বগুড়ার পেপসি জামে মসজিদের পেশ ইমাম মাওলানা হাবিবুর রহমান বলেন, পবিত্র রমজান মাসে ঠান্ডা মাথায় ফারাজের মতো এতগুলো নিরপরাধ মানুষকে যারা হত্যা করতে পারে, তারা ইসলামের শত্রু।

নওগাঁর নিয়ামতপুর উপজেলার গুড়িহারী গ্রামে অবস্থিত ফারাজ স্মৃতি পাঠাগারে ফারাজ হোসেনের মৃত্যুবার্ষিকী উপলক্ষে আলোচনা সভা হয়েছে। কক্সবাজারে স্মরণসভা ও মিলাদ মাহফিল হয় শহরের আলীরজাহানস্থ ট্রান্সকম ডিস্ট্রিবিউশন কোম্পানির কার্যালয়ে।

স্মরণসভায় বক্তারা বলেন, ‘হামলাকারী জঙ্গিরা সেদিন ফারাজকে চলে যেতে বলেছিল। কিন্তু তিনি বন্ধুদের মৃত্যুর মুখে রেখে একা চলে যেতে রাজি হননি। জীবন দিয়ে তিনি প্রমাণ করে গেছেন, শান্তি ও সৌভ্রাতৃত্বই আমাদের আদর্শ। তাঁর এই আত্মদান বৃথা যায়নি।’ মিলাদ ও দোয়া মাহফিল পরিচালনা করেন আলীরজাহাল জামে মসজিদের পেশ ইমাম মাওলানা আজিজুল হক।

ট্রান্সকম ডিস্ট্রিবিউশন, ফেনী শাখার আয়োজনে মিলাদ ও দোয়া মাহফিলে বলা হয়, শহীদ ফারাজের আত্মত্যাগ বৃথা যাবে না। তিনি শান্তি ও সৌভ্রাতৃত্ববোধের এক উজ্জ্বল দৃষ্ঠান্ত স্থাপন করে গেছেন। ফরিদপুরে দোয়া ও মিলাদ পরিচালনা করেন শহরের চৌরঙ্গী জামে মসজিদের ইমাম মো. মোশারফ হোসেন।

পটুয়াখালী শহরের কালিকাপুর যুব সংসদ সড়কে ট্রান্সকম ডিস্ট্রিবিউশন কোম্পানি লিমিটেড কার্যালয়ে মিলাদ ও দোয়া পরিচালনা করেন কলাবাগান বাবরি জামে মসজিদের খতিব মাওলানা মো. হাবিবুর রহমান।

এ ছাড়া চাঁদপুর, ব্রাহ্মণবাড়িয়াসহ দেশের বিভিন্ন স্থানে ট্রান্সকম ডিস্ট্রিবিউশন কোম্পানি লিমিটেডের আয়োজনে দোয়া ও মিলাদ মাহফিল অনুষ্ঠিত হয়েছে।