টেক্সটাইলে রাসায়নিক ব্যবহারে সচেতন হতে হবে

এনভায়রনমেন্টাল সাসটেইনিবিলিটি ইন টেক্সটাইল ইন্ডাস্ট্রিজ ও বাংলাদেশ প্রকৌশল বিশ্ববিদ্যালয়ের কেমিক্যাল ইঞ্জিনিয়ারিং বিভাগ আয়োজিত টেক্সটাইল কেমিক্যাল সেফটি ও ম্যানেজমেন্ট–বিষয়ক এক কর্মশালায় বক্তারা। ৪ জুলাই, ঢাকা। ছবি: প্রথম আলো
এনভায়রনমেন্টাল সাসটেইনিবিলিটি ইন টেক্সটাইল ইন্ডাস্ট্রিজ ও বাংলাদেশ প্রকৌশল বিশ্ববিদ্যালয়ের কেমিক্যাল ইঞ্জিনিয়ারিং বিভাগ আয়োজিত টেক্সটাইল কেমিক্যাল সেফটি ও ম্যানেজমেন্ট–বিষয়ক এক কর্মশালায় বক্তারা। ৪ জুলাই, ঢাকা। ছবি: প্রথম আলো

টেক্সটাইল শিল্পে বর্তমানে প্রতিবছর ১৭ থেকে ২০ হাজার কোটি টাকার রাসায়নিক আমদানি করতে হয়। কিন্তু এর সঠিক ব্যবহার না জানার কারণে বা সচেতনতার অভাবে একদিকে যেমন রাসায়নিকের অপব্যয় হচ্ছে, আরেক দিকে পরিবেশেরও ক্ষতি হচ্ছে। এটি কমাতে রাসায়নিকের ব্যবহারে জ্ঞান অর্জন ও সচেতন হওয়া প্রয়োজন।

রাজধানীর একটি হোটেলে আজ বৃহস্পতিবার এনভায়রনমেন্টাল সাসটেইনিবিলিটি ইন টেক্সটাইল ইন্ডাস্ট্রিজ ও বাংলাদেশ প্রকৌশল বিশ্ববিদ্যালয়ের কেমিক্যাল ইঞ্জিনিয়ারিং বিভাগ আয়োজিত টেক্সটাইল কেমিক্যাল সেফটি ও ম্যানেজমেন্ট বিষয়ক এক কর্মশালায় এসব কথা বলেন বক্তারা। অনুষ্ঠানে সরকারের উচ্চপর্যায়ের কর্মকর্তা, টেক্সটাইল রাসায়নিক বিষয়ক দেশি ও বিদেশি গবেষকেরা অংশ নেন।

বক্তারা বলেন, টেক্সটাইলে যেসব রাসায়নিক ব্যবহার করা হয়, তার বেশির ভাগই আমদানি করা। এসব আমদানি করতে প্রতিবছর ১৭ থেকে ২০ হাজার কোটি টাকা খরচ হয়। এসব রাসায়নিক কতটুকু ব্যবহার করতে হবে, সেই সম্পর্কে জ্ঞানের অভাব রয়েছে। তাই অনেক সময় এর বেশি ব্যবহার হচ্ছে, যা আমাদের দেশের পরিবেশের ওপর ক্ষতিকর প্রভাব ফেলছে। আর প্রয়োজনের থেকে বেশি রাসায়নিক আমদানিতে দেশের টাকা বিদেশে চলে যাচ্ছে। তাই টাকার সাশ্রয় ও পরিবেশ রক্ষায় রাসায়নিক সম্পর্কে জ্ঞান অর্জন জরুরি। এতে অর্থ ও পরিবেশ—দুটোই রক্ষা পাবে।

কর্মশালায় বাণিজ্যসচিব মফিজুল ইসলাম, শিল্প মন্ত্রণালয়ের সচিব আবদুল হালিম, বুয়েটের কেমিক্যাল ইঞ্জিনিয়ারিং বিভাগের চেয়ারম্যান সৈয়দা সুলতানা রাজিয়া, অধ্যাপক ইজাজ হোসেন, ইয়াসির আরাফাত খান, কেমিক্যাল সেফটি ও ম্যানেজমেন্ট কর্মসূচির প্রোগ্রাম ম্যানেজার মহিদুস সামাদ খান, বিকেএমইর সিনিয়র ভাইস প্রেসিডেন্ট ফজলে শামিম এহসান, বিজেএমইর ভাইস প্রেসিডেন্ট আরশেদ জামাল, সিজিএমএস গ্লোবালের প্রধান মেহেরুন এন ইসলাম, ব্লু সাইনের কান্ট্রি রিলেশনশিপ ম্যানেজার শাহান রেজা, যুক্তরাষ্ট্রের নলেজওয়ানের প্রেসিডেন্ট ও প্রিন্সিপাল জ্যাক চোসনেক প্রমুখ বক্তব্য দেন। অনুষ্ঠান সঞ্চালনা করেন বুয়েটের কেমিক্যাল ইঞ্জিনিয়ারিং বিভাগের শিক্ষক মহিদুস সামাদ খান।

দিনব্যাপী আলোচনায় অংশ নিয়ে বক্তারা বলেন, রাসায়নিক নিয়ে স্বল্পমেয়াদি প্রশিক্ষণ হচ্ছে, কিন্তু টেকসই শিল্পোন্নয়নের জন্য প্রয়োজনীয় জ্ঞানের অভাব থেকেই যাচ্ছে। রাসায়নিকের সঠিক ব্যবহার নিশ্চিত করতে হলে টেকসই শিল্পোন্নয়নের জন্য দীর্ঘমেয়াদি জ্ঞান প্রয়োজন।

বক্তারা বলেন, শিল্পে অনেক সময় রাসায়নিকের দরকার নেই বা রাসায়নিকের বিকল্প ব্যবহার করেও সেই কাজ করা যায়, কিন্তু জ্ঞানের স্বল্পতার কারণে তা করা যাচ্ছে না। রাসায়নিকের সঠিক ব্যবহার নিশ্চিত করতে সরকারের পাশাপাশি সরকারি-বেসরকারি ও শিক্ষাদানকারী প্রতিষ্ঠানগুলোকে একসঙ্গে কাজ করতে হবে। এ ছাড়া রাসায়নিকের ব্যবহার সীমিত করতে হবে, তাহলে পরিবেশ যেমন রক্ষা পাবে তেমনি দেশে টেকসই শিল্পোন্নয়নও হবে।