শাস্তিতে হ্যাটট্রিক, খুশি মা ও স্ত্রী

পরপর তিনবার ভ্রাম্যমাণ আদালতের মাধ্যমে শাস্তি পেয়ে হ্যাটট্রিক করেছেন রাজশাহীর বাগমারার এক মাদকাসক্ত ব্যক্তি। দণ্ডপ্রাপ্ত এই ব্যক্তির নাম মামুন হোসেন (৩২)। তিনি উপজেলার তাহেরপুর মহল্লার বাসিন্দা।

মা ও স্ত্রীর অভিযোগের পরিপ্রেক্ষিতে মামুনকে মাদকদ্রব্যসহ আটক করে পুলিশ। পরে আজ মঙ্গলবার তাঁকে ভ্রাম্যমাণ আদালতের মাধ্যমে ছয় মাসের কারাদণ্ড দেওয়া হয়। এই রায়ে সন্তোষ প্রকাশ করেছেন দণ্ডপ্রাপ্ত মামুনের মা ও স্ত্রী।

দণ্ডপ্রাপ্ত মামুন হোসেনের মা মর্জিনা বেগম বলেন, তাঁর ছেলে কয়েক বছর আগে মাদকাসক্ত হয়ে পড়েন। পারিবারিকভাবে ছেলেকে মাদকের ছোবল থেকে ফেরানোর চেষ্টা করা হয়। তবে তাঁকে ফেরানো যায়নি। এর আগে দুই দফায় মাদক সেবন করা অবস্থায় পুলিশ তাঁকে আটক করে। পরে ভ্রাম্যমাণ আদালতের মাধ্যমে এক মাস করে কারাদণ্ড দেওয়া হয়। কারাভোগের পর সম্প্রতি বাড়িতে ফিরে এসে আবারও মাদক সেবন শুরু করেন মামুন। মাদক সেবন থেকে বিরত রাখতে পরিবারের লোকজন বিভিন্নভাবে চেষ্টা চালিয়ে আসছিলেন। উল্টো মাদকের টাকার জন্য তিনি স্ত্রী, অষ্টম শ্রেণিতে পড়া এক মেয়ে ও মাকে শারীরিক ও মানসিকভাবে নির্যাতন শুরু করেন। নিরুপায় হয়ে স্ত্রী ও মা বাগমারা উপজেলা নির্বাহী কর্মকর্তার কাছে অভিযোগ দেন। উপজেলা নির্বাহী কর্মকর্তা বাগমারা থানার পুলিশকে বিষয়টি তদন্ত করার নির্দেশ দেন।

নির্দেশ পেয়ে মঙ্গলবার সকালে তাহেরপুর ক্যাম্পের পুলিশ স্থানীয় একটি উচ্চবিদ্যালয়ের মাঠ থেকে নেশাগ্রস্ত অবস্থায় মামুনকে আটক করে। এ সময় তাঁর কাছ থেকে এক পুরিয়া গাঁজা উদ্ধার করা হয়। দুপুরে উপজেলা নির্বাহী কর্মকর্তার দপ্তরে হাজির করা হয়। সেখানে উপজেলা নির্বাহী কর্মকর্তা ভ্রাম্যমাণ আদালত বসান। এ সময় তাঁর বিরুদ্ধে মা ও স্ত্রী সাক্ষ্য দেন। অভিযুক্ত মামুন হোসেনও আদালতের কাছে অকপটে মাদক সেবনের কথা স্বীকার করেন। পরে আদালতের বিচারক নির্বাহী হাকিম জাকিউল ইসলাম ৬ মাসের বিনাশ্রম কারাদণ্ডের আদেশ দেন। রায়ের পর তাঁকে আদালতের মাধ্যমে কারাগারে পাঠায় পুলিশ।

মামুনের স্ত্রী ও মা রায়ে সন্তোষ প্রকাশ করে প্রথম আলোকে বলেন, ‘ভালো সাজা হয়েছে, কারাগারে থেকে এবার ভালোও হতে পারে।’

রায় ঘোষণার পর মামুন হোসেন বলেন, একই অপরাধে এ নিয়ে তিনবার ভ্রাম্যমাণ আদালত তাঁকে কারাদণ্ড দিলেন। মাদকসেবীদের ধরার জন্য পুলিশকে সহযোগিতা করতে গিয়েই তিনি মাদকাসক্ত হয়ে পড়েন। তবে তাঁর এই অভিযোগ অস্বীকার করে তাহেরপুর ক্যাম্পের কর্তব্যরত পুলিশের সহকারী উপপরিদর্শক (এএসআই) রফিকুল ইসলাম বলেন, মামুন হোসেন দীর্ঘদিন ধরে মাদকাসক্ত।