আড়ি পাতা ফাঁদে দুই পুলিশের ঘুষ নেওয়ার অভিযোগ

পুলিশের দুই সহকারী উপপরিদর্শককে (এএসআই) স্ট্যান্ড রিলিজ (তাৎক্ষণিক প্রত্যাহার) করা হয়েছে। পুলিশের একটি সূত্র বলছে, কনস্টেবল নিয়োগে ঘুষ লেনদেন ঠেকাতে পুলিশ বাহিনীর সদস্যদের মুঠোফোনে আড়ি পাতা হয়েছিল। পুলিশ সদর দপ্তরের সেই আড়ি পাতার ফাঁদে ধরা পড়েছেন জেলা পুলিশের গোয়েন্দা শাখার (ডিবি) এবং জেলা পুলিশের রিজার্ভ অফিসের দুই এএসআই।

গতকাল বুধবার পুলিশ সদর দপ্তরের এক আদেশে তাঁদের বগুড়া থেকে চট্টগ্রাম রেঞ্জে স্ট্যান্ড রিলিজ করা হয়। স্ট্যান্ড রিলিজ হওয়া দুই কর্মকর্তা হলেন বগুড়া ডিবি পুলিশের এএসআই শওকত আলম ও রিজার্ভ অফিসের এএসআই ফারুক হোসেন।

জেলা পুলিশের একটি সূত্র জানায়, পুলিশ সদর দপ্তরের চিঠিতে স্ট্যান্ড রিলিজের কারণ উল্লেখ করা হয়নি। তবে নাম প্রকাশ না করার শর্তে পুলিশ সদর দপ্তরের একটি সূত্র বলছে, পুলিশ সদর দপ্তর টেলিফোনে আড়ি পেতে কনস্টেবল পদে নিয়োগপ্রক্রিয়ায় ঘুষ লেনদেনে জড়িত থাকার সুনির্দিষ্ট প্রমাণ পেয়েই ওই দুই এএসআইকে স্ট্যান্ড রিলিজ করা হয়েছে।

জেলা পুলিশে এ বছর সাধারণ কোটায় ৫৪ জন ও বিশেষ কোটায় ১৮৫ জন কনস্টেবল নিয়োগ হবে। গতকাল থেকে কনস্টেবল নিয়োগে প্রার্থী বাছাই শুরু হয়েছে। আজ বৃহস্পতিবার লিখিত পরীক্ষা হচ্ছে। কনস্টেবল নিয়োগে স্বচ্ছতা নিশ্চিত করতে এবার পুলিশ সদর দপ্তর থেকে জেলা পুলিশকে কঠোর নির্দেশনা দেওয়া হয়। সে অনুযায়ী, জেলা পুলিশ সুপারের পক্ষ থেকে ১০০ টাকায় কনস্টেবল নিয়োগের ঘোষণা দিয়ে মাইকিং, পোস্টার লাগানো ও লিফলেট বিতরণ করা হয়।

কনস্টেবল নিয়োগে অর্থ লেনদেনে জড়িত থাকার অভিযোগে ডিবি এর আগে বগুড়ার মোহাম্মদ আলী হাসপাতালের কর্মচারী আনোয়ার হোসেন, গাইবান্ধার পলাশবাড়ী উপজেলার আনসার বাহিনীর সদস্য জুলহাস উদ্দিন ও আহসানুল কবির নামের তিনজনকে গ্রেপ্তার করেছে।

পুলিশের একজন কর্মকর্তা প্রথম আলোকে জানান, কনস্টেবল নিয়োগে শতভাগ স্বচ্ছতা নিশ্চিত করতে পুলিশ মহাপরিদর্শক জেলা পুলিশকে কঠোর নির্দেশনা দেন। একই সঙ্গে নিয়োগে ঘুষ লেনদেনে জড়িত ব্যক্তিদের ধরতে বাহিনীর সদস্যদের মুঠোফোনে আড়ি পাতা হয়। সেই গোয়েন্দা জালে ধরা পড়েছেন বগুড়ার দুই এএসআই।

স্ট্যান্ড রিলিজ হওয়া ডিবি পুলিশের এএসআই শওকত আলম আজ সকালে মুঠোফোনে প্রথম আলোকে বলেন, পুলিশ কনস্টেবল নিয়োগে অর্থ লেনদেনের ব্যাপারে তিনি মুঠোফোনে কারও সঙ্গে কোনো কথা বলেননি। পুলিশ সদর দপ্তর কোন অপরাধে তাঁকে চট্টগ্রাম রেঞ্জে স্ট্যান্ড রিলিজ করল, সেটা বুঝতে পারছেন না তিনি। গতকাল বগুড়া থেকে স্ট্যান্ড রিলিজ করে দেওয়া হয়েছে বলেও স্বীকার করেন তিনি।

বগুড়ার পুলিশ সুপার আলী আশরাফ ভূঞা প্রথম আলোকে বলেন, ‘গতকাল পুলিশ সদর দপ্তরের চিঠি পাওয়ার পর দুই এএসআইকে তাৎক্ষণিক প্রত্যাহার করা হয়েছে। তবে পুলিশ সদর দপ্তরের আদেশে কারণ উল্লেখ না থাকায় কেন তাঁদের স্ট্যান্ড রিলিজ করা হলো, তা আমার জানা নেই।’