খাগড়াছড়িতে নিম্নাঞ্চল প্লাবিত, বিভিন্ন এলাকায় পাহাড়ধস

খাগড়াছড়ি শহরের মোল্লাপাড়ায় পাহাড় ধসে পড়েছে বাড়িটির ওপর। ছবি: জয়ন্তী দেওয়ান
খাগড়াছড়ি শহরের মোল্লাপাড়ায় পাহাড় ধসে পড়েছে বাড়িটির ওপর। ছবি: জয়ন্তী দেওয়ান

চতুর্থ দিনের মতো টানা বর্ষণে খাগড়াছড়িতে নিম্নাঞ্চল প্লাবিত হয়েছে। এ ছাড়া বিভিন্ন এলাকায় দেখা দিয়েছে পাহাড়ধস। খাগড়াছড়িতে প্রায় ১৭২ দশমিক ৬ মিলিমিটার বৃষ্টিপাত রেকর্ড করা হয়েছে। টানা বর্ষণে গত দুই দিনে বেশ কয়েকটি স্থানে পাহাড়ধসের ঘটনা ঘটেছে। আজ মঙ্গলবার সকালে শহরের মোহাম্মদপুর এলাকা আরসিসি সীমানাপ্রাচীর ধসে পড়ে। এ ছাড়া শালবাগান এলাকায় বেশ কয়েকটি স্থানে পাহাড়ধসের ঘটনা ঘটেছে। এতে কোনো হতাহতের ঘটনা ঘটেনি। পাহাড়ের পাদদেশে বসবাস করা পরিবারগুলোকে নিরাপদ স্থানে ও আশ্রয়কেন্দ্রে সরে যেতে সকাল থেকে মাইকিং করা হয়।

খাগড়াছড়ি জেলায় ৪৫টি আশ্রয়কেন্দ্র খোলা হয়েছে। এর মধ্যে সদরে ১০টি, মহালছড়িতে ৩টি, লক্ষ্মীছড়িতে ৬টি, মানিকছড়িতে ২টি, রামগড়ে ৯টি, গুইমারা ১টি, মাটিরাঙ্গা ৭টি, পানছড়ি ৬টি।

খাগড়াছড়ি শহরেই পানিবন্দী হয়ে পড়েছে ১০০টির বেশি পরিবার। এর মধ্যে এমএ হক মাদ্রাসায় ৪০, শিশু সরকারি প্রাথমিক বিদ্যালয়ে ৩০, মুসলিমপাড়া সরকারি প্রাথমিক বিদ্যালয়ে ১৫ পরিবারকে আশ্রয় দেওয়া হয়েছে।

দুপুরে শহরের বিভিন্ন এলাকায় গিয়ে দেখা যায়, ছেঙ্গী নদী ও খাগড়াছড়ি ছড়ার পানি বেড়ে গঞ্জপাড়া, মুসলিমপাড়া, কালাডেবা ও বটতলী এলাকায় কিছু ঘরবাড়ি ডুবে গেছে।

খাগড়াছড়ি জেলা প্রশাসক মো. রাশেদুল ইসলাম বলেন, ‘আমরা আশ্রয়কেন্দ্র ও খাবার—দুটিরই ব্যবস্থা করেছি। প্রতিটি সরকারি বিভাগ, স্বেচ্ছাসেবী সংগঠনের সঙ্গে সমন্বয় রেখে কাজ করছি। পাহাড়ের পাদদেশে থাকা ৩০টি পরিবারকে বেশি ঝুঁকিপূর্ণ হিসেবে চিহ্নিত করা হয়েছে। বিকেলে যদি এই পরিবারগুলো সরে না যায়, তাহলে জানমালের কথা বিবেচনা করে তাদেরকে জোর করে সরানো হবে।

টানা বৃষ্টিতে মহালছড়ি উপজেলার চোংড়াছড়ি এলাকায় সড়ক ডুবে যাওয়ায় খাগড়াছড়ির সঙ্গে রাঙ্গামাটির সড়ক যোগাযোগ বন্ধ রয়েছে। এ ছাড়া পানছড়ি-দুদুকছড়া সড়কের দুদুকছড়া ব্রিজ ভেঙে যাওয়ায় সরাসরি সড়ক যোগাযোগ বন্ধ রয়েছে।

পাহাড়ে টানা চার দিনের ভারী বর্ষণে খাগড়াছড়ি শহরের নিচেরবাজার এলাকা প্লাবিত হয়ে গেছ। এ ছাড়া উত্তর গঞ্জপাড়া, দক্ষিণ গঞ্জপাড়া, মেহেদীবাঘ, কালাডেবা, ফুটবিল, বটতলী, রাজ্যমুণিপাড়াও প্লাবিত হয়। আজ দুপুরে এলাকা থেকে তোলা। ছবি: নীরব চৌধুরী
পাহাড়ে টানা চার দিনের ভারী বর্ষণে খাগড়াছড়ি শহরের নিচেরবাজার এলাকা প্লাবিত হয়ে গেছ। এ ছাড়া উত্তর গঞ্জপাড়া, দক্ষিণ গঞ্জপাড়া, মেহেদীবাঘ, কালাডেবা, ফুটবিল, বটতলী, রাজ্যমুণিপাড়াও প্লাবিত হয়। আজ দুপুরে এলাকা থেকে তোলা। ছবি: নীরব চৌধুরী

বিকেলে অতিবৃষ্টিতে সম্ভাব্য দুর্যোগ মোকাবিলায় জরুরি সভা করেছে খাগড়াছড়ি জেলা প্রশাসন। এ ছাড়া পাহাড়ে ঝুঁকিপূর্ণ স্থানে বসবাসকারীদের নিরাপদ আশ্রয়ে যেতে মাইকিং অব্যাহত রেখেছে প্রশাসন। জেলা শহরের বিভিন্ন ঝুঁকিপূর্ণ এলাকা পরিদর্শন করেছেন জেলা প্রশাসকসহ সরকারি কর্মকর্তারা।

এ ছাড়া আজ মাটিরাঙ্গা বেলছড়ি এলাকায় একটি দোকানের ওপর পাহাড় ধসে পড়ে। দোকানের মালিক বাইরে থাকায় কেউ হতাহত না হওয়ার বিষয়টি নিশ্চিত করেন মাটিরাঙ্গা উপজেলার নির্বাহী কর্মকর্তা বিভীষণ কান্তি দাশ।