সাকিবুরের চাকরিতে হাসছে পরিবার

নড়াইলে পুলিশ কনস্টেবলে চাকরি পাওয়া সাকিবুরের মা সাবিনা ইয়াসমিন এভাবেই প্রতিদিন ভ্যানে করে বাড়িতে বাড়িতে গিয়ে সবজি বিক্রি করেন। মায়ের পাশে সাকিবুর ও তাঁর ছোট ভাইবোন।  প্রথম আলো
নড়াইলে পুলিশ কনস্টেবলে চাকরি পাওয়া সাকিবুরের মা সাবিনা ইয়াসমিন এভাবেই প্রতিদিন ভ্যানে করে বাড়িতে বাড়িতে গিয়ে সবজি বিক্রি করেন। মায়ের পাশে সাকিবুর ও তাঁর ছোট ভাইবোন। প্রথম আলো

সাকিবুর রহমানরা তিন ভাইবোন। সাকিবুর এইচএসসি পরীক্ষা দিয়েছেন। অন্য দুই ভাইবোনের মধ্যে একজন দ্বাদশ শ্রেণিতে, আরেকজন সপ্তম শ্রেণিতে পড়ে। তাঁদের বাবা নেই। মা সাবিনা ইয়াসমিন ভ্যানে করে বাড়িতে বাড়িতে সবজি বিক্রি করেন। সেই উপার্জনে চলে তাঁদের চার সদস্যের সংসার।
সাকিবুর পুলিশ কনস্টেবলের চাকরি পেয়েছেন। তাই সুনির্দিষ্ট আয়ের উৎসের নাগাল পাওয়া অসহায় পরিবারটিতে বইছে খুশির বন্যা। এ যেন সাকিবুরের চাকরিতে হাসছে তাঁর পরিবার।
গত বৃহস্পতিবার বিকেল সাড়ে পাঁচটায় নড়াইলে পুলিশ কনস্টেবল নিয়োগের চূড়ান্ত ফলাফল প্রকাশ করা হয়। পুলিশ লাইন মিলনায়তনে ফলাফল ঘোষণা করেন নড়াইলের পুলিশ সুপার (এসপি) মোহাম্মদ জসিম উদ্দিন। এ সময় উপস্থিত ছিলেন নিয়োগপ্রক্রিয়া পরিচালনায় জড়িত যশোর জেলা পুলিশের অতিরিক্ত পুলিশ সুপার মো. সালাউদ্দিন শিকদার ও খুলনা জেলা পুলিশের অতিরিক্ত পুলিশ সুপার মো. নূর আলম সিদ্দিকী। লিখিত পরীক্ষায় উত্তীর্ণ ৮০ জন প্রার্থী ও তাঁদের অভিভাবকদের সামনে এ ফলাফল ঘোষণা করা হয়।
সাকিবুরদের কোনো জমিজমা নেই। বসবাস করেন নড়াইল শহরের বরাশুলায় সরকারের দেওয়া খাসজমিতে, ঝুপড়িতে। ভ্যানচালক বাবা হৃদ্‌রোগে আক্রান্ত হয়ে মারা গেছেন তিন বছর আগে। সেই থেকে অসহায় পরিবারটির হাল ধরেন মা সাবিনা ইয়াসমিন। খুশির অভিব্যক্তি প্রকাশ করত গিয়ে আবেগে কাঁদছিলেন সাবিনা। আনন্দে চোখ ছলছল করছিল সাকিবুরেরও। অশ্রুসজল হয়ে ওঠেন এসপি জসিম উদ্দিনও।
শুধু সাকিবুরের পরিবারই নয়, নিয়োগ পেয়ে আনন্দের জোয়ার বইছে পৃথা বিশ্বাস ও সুপ্তিকনা বিশ্বাসদের পরিবারেও। পৃথার বাবা প্রদীপ বিশ্বাস দিনমজুর। সেই উপার্জনে চলে সংসার। সুপ্তির বাবা সমির বিশ্বাস নড়াইল শহরে রুটি বিক্রি করে সংসার চালান। খোঁজ নিয়ে জানা গেছে, নিয়োগ পাওয়া একজন পোষ্য। অন্যরা হতদরিদ্র ও দরিদ্র কৃষক পরিবারের।