আমানুরের জামিন বহাল, মুক্তিতে বাধা নেই

আমানুর রহমান খান
আমানুর রহমান খান

যুবলীগের দুই নেতা হত্যা মামলায় টাঙ্গাইল-৩ আসনের সাবেক সাংসদ আমানুর রহমান খান রানার জামিন বহাল রয়েছে। তাঁর জামিনের বিরুদ্ধে রাষ্ট্রপক্ষের করা আবেদনটি খারিজ করে দিয়েছেন আপিল বিভাগ।

আজ সোমবার প্রধান বিচারপতি সৈয়দ মাহমুদ হোসেনের নেতৃত্বাধীন চার সদস্যের আপিল বিভাগ এ আদেশ দেন। এর ফলে কারাগারে থাকা সাবেক এই সাংসদের কারামুক্তিতে আইনগত কোনো বাধা নেই বলে জানিয়েছেন তাঁর আইনজীবী রুশো মোস্তফা।

গত ১৯ জুন হাইকোর্টের দ্বৈত বেঞ্চ ওই মামলায় আমানুরের জামিন মঞ্জুর করে রায় দেন। এই রায় স্থগিত চেয়ে রাষ্ট্রপক্ষ চেম্বার বিচারপতির আদালতে আবেদন করেন। ২০ জুন আবেদন শুনানির জন্য ওঠে। শুনানি নিয়ে চেম্বার বিচারপতি আমানুরকে দেওয়া হাইকোর্টের জামিন ১ জুলাই পর্যন্ত স্থগিত করেন। একই সঙ্গে ১ জুলাই জামিনের বিরুদ্ধে রাষ্ট্রপক্ষের করা আবেদন আপিল বিভাগের নিয়মিত বেঞ্চে শুনানির জন্য পাঠিয়ে দেওয়া হয়। ধার্য তারিখে আপিল বিভাগ হাইকোর্টের দেওয়া জামিন ৮ জুলাই পর্যন্ত স্থগিত করেন। রাষ্ট্রপক্ষকে নিয়মিত লিভ টু আপিল (আপিলের অনুমতি চেয়ে আবেদন) করতে বলেন। রাষ্ট্রপক্ষ নিয়মিত লিভ টু আপিল করে যা আজ শুনানির জন্য ওঠে। শুনানি নিয়ে আপিল বিভাগ রাষ্ট্রপক্ষের লিভ টু আপিল খারিজ করে দেন।

আদালতে রাষ্ট্রপক্ষে শুনানি করেন, অ্যাটর্নি জেনারেল মাহবুবে আলম। সঙ্গে ছিলেন, ডেপুটি অ্যাটর্নি জেনারেল বিশ্বজিৎ দেবনাথ ও ডেপুটি অ্যাটর্নি জেনারেল মো. বশির উল্লাহ। অন্যদিকে, আমানুরের পক্ষে শুনানিতে ছিলেন, মুনসুরুল হক চৌধুরী, এম আতাউল গনি ও রুশো মোস্তফা।

রুশো মোস্তফা প্রথম আলোকে বলেন, সাবেক সাংসদ রানার বিরুদ্ধে দুটি মামলা রয়েছে। মুক্তিযোদ্ধা ফারুক হত্যা মামলায় তিনি আগেই জামিন পেয়েছেন। এই মামলায় আজ তাঁর জামিন বহাল থাকায় এখন আমানুরের কারামুক্তিতে আইনগত কোনো বাধা নেই।

টাঙ্গাইল সদরের বাঘিলের যুবলীগ নেতা শামীম ও মামুন ২০১২ সালের ১৬ জুলাই টাঙ্গাইল শহরে এসে নিখোঁজ হন। মামুনের বাবা এক বছর পর আদালতে হত্যা মামলা করেন। এই মামলার তিন আসামি আদালতে জবানবন্দি দিয়ে বলেন, সাংসদ আমানুরের নির্দেশনায় যুবলীগ নেতা শামীম ও মামুনকে হত্যা করে লাশ নদীতে ভাসিয়ে দেওয়া হয়। ওই দুজনের লাশ পাওয়া যায়নি। তদন্ত শেষে অভিযোগপত্র দিয়েছে পুলিশ। এ মামলায় গত বছরের ৩ মে আমানুরকে গ্রেপ্তার দেখানো হয়।

২০১৩ সালের ১৮ জানুয়ারি খুন হন টাঙ্গাইল জেলা আওয়ামী লীগের নেতা ও মুক্তিযোদ্ধা ফারুক আহমেদ। ওই হত্যা মামলায় ২০১৬ সালের সেপ্টেম্বরে গ্রেপ্তার হন সাংসদ আমানুর। এই মামলায় আমানুর ছাড়াও তাঁর তিন ভাই টাঙ্গাইল পৌরসভার সাবেক মেয়র সহিদুর রহমান খান, ব্যবসায়ী নেতা জাহিদুর রহমান খান, কেন্দ্রীয় ছাত্রলীগের সাবেক সহসভাপতি সানিয়াত খানসহ ১৪ জন আসামি রয়েছেন। তাঁর বাকি তিন ভাই পলাতক।