চার পরিবহনশ্রমিকের বিরুদ্ধে কলেজছাত্রীকে ধর্ষণের অভিযোগ

শরীয়তপুরের জাজিরা উপজেলার একটি কলেজের একাদশ শ্রেণির ছাত্রীকে (১৬) গণধর্ষণের অভিযোগ উঠেছে। গণধর্ষণের অভিযোগে চার যুবকের বিরুদ্ধে মামলা হয়েছে। মেয়েটির বাবা গতকাল মঙ্গলবার রাতে শরীয়তপুরের পালং মডেল থানায় মামলাটি করেন।

মামলায় ইসলাম ফকির (২২), রাকিব মণ্ডল (২২), সবুজ রাড়ি (২২) ও ইকবাল (২১) নামের চার যুবককে আসামি করা হয়েছে। ওই চার যুবক শরীয়তপুরে চলাচলকারী বাসের শ্রমিক। এর মধ্যে রাকিব মণ্ডলকে গতকাল সন্ধ্যায় আটক করে পুলিশ।

সদর উপজেলার উত্তর–মধ্যপাড়া গ্রামের একটি বাড়িতে গত রোববার রাতে ওই ছাত্রীকে ধর্ষণ করা হয়। এলাকাবাসী ওই ছাত্রীকে শরীয়তপুর বন বিভাগের পুকুরঘাট থেকে উদ্ধার করে পরিবারের কাছে পৌঁছে দেন।

পালং মডেল থানা ও স্থানীয় সূত্র জানায়, জাজিরার একটি গ্রামে থাকত মেয়েটি। রোববার বিকেলে তার এক আত্মীয়র বাড়ি যাওয়ার জন্য শরীয়তপুর জেলা শহরের বাস টার্মিনালে আসে সে। সেখানে দেখা হয় পূর্বপরিচিত পরিবহনশ্রমিক ইসলাম ফকির নামের এক যুবকের সঙ্গে। ইসলাম ওই ছাত্রীকে তার আত্মীয়ের বাড়িতে পৌঁছে দেওয়ার কথা বলে তাঁর বন্ধু রাকিব মণ্ডল ও সবুজের সঙ্গে অটোরিকশায় তুলে দেন।

রাকিব ও সবুজ মেয়েটিকে নিয়ে মনোহর বাজারে যান। সেখানে কিছু খাওয়ার পর মেয়েটিকে রাকিবের বাড়িতে নেওয়া হয়। মেয়েটির মুখ বেঁধে রাকিব ও সবুজ প্রথম দফায় ধর্ষণ করেন। রাতে সেখানে গিয়ে ইসলাম ওই মেয়েটিকে ধর্ষণ করেন। পুনরায় ধর্ষণ করা নিয়ে ইসলামের সঙ্গে রাকিব ও সবুজের কথা-কাটাকাটি হয়। তখন ইসলাম মেয়েটিকে তাঁদের বাড়ির পাশে শরীয়তপুর বন বিভাগের পুকুর ঘাটে নিয়ে যান। পুকুর ঘাটে নিয়েও মেয়েটিকে ধর্ষণ করা হয়।

পরে স্থানীয় এক অটোরিকশাচালক তাঁদের দেখতে পেয়ে এগিয়ে গেলে ইসলাম মেয়েটিকে বিয়ে করবেন—এমন প্রতিশ্রুতি দিয়ে সেখান থেকে পালিয়ে যান। ওই অটোরিকশাচালক বিষয়টি পরিবহন শ্রমিক সংগঠনের নেতাদের জানান। এলাকাবাসীর সহায়তায় মেয়েটিকে তাঁর পরিবারের সদস্যদের কাছে পৌঁছে দেন তিনি। পরিবহনশ্রমিকেরা অপরাধীদের বিচার করবেন—এমন প্রতিশ্রুতি দিয়ে মেয়েটির পরিবারকে থানায় যেতে বাধা দেয়।

গতকাল মঙ্গলবার রাকিব মণ্ডলকে বাস টার্মিনালে দেখতে পেয়ে শরীয়তপুর আন্তজেলা সড়ক পরিবহন শ্রমিক ইউনিয়নের সভাপতি ফারুক চৌকিদার আটক করে পুলিশে তুলে দেন।

ধর্ষণের শিকার ওই ছাত্রী দোষী ব্যক্তিদের দৃষ্টান্তমূলক শাস্তি দাবি করেছেন।

পালং থানাহাজতে আটক রাকিব মণ্ডল বলেন, ‘আমি মেয়েটির সঙ্গে কিছু করিনি। ইসলাম ও সবুজ তাকে ধর্ষণ করেছে। তারাই ওই মেয়েটিকে আমার বাড়িতে নিয়ে গিয়েছিল। আমি নির্দোষ। ইসলাম ও সবুজ কোথায় আছে, তা আমি জানি না।’

পালং মডেল থানার ভারপ্রাপ্ত কর্মকর্তা (ওসি) মো. আসলাম উদ্দিন বলেন, তিন পরিবহনশ্রমিক মিলে একটি মেয়েকে ধর্ষণ করেছেন ও আরেক শ্রমিক তাঁদের সহায়তা করেছেন। অভিযোগ পেয়ে একজনকে আটক করা হয়েছে। মামলার অন্য আসামিদের গ্রেপ্তারের চেষ্টা চলছে। শরীয়তপুর সদর হাসপাতালে মেয়েটির ডাক্তারি পরীক্ষা সম্পন্ন হয়েছে। গ্রেপ্তার রাকিবকে আজ আদালতের মাধ্যমে জেলা কারাগারে পাঠানো হয়েছে।