নিজ দলের কর্মীকে পেটানোয় আরেক যুবলীগ কর্মী গ্রেপ্তার

যুবলীগ কর্মী মহসিনকে পেটানোর দৃশ্য। ছবি ভিডিও চিত্র থেকে নেওয়া
যুবলীগ কর্মী মহসিনকে পেটানোর দৃশ্য। ছবি ভিডিও চিত্র থেকে নেওয়া

চট্টগ্রামে যুবলীগের কর্মী মো. মহিসনকে নির্মমভাবে পেটানোর ঘটনায় জড়িত যুবলীগের আরেক কর্মীকে গ্রেপ্তার করা হয়েছে। তাঁর নাম মোশাররফ হোসেন (২৮)। আজ শুক্রবার সকালে নগরের অলঙ্কারমোড় থেকে তাঁকে গ্রেপ্তার করে আকবর শাহ থানা-পুলিশ।

যুবলীগের দলীয় সূত্রে জানা গেছে, মোশাররফ তাদের কর্মী হিসেবে পরিচিত। এর আগে এই ঘটনায় পাঁচজনকে গ্রেপ্তার করা হয়েছে। তাঁরা সবাই চট্টগ্রাম সিটি করপোরেশন উত্তর পাহাড়তলী ওয়ার্ডের কাউন্সিলর ও ওয়ার্ড আওয়ামী লীগের যুগ্ম আহ্বায়ক জহুরুল আলম জসীমের অনুসারী বলে জানা গেছে।

আকবর শাহ থানার ভারপ্রাপ্ত কর্মকর্তা (ওসি) মোস্তাফিজুর রহমান চৌধুরী প্রথম আলোকে বলেন, মহসিনকে পেটানোর ঘটনায় জড়িত মোশাররফকে গোপন তথ্যের ভিত্তিতে গ্রেপ্তার করা হয়। শুক্রবার বিকেলে আদালত তাঁকে কারাগারে পাঠিয়েছেন। কয়েক দিনের মধ্যে তাঁর বিরুদ্ধে আদালতে রিমান্ড আবেদন করা হবে। জড়িত অন্যদের গ্রেপ্তারে অভিযান অব্যাহত আছে।

গত রোববার বিকেলে নগরের আকবরশাহ থানার বিশ্ব কলোনি এলাকার এন-ব্লকে মহসিনকে নির্মমভাবে পিটানো হয় । যার একটি ভিডিও চিত্র পরদিন সামাজিক যোগাযোগ মাধ্যমে ছড়িয়ে পড়ে।

এক মিনিটি ৩৩ সেকেন্ডের ওই ভিডিওচিত্রে দেখা গেছে, একটি গলির মুখে যুবলীগ কর্মী মহসিনকে অতর্কিত মারধর করে আট থেকে দশজনের একটি দল। ওই ১০ জনের মধ্যে গ্রেপ্তার মোশাররফও রয়েছেন। তার হাতে লম্বা ছুরি। ঘটনার দিন মারধর থেকে বাঁচতে মহসিন একজনের পা ধরে রাখেন। ওই যুবকের নাম মো. জুয়েল। মহসিনকে মারধর করেন মো. তুহিন, মো. রাব্বী, মো. পারভেজ, মো. সাজু ও মো. ফারহান। সঙ্গে ছিলেন মো. খোকন। অন্যরা দেশীয় লাঠি-সোঁটা হাতে পাশে দাঁড়িয়ে আছে। পরে ‘মৃত ভেবে’ মহসিনকে ফেলে রেখে যান হামলাকারীরা।

বর্তমানে চট্টগ্রাম মেডিকেল কলেজ হাসপাতালে চিকিৎসাধীন রয়েছেন আহত মহসিন। তাঁর বিরুদ্ধে মারামারির তিনটি মামলা রয়েছে। মহসিন নগরের উত্তর পাহাড়তলী ওয়ার্ড আওয়ামী লীগের যুগ্ম আহ্বায়ক সরওয়ার মোর্শেদের অনুসারী হিসেবে পরিচিত। পুলিশও বলছে, ওই হামলার সঙ্গে জড়িত সবাই যুবলীগের কর্মী। অভ্যন্তরীণ বিরোধের জেরে হামলার এই ঘটনা।

স্থানীয়দের সূত্রে জানা গেছে, মহসিনের ওপর হামলাকারীরা সবাই উত্তর পাহাড়তলী ওয়ার্ডের কাউন্সিলর ও ওয়ার্ড আওয়ামী লীগের যুগ্ম আহ্বায়ক জহুরুল আলম জসিমের অনুসারী। গত সোমবার যে পাঁচজনকে গ্রেপ্তার করা হয় তাঁরা হলেন, মো. সাজু, মো. তারেক, বেলাল হোসেন, মো. মিরাজ ও মো. মাসুদ। এর মধ্যে সাজুর কাছ থেকে ঘটনায় ব্যবহৃত একটি লম্বা ছুরি জব্দ করেছে পুলিশ।

স্থানীয় রাজনীতিতে নেতৃত্ব দেওয়া সরওয়ার এবং জসিম চট্টগ্রাম সিটি করপোরেশনের মেয়র ও নগর আওয়ামী লীগের সাধারণ সম্পাদক আ জ ম নাছির উদ্দীনের অনুসারী হিসেবে পরিচিত। ওই ঘটনায় পুলিশ পুলিশ বাদী হয়ে অস্ত্র আইনে একটি মামলা করেছে। আহত মহিসন প্রথম আলোকে জানিয়েছেন, তিনি সুস্থ হয়ে হাসপাতাল থেকে ফেরার পর এই ঘটনায় মামলা করবেন।