স্ত্রীসহ সাবেক সচিবের বিরুদ্ধে মামলা

প্রায় ছয় কোটি টাকার জ্ঞাত আয়বহির্ভূত সম্পদ অর্জনের অভিযোগে সাবেক সচিব এটিএম সারওয়ার হোসেন ও তাঁর স্ত্রী নাজমা সারওয়ারের বিরুদ্ধে মামলা করেছে দুর্নীতি দমন কমিশন (দুদক)। আজ রোববার সংস্থাটির ঢাকা সমন্বিত জেলা কার্যালয়-১ এ মামলাটি করেন সহকারী পরিচালক মুহাম্মদ জয়নাল আবেদীন।

মামলার এজাহারে বলা হয়, এই দুজন পরস্পর যোগসাজশে ঘুষ ও দুর্নীতির মাধ্যমে পাঁচ কোটি ৮৪ লাখ ৫৩ হাজার ৫২২ টাকা মূল্যের জ্ঞাত আয় বহির্ভূত সম্পদ অর্জন করে তা দখলে রেখে এবং সেসব সম্পদ স্থানান্তর, হস্তান্তর ও রূপান্তর করে অপরাধ করেছেন।

দুদক সূত্র জানায়, এক-এগারোর তত্ত্বাবধায়ক সরকারের আমলে ২০০৭ সালের ৩ জুলাই এটিএম সারোয়ার হোসেনকে সম্পদ বিবরণী দেওয়ার নোটিশ জারি করে দুদক। ওই নোটিশে তাঁকে তাঁর নিজের, স্ত্রী এবং নির্ভরশীলদের যাবতীয় স্থাবর অস্থাবর সম্পদ, দায় দেনা, আয়ের উৎস জানাতে বলা হয়। এর পরিপ্রেক্ষিতে তিনি ও তাঁর স্ত্রীর সম্পদ বিবরণী জমা দেন। সেটা যাচাই বাছাই করে এটিএম সারোয়ারের বিরুদ্ধে ২৩ লাখ ২৭ হাজার এবং তাঁর স্ত্রীর নাজমা সারোয়ারের বিরুদ্ধে এক কোটি ২৫ লাখ ৭৩ হাজার ৭২২ টাকা জ্ঞাত আয় বহির্ভূত সম্পদ অর্জনের অভিযোগ আনা হয়। ২০০৮ সালের ১০ জানুয়ারি গুলশান থানায় মামলা করা হয়।

মামলার তদন্ত শেষে ওই বছরের এপ্রিলে অভিযোগপত্র দাখিল করা করে দুদক। ওই মামলায় বিচারিক আদালত তাঁদের সাজা দিলে তাঁর উচ্চ আদালতে আপিল করেন। হাইকোর্ট ওই আপিলের শুনানি শেষে মামলা দায়েরের ক্ষেত্রে পদ্ধতিগত ত্রুটির কথা উল্লেখ করে তাঁদের মামলা থেকে অব্যাহতি দেন এবং কমিশনকে আইনগতভাবে এগোনোর নির্দেশনা দেন।

আদালতের ওই নির্দেশনার পরিপ্রেক্ষিতে ২০১৬ সালের ডিসেম্বরে এটিএম সারওয়ার হোসেনর স্ত্রী নাজমা সারওয়ারের বিরুদ্ধে সম্পদ বিবরণীর নোটিশ জারি করে দুদক। এক মাসের মধ্যেই তিনি সম্পদ বিবরণী জমা দেন দুদকে। ওই বিবরণী যাচাই বাছাই শেষে নাজমা সারোয়ার চার কোটি ৩৫ লাখ ৫২ হাজার ৮০০ টাকার জ্ঞাত আয় বহির্ভূত সম্পদ অর্জন করেছেন। দুদক বলছে, নাজমা সারোয়ার একজন গৃহিণী। সম্পদ বিবরণীতে তিনি তাঁর অর্জিত সম্পদের উৎস উল্লেখ করেছেন উপহার, দান, পৈতৃক সূত্রে পাওয়া, ব্যবসার আয় ইত্যাদি। কিন্তু কোন উৎস থেকে কত টাকা আয় করেছেন তা উল্লেখ না করা এবং ওই সব সম্পদের সমর্থনে কোনো কাগজপত্রও দেখাতে পারেননি। দুদক মনে করছে, স্বামী এটিএম সারোয়ার হোসেনের ঘুষ দুর্নীতির মাধ্যমে অর্জিত অর্থ নিজের বলে ঘোষণা করেছেন নাজমা। তাই দুজনের বিরুদ্ধে মামলা করেছে সংস্থাটি।