'যাঁরা ঐক্যের বাইরে কথা বলবেন, তাঁরা দেশের ক্ষতি করবেন'

মির্জা ফখরুল ইসলাম আলমগীর। প্রথম আলো ফাইল ছবি
মির্জা ফখরুল ইসলাম আলমগীর। প্রথম আলো ফাইল ছবি

দেশে এখন ঐক্যের কোনো বিকল্প নেই বলে মনে করেন বিএনপির মহাসচিব মির্জা ফখরুল ইসলাম আলমগীর। এ প্রসঙ্গে তিনি বলেছেন, ‘এখন যাঁরা ঐক্যের বাইরে কথা বলবেন, তাঁরা আসলে ক্ষতি করবেন দেশের, দেশের মানুষের। সবাইকে ঐক্যবদ্ধ করে গণ-আন্দোলনের মাধ্যমে খালেদা জিয়ার মুক্তির জন্য এগিয়ে আসতে হবে।’

আজ বৃহস্পতিবার দুপুরে রাজধানীর জাতীয় প্রেসক্লাবে ডক্টরস অ্যাসোসিয়েশন অব বাংলাদেশ (ড্যাব) আয়োজিত চিকিৎসক সমাবেশে এসব কথা বলেন মির্জা ফখরুল। বিএনপির চেয়ারপারসন খালেদা জিয়ার মুক্তির দাবিতে এই সমাবেশের আয়োজন করা হয়।

মির্জা ফখরুল অভিযোগ করে বলেন, একদলীয় শাসনব্যবস্থা প্রতিষ্ঠা করাই আওয়ামী লীগের লক্ষ্য। বহুদলীয় শাসনব্যবস্থা থাকলে তারা ক্ষমতায় টিকে থাকবে না।

দেশে আইনশৃঙ্খলার অবনতি ঘটছে বলে মন্তব্য করেন বিএনপির মহাসচিব। ভবিষ্যতের বাংলাদেশ গড়ার জন্য তিনি তরুণসমাজকে এগিয়ে আসার আহ্বান জানান।

প্রায় ২৫ বছর আগে পাবনার ঈশ্বরদীতে তৎকালীন বিরোধীদলীয় নেতা ও বর্তমান প্রধানমন্ত্রী শেখ হাসিনার ট্রেনে গুলিবর্ষণ ও বোমা হামলা মামলার রায় প্রসঙ্গে মির্জা ফখরুল বলেন, এই রায় প্রমাণ করে বাংলাদেশে বিচারব্যবস্থার কোনো স্বাধীনতা নেই।

মামলাটির রায় গতকাল বুধবার ঘোষণা করা হয়। রায়ে ৯ জনের মৃত্যুদণ্ডাদেশ এবং ২৫ জনের যাবজ্জীবন কারাদণ্ড দেওয়া হয়েছে। এ ছাড়া আরও ১৩ জনকে ১০ বছর করে কারাদণ্ডের রায় দিয়েছেন আদালত। সাজাপ্রাপ্ত ব্যক্তিরা সবাই বিএনপি, ছাত্রদল, যুবদলের সাবেক ও বর্তমান নেতা-কর্মী।

রায় প্রসঙ্গে মির্জা ফখরুল বলেন, ‘১৯৯৪ সালের একটি ঘটনাকে কেন্দ্র করে একটি রায় দেওয়া হয়েছে। এই রায়ে জাতি বিস্মিত। এটা কোন ধরনের রায়? দুটো গুলির শব্দ হয়েছে। কারা করেছে, কে করেছে গুলি, সেটা বিতর্কিত। ৯ জনকে ফাঁসি দেওয়া হয়েছে। ২৫ জনকে যাবজ্জীবন। দেশে বিচারিক অরাজকতা চলছে। আমরা শুধু হতাশ নই, আমরা বিক্ষুব্ধ এই রায়ে।’

প্রধানমন্ত্রী শেখ হাসিনার চলমান চীন সফর প্রসঙ্গে বিএনপির মহাসচিব বলেন, তাঁরা খুব খুশি হতেন যদি রোহিঙ্গা সমস্যা সমাধানের জন্য প্রধানমন্ত্রী চীনের প্রেসিডেন্টের সঙ্গে বসে এই ইস্যুকে প্রাধান্য দিতেন। প্রধানমন্ত্রী মেগা প্রজেক্টের চুক্তি করতে গেছেন বলে অভিযোগ করেন মির্জা ফখরুল।

খালেদা জিয়ার আমলে দেশে সংবাদমাধ্যমের স্বাধীনতা ছিল বলে দাবি করেন বিএনপির মহাসচিব। তিনি বলেন, সংবাদমাধ্যমের স্বাধীনতায় খালেদা জিয়ার অবদান রয়েছে। তিনি বিদেশি গণমাধ্যমকে দেশে আনার ব্যবস্থা করেছিলেন।

আওয়ামী লীগ সংবাদমাধ্যমের স্বাধীনতা হরণ করেছে বলে দাবি মির্জা ফখরুলের। তাঁর ভাষ্য, আওয়ামী লীগ বারবার গণতন্ত্র কেড়ে নিয়েছে। আর বিএনপি তা ফিরিয়ে দিয়েছে।

মির্জা ফখরুল বলেন, খালেদা জিয়া মিথ্যা মামলায় কারাগারে। এ ধরনের মামলায় সবাইকে জামিন দেওয়া হয়। উদাহরণ হিসেবে নাজমুল হুদা, মোফাজ্জল হোসেন মায়া, মহিউদ্দিন খান আলমগীরের কথা বলেন তিনি। খালেদা জিয়ার জামিন রাজনৈতিক প্রতিহিংসার জন্য হচ্ছে না বলে অভিযোগ করেন তিনি।

সমাবেশে সভাপতির বক্তব্যে ড্যাবের আহ্বায়ক ফরহাদ হালিম বলেন, সমাবেশ, অনশন, মানববন্ধনের মতো কর্মসূচিতে লাভ নেই। গণ-আন্দোলন করতে হবে। বিএনপির অঙ্গসংগঠনগুলোকে কর্মসূচিতে অংশ নিতে হবে।

সমাবেশে আরও উপস্থিত ছিলেন বিএনপির ভাইস চেয়ারম্যান এ জেড এম জাহিদ হোসেন, ড্যাবের সভাপতি হারুন আল রশীদ, মহাসচিব আবদুস সালাম, সদস্যসচিব ওবায়দুল কবির প্রমুখ।