দেশে বেকার ২৬ লাখ ৭৭ হাজার: শ্রম প্রতিমন্ত্রী

শ্রম ও কর্মসংস্থান প্রতিমন্ত্রী মন্নুজান সুফিয়ান বলেছেন, পরিসংখ্যান ব্যুরোর সর্বশেষ জরিপ অনুযায়ী দেশে বেকারের সংখ্যা ২৬ লাখ ৭৭ হাজার। এর মধ্যে শিক্ষিত ও অর্ধশিক্ষিত ২৩ লাখ ৭৭ হাজার এবং অশিক্ষিত ৩ লাখ।

আজ সোমবার জাতীয় সংসদের প্রশ্নোত্তরে জাতীয় পার্টির সাংসদ রুস্তম আলী ফরাজীর প্রশ্নের জবাবে শ্রম ও কর্মসংস্থান প্রতিমন্ত্রী এ তথ্য জানান। স্পিকার শিরীন শারমিন চৌধুরীর সভাপতিত্বে বৈঠকের শুরুতে প্রশ্নোত্তর পর্ব অনুষ্ঠিত হয়।

প্রতিমন্ত্রীর দেওয়া তথ্য অনুযায়ী অশিক্ষিত ৩ লাখ বেকারের মধ্যে পুরুষ ১ লাখ ২৭ হাজার এবং নারী ১ লাখ ৭৩ হাজার। প্রাথমিক পাস বেকারের সংখ্যা ৪ লাখ ২৮ হাজার। এর মধ্যে পুরুষ ২ লাখ ২ হাজার, নারী ২ লাখ ২৬ হাজার। মাধ্যমিক পাস ৮ লাখ ৯৭ হাজার বেকারের মধ্যে পুরুষ ৪ লাখ ২২ হাজার ও নারী ৪ লাখ ৭৪ হাজার। উচ্চমাধ্যমিক স্তরের বেকার ৬ লাখ ৩৮ হাজার। এর মধ্যে পুরুষ ৩ লাখ ৫৩ হাজার ও নারী ১ লাখ ৭১ হাজার। বিশ্ববিদ্যালয় পর্যায়ে ৪ লাখ ৫ হাজার বেকারের মধ্যে পুরুষ ২ লাখ ৩৪ হাজার আর নারী ১ লাখ ৭১ হাজার।

সংরক্ষিত আসনের আদিবা আনজুমের প্রশ্নের জবাবে প্রবাসীকল্যাণ ও বৈদেশিক কর্মসংস্থান প্রতিমন্ত্রী ইমরান আহমদ জানান, বাংলাদেশ থেকে এ পর্যন্ত ৮ লাখ ৫৪ হাজার ৮০৯ জন নারী কর্মী বিদেশে গেছেন। এর মধ্যে সৌদি আরবে গেছেন ৩ লাখ ১৬ হাজার ২৪৪ জন।

ধান কেনায় সিন্ডিকেট নেই
স্বতন্ত্র সাংসদ রেজাউল করিম বাবলুর সম্পূরক প্রশ্নের জবাবে খাদ্যমন্ত্রী সাধন চন্দ্র মজুমদার বলেন, এবার অত্যন্ত সুষ্ঠুভাবে ধান কেনা হচ্ছে। উপজেলা নির্বাহী কর্মকর্তা, জেলা প্রশাসক, পুলিশ সুপাররা কৃষকের দ্বারে দ্বারে গিয়ে ধান কিনেছেন। কোনো সিন্ডিকেট এবার স্থান পায়নি। তিনি জোর গলায় বলতে পারেন, এবার কোনো দলীয় প্রভাবও কাজ করেনি। বরং দলীয় নেতা-কর্মীরা সহযোগিতা করেছেন। কোনো সিন্ডিকেট এবার নেই। তিনি সাংসদদের আহ্বান জানান, যাতে তাঁরা কৃষকদের ধান সরকারি গুদামে দেওয়ার জন্য উদ্বুদ্ধ করেন।

সরকারি দলের পনির উদ্দীনের সম্পূরক প্রশ্নের জবাবে খাদ্যমন্ত্রী বলেন, ধান না দেওয়ার কোনো কারণ নেই। এখন পর্যন্ত এক লাখ টন ধানও ক্রয় হয়নি। মাঠপর্যায়ে কর্মকর্তারা কাজ করছেন। অনেকে বলেন, সরকারি গুদামে ধান দিতে যাতায়াত খরচ বেশি পড়ে। এখন প্রায় সব রাস্তা পাকা। কৃষকেরা সরাসরি সরকারের কাছে ধান বিক্রি করলে বাজারের চেয়ে ২০০ টাকা বেশি পান। যদি কোনো এলাকায় জায়গা না থাকে, তা জানালে জায়গা করে দেওয়া হবে।

সরকারি দলের সাংসদ এবাদুল করিমের প্রশ্নের জবাবে খাদ্যমন্ত্রী সাধন চন্দ্র মজুমদার বলেন, চার লাখ টন লক্ষ্যমাত্রার বিপরীতে ১ জুলাই পর্যন্ত ৮৪ হাজার ৩০৯ টন ধান কেনা হয়েছে। আর ১০ লাখ টন সিদ্ধ ও দেড় লাখ টন আতপসহ মোট সাড়ে ১১ লাখ টন চাল কেনার লক্ষ্যমাত্রার বিপরীতে কেনা হয়েছে ১৪ লাখ ৬৬ হাজার ৪৮৬ টন। এ ক্ষেত্রে লক্ষ্যমাত্রার থেকে ৩ লাখ ১৬ হাজার ৪৮৬ মেট্রিক টন বেশি কেনা হয়েছে।

এক সম্পূরক প্রশ্নের জবাবে খাদ্যমন্ত্রী ধান কেনার জন্য সংসদ সদস্যদের সহযোগিতা চান। তিনি বলেন, লক্ষ্যমাত্রা অনুযায়ী চাল কেনা গেলেও ধান এখনো কেনা যায়নি। ধান কেনার ক্ষেত্রে জেলা প্রশাসক, উপজেলা নির্বাহী কর্মকর্তাসহ স্থানীয় প্রশাসনের কর্মকর্তারা সহযোগিতা করেছেন।

জাতীয় পার্টির মুজিবুল হক জানতে চান, চীন ও যুক্তরাষ্ট্রের বাণিজ্যযুদ্ধের কারণে বাংলাদেশ বাড়তি সুযোগ নিতে পারছে কি না? জবাবে বাণিজ্যমন্ত্রী টিপু মুনশি বলেন, বাংলাদেশ রপ্তানির লক্ষ্যমাত্রা পূরণ করেছে। রপ্তানির পরিমাণ বাড়ছে। তবে চীন-যুক্তরাষ্ট্রের বাণিজ্যযুদ্ধের উল্লেখযোগ্য কোনো প্রভাব এখনো দেখা যাচ্ছে না।