'ছেলের লাশ পেলেও মাথাটা এখনো পাইনি'

নিহত ইমন হোসেন। ছবি: কাজী আশিক রহমান।
নিহত ইমন হোসেন। ছবি: কাজী আশিক রহমান।

ইমন হত্যার বিচার দাবিতে হওয়া মানববন্ধনে দাঁড়িয়ে বাবা মো. ইসলাম মোল্লা ক্ষোভ প্রকাশ করে বলছিলেন, ‘ছেলের লাশ পেলেও মাথাটা এখনো পাইনি। হত্যার পাঁচ দিন পরেও কোনো আসামি ধরা পড়েনি।’ আজ শনিবার বেলা ১১টার দিকে মাগুরা প্রেসক্লাবের সামনে এ মানববন্ধন অনুষ্ঠিত হয়। গত মঙ্গলবার সকালে মাগুরার মহম্মদপুর উপজেলার পারুয়ারকুল গ্রামে ইমন হোসেন (২২) নামের এক তরুণের মাথাবিহীন মরদেহ উদ্ধার করে পুলিশ।

মানববন্ধনের আগে শহরের ভায়নার মোড় থেকে প্রেসক্লাব পর্যন্ত বিক্ষোভ মিছিল বের করেন নিহত ইমনের পরিবারের সদস্য ও এলাকাবাসী। এতে ইমন হত্যায় জড়িতদের আটক ও বিচারের দাবি–সংবলিত প্ল্যাকার্ড হাতে অংশ নেন কয়েক শ লোক। এ সময় ‘ইমন হত্যার বিচার চাই, জড়িতদের ফাঁসি চাই’—এ ধরনের স্লোগানও দেন তাঁরা।

মানববন্ধনে নিহত ইমনের বাবা মো. ইসলাম মোল্লা বলেন, নিখোঁজ হওয়ার আগে গত সোমবার বিকেলে সদর উপজেলার সিরিজদিয়া গ্রামের হুমায়ুন ও অনিকের সঙ্গে ছিলেন ইমন। মঙ্গলবার সকালে মহম্মদপুর উপজেলার পারুয়ারকুল গ্রামে ইমন হোসেনের মাথাবিহীন মরদেহ উদ্ধার করে পুলিশ। তাৎক্ষণিকভাবে পরিচয় না পাওয়ায় অজ্ঞাতপরিচয় হিসেবে মরদেহটি দাফন করা হয়। পরে পরিচয় নিশ্চিতের পর আদালতের মাধ্যমে বৃহস্পতিবার সন্ধ্যায় লাশ উত্তোলন করা হয়। মো. ইসলাম মোল্লা বলেন, ‘মাথাবিহীনভাবেই বাড়িতে নিয়ে ইমনের লাশ দাফন করেছি। আজ পাঁচ দিন পরও তার মাথার খোঁজ মেলেনি। কোনো আসামিও গ্রেপ্তার হয়নি।’

এ অভিযোগে মহম্মদপুর থানায় অপহরণসহ হত্যা মামলা করেছেন ইসলাম মোল্লা। সেখানে সিরিজদিয়া গ্রামের মৃত ঠান্ডু ফকিরের ছেলে হুমায়ুন ফকির (২৭), একই গ্রামের লাকু ফকিরের ছেলে অনিক ফকিরসহ অজ্ঞাতনামা কয়েকজনকে আসামি করা হয়েছে।

মামলার এজাহারে বলা হয়েছে, নিহত ইমন হোসেনের বাড়ি সদর উপজেলার চাঁদপুর গ্রামে। আসামিদের সঙ্গে নিহত ইমনের বন্ধুত্বের সম্পর্ক ছিল। এই সূত্রে কিছু অর্থ লেনদেনের ঘটনাও ঘটে। এ ছাড়া হুমায়ুনের স্ত্রীর সঙ্গে ইমনের অনৈতিক সম্পর্ক ছিল বলে সন্দেহ ছিল হুমায়ুনের। এসব বিরোধের সূত্র ধরে সন্দেহভাজনেরা ইমনকে হত্যা করেছেন বলে অভিযোগ করা হয়েছে এজাহারে।

এ বিষয়ে মাগুরার অতিরিক্ত পুলিশ সুপার মো. তারিকুল ইসলাম প্রথম আলোকে জানিয়েছেন, চাঞ্চল্যকর এই হত্যা মামলায় জড়িত ব্যক্তিদের ধরতে পুলিশ জোরালো অভিযান চালাচ্ছে। সন্দেহভাজনদের পাশাপাশি তাঁদের পরিবারের সদস্যরাও পলাতক। গুরুত্ব বিবেচনায় মামলাটি হস্তান্তর করা হচ্ছে পুলিশের গোয়েন্দা বিভাগে (ডিবি)। ইতিমধ্যে তারা তদন্তে নেমেছে।